এই শীতে শিশুর রোগবালাই

Started by bbasujon, January 13, 2012, 04:38:22 PM

Previous topic - Next topic

bbasujon

আজকাল পত্রিকার পাতা খুললেই দেখতে পাই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেক শিশু হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে বা মারা যাচ্ছে। শীতের এই সময়ে শিশুরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়, তার মধ্যে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া অন্যতম।
সব শিশুর কিন্তু নিউমোনিয়া হয় না, যদি শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ানো না হয়, শিশুরা অপুষ্টিতে ভোগে, শিশুদের সামনে ধূমপান করা হয়, শিশুদের ভিটামিন এ-র অভাব থাকে, শিশুদের সঙ্গে পরিবারের অনেক লোক এক ঘরে থাকে, শিশুকে টিকা দেওয়া না হলেই শুধু তারা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। ঘনবসতি ও বায়ুদূষণও নিউমোনিয়ার কারণ।
শিশুর সর্দি, কাশি, সামান্য জ্বর, নাক বন্ধ থাকলে বা বুকে শব্দ হলেই মনে করার কোনো কারণ নেই যে শিশুর নিউমোনিয়া হয়েছে। এই লক্ষণগুলোর সঙ্গে যদি শিশু দ্রুত শ্বাস নেয় বা বুকের পাঁজরের নিচের অংশ ভেতর দিকে দেবে যায়, তাহলে বুঝতে হবে শিশুর নিউমোনিয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে শিশুকে দ্রুত হাসপাতালে বা চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে।
সাধারণ সর্দি, কাশি ও জ্বরের চিকিৎসা বাড়িতেই করা সম্ভব।

কী করবেন
 জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল সিরাপ দিন, ভেজা নরম কাপড়ে বারবার শরীর মুছে দিন।
 সর্দি পড়লে নরম কাপড় দিয়ে নাক পরিষ্কার করুন।
 সামান্য কাশিতে ওষুধের প্রয়োজন হয় না। শিশুর বয়স ছয় মাসের বেশি হলে কুসুম গরম পানিতে লেবু ও মধু দিয়ে শিশুকে খেতে দিন। আদা ও মধু বা তুলসীপাতার রস ও মধু মিলিয়ে খাওয়ালেও কাশি কমে যায়। কাশি বেশি হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
 শিশুকে প্রতিদিন কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করান।
 শিশু স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে এমন কাপড় পরান।
 দরজা-জানালা খোলা রাখুন, যাতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারে।
 বারবার বুকের দুধ দিন।
 ফলমূলসহ পরিবারের সব খাবার শিশুকে খেতে দিন। অনেকের ধারণা, কলা, কমলা, লেবু ইত্যাদি খেলে কাশি বেড়ে যাবে। এসব ধারণা ভুল।
 আপনার শিশু যদি নবজাতক হয়, তাহলে কিছুটা বাড়তি সাবধানতা আপনাকে নিতে হবে। বাচ্চাকে ভালোভাবে ঢেকে রাখবেন। মাথায় টুপি, মোজা পরাবেন। সিনথেটিক কাপড় না পরিয়ে মোটা সুতি বা উলের জামা কাপড় পরালে শিশু আরাম বোধ করবে। বেশি শীত থাকলে গোসল না করিয়ে শরীর ও মাথা মুছে দিতে পারেন। অনেকে তেল মেখে শিশুকে রোদে ফেলে রাখেন, এতে করে বরং শিশুর বেশি ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। আপনার নবজাতক শিশুকে শুধু বুকের দুধ দিতে হবে—এ কথা ভুলে গেলে চলবে না।

কখন শিশুকে হাসপাতালে নিতে হবে
 শিশু দ্রুত শ্বাস নিলে
 পাঁজরের নিচের অংশ ভেতর দিকে দেবে গেলে
 শ্বাসকষ্ট হলে
 খেতে না পারলে
 জ্বরের সঙ্গে খিঁচুনি হলে
 শিশু যা খাচ্ছে সবকিছু বমি করলে
 শিশু নিস্তেজ হয়ে গেলে।

অধ্যাপক তাহমীনা বেগম
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, শিশু বিভাগ, বারডেম।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ০৪, ২০১১
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection