News:

SMF - Just Installed!

Main Menu

শিশুর মন

Started by bbasujon, January 11, 2012, 06:13:13 PM

Previous topic - Next topic

bbasujon

রেগে যায় শিশু। সেও ঈর্ষাকাতর হয়ে পড়ে। ভীষণ ভয় পায়। হয়ে ওঠে চঞ্চল-অস্থির। কিন্তু তাদের এসব ভাবাবেগ কেন তৈরি হয়, তার কার্যকারণ জানতে বা নিজেকে সামলানোর মতো তত্ত্বীয় জ্ঞান তার নিজের মধ্যে গড়ে উঠতে অনেক সময় লাগে।
সুতরাং মা-বাবাই এক বছরের তুলতুলে শিশুর এক থেকে তিন বছরের চটপটে সোনামণির ও প্রি-স্কুল বয়সের সবকিছুতে 'কেন-উপনিষদ' জানতে চাওয়া, নয়নমণির রাগ-দ্বেষ, মান-অপমান, ভার সামলানোর দায়িত্ব পালন করবেন। ছয় বছরের সন্তানকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে তার আচার-আচরণ সংশোধন করানো যায়। মা-বাবা শিশুকে প্রশংসার সাহায্যে, উৎসাহ দানের মাধ্যমে দায়িত্ববান, আত্মবিশ্বাসী মানুষের মতো জীবনযাপনের শিক্ষা-দীক্ষা দান করতে পারেন।

শিশুর কাছে যথাযথ প্রত্যাশা
শিশুর বুদ্ধি বিকাশের ধারার সঙ্গে মিল রেখে তার কাছে কিছু চাইতে হয়। অনেকে এক থেকে তিন বছরের শিশুর কোনো কোনো কর্মকাণ্ড দেখে বলে ওঠেন, 'দেখো দেখো, কী রকম স্বার্থপর।' আসলে অল্পবয়সী শিশুতে স্বার্থপরতা খুব সচরাচর বিষয়। বড় হলে সে উদার হতে থাকে। মা-বাবা পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে শিশুকে দেখিয়ে ঔদার্যের কিছু উদাহরণ তুলে ধরতে পারেন।

শিশুর অনুভূতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন
কীভাবে নিজের বিশ্বাস ও অন্যদের শ্রদ্ধা করতে হয়, তা নিজের আচরণের দ্বারা মা-বাবা শিশুকে শেখাতে পারেন। এভাবে শিশু দয়াপরবশতা, উদারতা ও আত্মবিশ্বাসের শিক্ষা পেয়ে যায়। কিন্তু তাকে নিয়ে অযথা হাসাহাসি করা হলে, তাকে উপেক্ষা করা হলে বা শাস্তি দেওয়া হলে, সে মুষড়ে পড়ে। শাস্তি পেতে পেতে কোনো কোনো শিশু ভোঁতা হয়ে যায়। অন্যরা রেগে গিয়ে ছোটদের সঙ্গে উল্টো মারামারি করে।

শিশুর নিরাপদ আবাসস্থল
শিশুর জন্য ঘরের পরিবেশ যেন সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকে, মা-বাবা-অভিভাবক এরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। বিপজ্জনক সব বস্তু যেন শিশুর নাগালের বাইরে থাকে।

সুরক্ষা ব্যবস্থা
শিশুকে দেখাশোনার ভার যাদের হাতে, তাদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কোনো কোনো পরিবারে বড় শিশুকেও এরূপ দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। তবে সতর্কতার খাতিরে অতিরিক্ত কড়াকড়ি আরোপ অনুচিত। এতে শিশু তার গড়ে ওঠা নৈপুণ্যের ব্যবহারে অসুবিধায় পড়ে।

আপন শিশুর ওপর বিশ্বাস স্থাপন
যেসব শিশু নিরাপদ ও সুরক্ষার বাতাবরণে গড়ে ওঠে, তারা আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠার পথ পায়। তবে শিশু তখনই তা নৈপুণ্যের সঙ্গে করতে পারে, যদি মা-বাবা-অভিভাবক তাকে পদে পদে বাধা না দেয়। অভিভাবককে অবশ্যই সন্তানের সামর্থ্যের ওপর ভরসা রাখতে হবে।

শিশুকে ভালো কিছু বেছে নেওয়ার সুযোগ দান
শিশু যদি সক্ষম থাকে, তবে সে ভালো কিছু করার প্রচেষ্টাই নেয়। এভাবে সেরা যা, ভালো যা, তা নির্বাচন করে জীবনপথে এগিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস সে লাভ করে।

শিশুর প্রয়োজনমাফিক সহজ নিয়মকানুন
শিশুর আচার-আচরণের কোন কোনটা ঠিক না, তা সহজভাবে তার সামনে উপস্থাপন করতে হয়। বয়সভেদে শিশুর মনোবিকাশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তার কাছ থেকে কীরূপ আচার, ব্যবহার আশা করেন, তা ঠিক করে দিতে হবে। ঘণ্টায় ঘণ্টায়, দিনে-রাতে নিয়মকানুন পাল্টানো হলে শিশু দিশেহারা হয়ে যায়। সুতরাং শিশুর মন পাঠ করে তাকে সহজ-সরল নিয়মে গড়ে তোলার ব্রত গ্রহণ করা উচিত।

প্রণব কুমার চৌধুরী
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, সহকারী অধ্যাপক
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, নভেম্বর ০৩, ২০১০
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection