News:

Dolphin Computers Ltd., is a leading IT product and service provider company in Bangladesh.

Main Menu

শিশু যেন পানি খায়

Started by bbasujon, January 11, 2012, 06:23:18 PM

Previous topic - Next topic

bbasujon

আজকাল আমার কাছে যতজন মা আসেন, তাঁদের অধিকাংশই শিশুর খাবারে অনীহার কথা বলে বলে হয়রান। গরম বাড়ছে, বাড়ছে তাঁদের শিশুদের ডায়রিয়া, বদহজম ও বমির সমস্যা। যতই বলি বেশি করে পানি খাওয়ান, তাঁদের একটাই কথা, খাবারই খেতে চায় না, বাচ্চা খাবে পানি?' বলছিলেন বারডেমের শিশু বিভাগের প্রধান তাহমিনা বেগম। আসলেই বাচ্চারা পানি খেতে চায় না বেশি। কিন্তু এই গরমে পানি না হলে কি চলে? তাই বাচ্চার খাবারের মেন্যু নির্বাচনে হতে হবে কৌশলী। যাতে শিশুর শরীরে পানিস্বল্পতা দেখা না দেয় এই গরমে। এ নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন তাহমিনা বেগম ও পুষ্টিবিদ সিদ্দিকা কবীর।
পানি খাবে, পানীয়ও খাবে...
সিদ্দিকা কবীর বলেন, পানি ছাড়া এই গরমে শিশুর জন্য উৎকৃষ্ট আর কিছুই হতে পারে না। কিন্তু শিশুদের এ কথা বোঝাবে কে? তাই তাদের পছন্দমতো পানীয় দিয়ে মেটাতে হবে পানির পিপাসা। শিশুকে পান করান লেবুর শরবত, আনারসের শরবত, বেল, তরমুজ কিংবা ডাবের শরবত। ভাজাপোড়া ও ভুনা খাবারের পরিবর্তে দিন ঝোল-জাতীয় খাবার। প্যাকেটের জুস খেতে চাইলে তাও দিন, তবে প্রতিদিন নয়, মাঝেমধ্যে।
এভাবে পানির চাহিদা অনেকটা পূরণ করা যায়।

স্কুলের ব্যাগে
বাচ্চার স্কুলব্যাগের সঙ্গে মনে করে গুছিয়ে দিন পানির বোতলটিও। আর টিফিন হিসেবে দিন স্যান্ডউইচ, আলুর চপ কিংবা নুডলস ইত্যাদি। বিস্কুট ও কেক ইত্যাদি এই গরমে না দেওয়াই ভালো।

গরম মানেই স্যালাইন নয়...
অনেকেই মনে করেন, গরম বাড়লেই ঘাম বাড়বে, আর এ জন্য স্যালাইন খেতে হবে বেশি। একদম না, বিশেষত শিশুদের ক্ষেত্রে। খেলাধুলা কিংবা দৌড়ঝাঁপে অতিরিক্ত ক্লান্ত হয়ে গেলে মাঝেমধ্যে স্যালাইন দিতেই পারেন, তবে তাও হবে শিশুর রুচি বুঝে। লবণ স্যালাইনের বদলে বেছে নিতে পারেন আম-কমলার স্বাদের কোনো স্যালাইন।

খাবে ফল, বাড়বে বল...
গরম ও বাতাসে ধুলো উড়লেও বাজারে ওড়ে মৌসুমি ফলের লোভনীয় সুবাস। গরমকাল মানেই রসাল ফলের মেলা। তাই শিশুকে প্রতিদিন খেতে দিন অন্তত একটি দেশি ফল। আম, জাম, কাঁঠাল, তরমুজ, কামরাঙা, পেয়ারা, বেল, ডাব, জাম্বুরা, আনারস কিংবা বাঙ্গি; কলা, শসা, টমেটো, গাজর, খিরা এখনো পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। অনায়াসেই যোগ করে নিন শিশুর দৈনন্দিন খাবারের তালিকায়। অনেকেই পথের পাশে বিক্রি করা শসা ও গাজর কিনে খান। কিন্তু আপনার শিশু এসব খেলে পেটের সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে। অনেকেই পথেঘাটে আমড়া কিনে খান। তাহলে জেনে রাখুন, আমড়ায় পানি নেই বললেই চলে। বরং আছে রোগ জীবাণুর ভয়। তাই খোলা খাবার শিশুর হাতে তুলে দেওয়ার আগে অন্তত ১০ বার ভাবুন।

দুধ খাবে, শক্তি পাবে...
এই গরমে সুস্থ থাকতে দুধের কোনো বিকল্প নেই। আজকাল বাচ্চারা দুধ তো খেতেই চায় না, এমনটাই বলেন অনেক মা। তাই বলে কি শিশু দুধ খাবে না? অবশ্যই খাবে। প্রয়োজনে দুধের তৈরি অন্য কোনো খাবার খাবে। সকালে বা বিকেলে দুধের সুজি, হালুয়া, সেমাই—দুধের খাবারের নাম বলে শেষ করা যাবে না। তাই নিশ্চিত করুন, দিনে অন্তত একবার দুধ বা দুধের তৈরি কোনো খাবার যেন আপনার শিশুটি পায়।

বাড়ির খাবার, হাঁড়ির খাবার...
তাহমিনা বেগম বলেন, বাচ্চারা আজকাল ফাস্টফুডের দিকে ঝুঁকেছে, ভুলেছে বাড়ির হাঁড়ির খবর। অথচ শিশুদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ হলো বাড়ির তৈরি হাঁড়ির সহজপাচ্য খাবার। সহজপাচ্য মানেই কিন্তু খিচুড়ি নয়। যেকোনো স্বাভাবিক খাবার, যাতে ঝাল বেশি নেই, ঝোল আছে এবং সুসিদ্ধ হওয়া মানেই হলো সহজপাচ্য খাবার। দই-চিঁড়া-চিনি ও নারেকেল-মুড়ি, দুধ-মুড়ি এবং অন্যান্য উঁচু মানের সহজপাচ্য খাবার; যা শিশুর শরীরে পানি নিশ্চিত করে, পুষ্টিও জোগায়।

শেষ কথা...
অতিরিক্ত পানি খেলেও শিশুর বিছানা ভেজানোর সমস্যা হতে পারে। তাই শিশু যতটুকু পারবে ততটুকু পরিমাণ পানি পান করান। খাবার খাওয়ানোর সময় মাঝেমধ্যেই গলা ভিজিয়ে নিতে দিন। আর শিশুর পানি পান করার অভ্যাসটি তৈরি করতে পারেন আপনি নিজেই। কারণ, অভ্যাস করালেই অভ্যাস হয়!

খাদিজা ফাল্গুনী
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, এপ্রিল ২৬, ২০১১
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection