News:

Dolphin Computers Ltd., is a leading IT product and service provider company in Bangladesh.

Main Menu

শিশুদেরও হতে পারে হৃদরোগ

Started by bbasujon, January 12, 2012, 06:31:04 AM

Previous topic - Next topic

bbasujon

জানেন কি, আপনার ছোট শিশুটিও হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারে? শিশুদের হার্টের অসুখের এমন কিছু লক্ষণ আছে, যা অনেক ক্ষেত্রেই নজর এড়িয়ে যায় বা অন্য কোনো সমস্যার উপসর্গ বলে মনে হয়। শিশুদের হৃদরোগ মূলত কনজেনিটাল অর্থাৎ জ্নগত। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকোয়ার্ড হার্ট ডিজিজও দেখা যায়।

জন্মগত হৃদরোগের লক্ষণ
নবজাতক শিশু
– কাঁদতে কাঁদতে নীল হয়ে যায়।
– বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় দুধ টানতে সমস্যা হয়। একটু বড় হলে এর সঙ্গে যোগ হয় আরও কিছু।
– মায়ের দুধ খেতে খেতে ক্লান্ত হয়ে যায়।
– কোলে বসিয়ে রাখলে ভালো থাকে। বিছানায় শুলে কষ্ট হয়।
– সব সময় বিরক্ত ও খিটখিটে হয়ে থাকে। ঠিকমতো খেতে পারে না। তাই অনেকক্ষণ ধরে খায়।
– খাওয়ার সময় কপাল, মাথার তালু ঘেমে যায়।
– হাঁটা বা দৌড়ানোর সময় সহজেই হাঁপিয়ে যায়, উবু হয়ে বসে পড়ে। ঠোঁট, আঙ্গুলের ডগা নীল হয়ে যায়।
– এ ছাড়া কিছু সাধারণ উপসর্গ যেকোনো বয়সের শিশুর ক্ষেত্রেই দেখা যেতে পারে।
– হঠাৎ হঠাৎ শিশু অজ্ঞান হয়ে যায়।
– শিশুর বৃদ্ধি ঠিকমতো হয় না।
– রেসপিরেটরি ইনফেকশনের মাত্রা খুব বেশি। এমনকি অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া বা হাসপাতালে নেওয়ার দরকারও পড়ে।
ব্লু বেবিজ হৃদরোগ
– এক ধরনের হৃদরোগের ক্ষেত্রে শিশু খুব কাঁদে এবং হাঁটা অথবা দৌড়ানোর সময় নীল হয়ে যায়। এই স্পেসিফিক সিম্পটম যাদের দেখা যায়, তাদের ব্লু বেবিজ বলে। শিশু অজ্ঞান হয়ে যায়, এমনকি মারাও যেতে পারে। এই ডিজিজ তুলনায় বেয়ার হলেও এ সম্পর্কে জেনে রাখা জরুরি।

রিউম্যাটিক হার্ট ডিজিজ
জন্মগত হৃদরোগের বাইরে আরেক ধরনের হৃদরোগে অনেক শিশু ভোগে। সেটা হলো রিউম্যাটিক হার্ট ডিজিজ।
– সাধারণত পাঁচ বছর বয়সের পর এই অসুখ দেখা দেয়।
– মূল লক্ষণ অস্থিসন্ধিতে ব্যথা ও ফোলা ভাব।
– কাজেই এ-জাতীয় লক্ষণ দেখলেই তাতে জয়েন্টের সমস্যা বলে ধরে নেবেন না। মাথায় রাখুন, হার্টের সমস্যার জন্যও এমন হতে পারে।

