লবণের রাসায়নিক নাম সোডিয়াম ক্লোরাইড। এতে আছে ৪০ ভাগ সোডিয়াম আর ৬০ ভাগ ক্লোরাইড।
লবণ কেন প্রয়োজন?
শরীরের জন্য দরকার লবণে থাকা সোডিয়াম। এটি শরীরের পানি আর খনিজ লবণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। রক্তের পিএইচ ঠিক রাখে। সোডিয়াম দরকার শরীরের স্নায়ুর সিগন্যাল পরিবহন আর মাংসপেশির সংকোচন প্রসারণের জন্যও।
কতটুকু লবণ দরকার?
আমাদের দৈনিক সোডিয়াম দরকার ১০০০-৩০০০ মিলিগ্রাম। অনেকের মতে, ২৪০০ মিলিগ্রামের বেশি নয়। আর সোডিয়ামের এই চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন খাবার লবণ প্রয়োজন বড়দের ক্ষেত্রে মাত্র ছয় গ্রাম বা প্রায় এক চা-চামচ। শিশুদের কিডনি বেশি লবণ সহ্য করতে পারে না। তাদের প্রয়োজন আরও কম। দৈনিক ছয় গ্রামের চেয়ে কম লবণ খেলে উচ্চরক্তচাপ হওয়ার আশঙ্কা কমে। গবেষণায় দেখা গেছে, কম লবণ খেলে স্ট্রোকের আশঙ্কা কমে প্রায় ১৩ শতাংশ, আর ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ হওয়ার আশঙ্কা কমে প্রায় ১০ শতাংশ। অর্থাৎ কম লবণ খাওয়াই শরীরের জন্য ভালো।
লবণ বেশি খেলে কী সমস্যা?
অতিরিক্ত লবণ খেলে রক্তচাপ বেড়ে যাবে। লবণ শরীরে বাড়তি পানি ধরে রাখে। এতে রক্তের ভলিউম বা পরিমাণ বেড়ে যায়। আর এ জন্য বেড়ে যায় রক্তচাপ। শরীরের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধমনির সংকোচনও বাড়িয়ে দেয় লবণ। এ জন্যও রক্তচাপ বাড়ে। রক্তচাপ বাড়ার কারণে বেড়ে যায় বিভিন্ন হূদরোগ। যেমন—ইস্কেমিক হূদরোগ, হার্ট ফেইলিওর ও স্ট্রোকের ঝুঁকি। শরীরে বাড়তি পানি জমে শরীর একটু মোটাও হয়ে যেতে পারে।
লবণ কম খেতে কী করণীয়?
তরকারিতে লবণ হওয়া চাই পরিমিত। বাড়তি কাঁচা লবণ বা পাতে লবণ খাওয়া পরিহার করুন। লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন লবণাক্ত মাছ, চিপস, ক্রেকার্স, লবণাক্ত বিস্কুট, কেচআপ, লবণ-বাদাম, পনির, বেকিং পাউডার ইত্যাদি খাওয়াও কমাতে হবে যথেষ্ট পরিমাণে। ফাস্টফুডেও যোগ করা হয় বাড়তি লবণ। ফাস্টফুডও তাই পরিহার করুন। বরই, তেঁতুল, আমলকী, আমড়া, জলপাই এ জাতীয় টক ফল লবণ দিয়ে খাওয়ার অভ্যাস পরিত্যাগ করুন। দেখবেন প্রয়োজনের অতিরিক্ত লবণ আর খাওয়া হচ্ছে না।
মো. শহীদুল্লাহ
বিভাগীয় প্রধান, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ, কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ২৬, ২০১০