কেন হয় জন্মগত হৃদরোগ
জন্মগত হৃদরোগ জেনেটিক মিউটেশনের ফলে হতে পারে। আবার কিছু ক্ষেত্রে কোনো একটি সন্তানের হৃদরোগ থাকলে পরবর্তী সন্তানটির এ ধরনের সমস্যার আশঙ্কা থাকে। তবে মায়ের কাছ থেকে শিশুর এই অসুস্থতা পাওয়ার ঝুঁকি তুলনায় কম। গর্ভকালীন যে যে বিশেষ অবস্থা শিশুর মধ্যে এ ধরনের অসুস্থতার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়, তা হলো-
– মায়ের জার্মান মিজিলস রোগ হলে।
– মা বিশেষ কিছু মাদক গ্রহণ করলে এবং ধূমপানের অভ্যাস থাকলে।
– গর্ভাবস্থায় ও প্রসবের সময় মা হাই অলটিটিউডে থাকলে।

অ্যাকোয়ার্ড হার্ট ডিজিজ
এগুলো মূলত ডিজেনারেটিভ হার্ট ডিজিজ।
– যাদের পরিবারে হার্টের অসুখের হিস্ট্রি আছে, তাদের বংশগতভাবেই জ্নের পর হার্টের অসুখ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
– ইনঅ্যাকটিভ লাইফস্টাইল এবং অতিরিক্ত ফাস্টফুড খাওয়ার অভ্যাসের কারণে শিশুদের মধ্যে এখন শারীরিক স্থূলতা বা ওবেসিটি ও উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। যার ফল হচ্ছে হার্টের নানা ধরনের সমস্যা।

চিকিৎসা
হৃদরোগের চিকিৎসা মূলত দুই ধরনের। শিশুদের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময়ে নন-সার্জিক্যাল মেথডে চিকিৎসা করার চেষ্টা করা হয়। ক্যাথিটার ইন্টাভেনশনের সাহায্যে হৃদ্‌যন্ত্রের ছিদ্র, ভাল্বের সমস্যার চিকিৎসা করা হয়। কিছু জটিল সমস্যায় অবশ্য সার্জারি করতেই হয়।

হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে
– শিশুদের মধ্যে এ-জাতীয় কোনো লক্ষণ দেখলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে।
– 'ব্লু বেবি'রা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের হাঁটু যতটা সম্ভব বুকের কাছে নিতে হবে। এতে ওদের নীল হয়ে যাওয়ার ব্যাপার আটকানো যাবে।

শিশুর দৈনন্দিন জীবন
শিশুদের অ্যাকোয়ার্ড হৃদরোগের আশঙ্কা কমাতে এবং শরীর সুস্থ রাখতে জীবনযাপন পদ্ধতির পরিবর্তনের কোনো বিকল্প নেই। বড়দের হার্টের অসুখ নিয়ে এখন সবাই যতই সচেতন হয়ে উঠুন না কেন, ছোট থেকে সতর্ক হলেই বেশি বয়সের অনেক সমস্যা এড়ানো যায়।
– শিশুরা যাতে কোনোভাবেই অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপনে অভ্যস্ত না হয়ে পড়ে সেদিকে নজর দিন। পড়াশোনা, কম্পিউটারের পাশাপাশি ওদের খেলাধুলা আর ব্যায়ামের ওপর জোর দিন। এ ক্ষেত্রে খুব ভালো ব্যায়াম হলো সাঁতার।
– পরিবারে কারও উচ্চ রক্তচাপ থাকলে শিশুদের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া দরকার। তাদের খাবারে যেন অতিরিক্ত বা আলগা লবণ না থাকে। চিপস, কিছু বিস্কুট, নুডলসের মতো খাবারে বেশি আলগা লবণ থাকে। কাজেই তা বেশি খাওয়া একদম ঠিক নয়।
– যেকোনো ধরনের ফাস্টফুড না খাওয়াই ভালো।
– শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কেক, পেস্ট্রি, চকোলেটের মতো উচ্চ ক্যালরির ও চর্বিযুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো।
– শিশুদের খাবারে ফল, শাকসবজির পরিমাণ বাড়ান।

সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০০৮
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection