Author Topic: ওয়াকফ সংক্রান্ত আইন  (Read 4163 times)

bbasujon

  • Administrator
  • VIP Member
  • *****
  • Posts: 1827
  • I want to show my performance at any where
    • View Profile
    • Higher Education
ওয়াকফ সংক্রান্ত আইন
« on: January 24, 2012, 07:30:50 AM »
প্রথম অধ্যায়

বাংলাদেশ ওয়াকফ আইন, ১৯৬২

(১৯৬২ সনের ১নং অধ্যাদেশ)
 

[বাংলাদেশ] ওয়াকফ সম্পত্তি সমূহের প্রশাসন এবং পরিচালনা সম্পর্কিত আইন একত্রিকরণ ও সংশোধনকল্পে অধ্যাদেশ ।

যেহেতু বাংলাদেশ ওয়াকফ সম্পত্তি সম্পর্কিত আইন একত্রিকরণ ও সংশোধন সমীচিন ও প্রয়োজনীয়;

সেইহেতু ১৯৫৮ সনের ৭ই অক্টোবরের রাষ্ট্র্রপতির ঘোঘণা বলে এতদ্বারা নিম্নরুপ অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা হইল, যথাঃ-

সংশোধন ও একত্রিকরণ
 

বৃট্রিশ ভারতের তত্‍কালীন বঙ্গদেশের ওয়াকফ এস্টেটগুলি মুসলিম আইন মোতাবেক পরিচালিত হইত । ১৯৩৪ সালে বেঙ্গল ওয়াকফ এ্যাক্ট নামে একটি আইনের মধো স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি হয় । ঐ প্রতিষ্ঠানই তত্‍কালীন বাংলায় ওয়াকফ এস্টেটগুলি দেখাশুনা করিত এবং ঐ প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্মকর্তা ছিলেন ওয়াকফ কমিশনার । ইহার পূর্বেও ১৯২৩ সালে একটি আইন ছিল ।

প্রথম অধ্যায়


বাংলাদেশ ওয়াকফ আইন, ১৯৬২
 

ধারা-১ (সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, ব্যাপ্তি এবং প্রারম্ভ )

    (১) এই অধ্যাদেশ ১৯৬২ সনের ওয়াকফ অধ্যাদেশ নামে অভিহিত হইবে ।

    (২) ইহা বাংলাদেশের সর্বত্র প্রযোজ্য হইবে ।

    (৩) ইহা অবিলম্বেই কার্যকরী হইবে ।
 

ধারা-২ (সংজ্ঞাসমূহ)

বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কিছু না হইলে এই অধ্যাদেশ-

    (১) প্রশাসক অর্থ ৭ ধারার অধীনে নিযুক্ত ওয়াকফ প্রশাসক;

    (২) "স্বত্বভোগী" অর্থ ওয়াকফ হইতে কোনো আর্থিক বা অন্যান্য বাস্তব সুবিধা পাইবার অধিকরী ব্যক্তি এবং স্বত্বেভাগী বলিতে অনুরূপ কোনো সুবিধা পাইবার অধিকারী কোনো প্রতিষ্ঠান যেমন-মসজিদ, মাজার, দরগাহ, খানকাহ স্কুল, মাদ্রাসা ঈদগাহ বা কবরস্থানকেও বুঝাইবে।

    (৩) "সুবিধাদি" বলিতে কোনো মুতাওয়াল্লী শুধুমাত্র মুতাওয়াল্লী হওয়ার কারণেই যেই কোনো সুবিধাদি দাবী করার অধিকারী হইবেন না;

    (৪) "কমিটি" বলিতে ১৯ ধারা মতে গঠিত কমিটিকে বুঝাইবে;

    (৪ক) "ডেপুটি কমিশনার" বলিতে অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনারও উহার অন্তর্ভূক্ত হইবেন;

    [১৯৬৭ সনের ২নং আদেশ দ্বারা সংযুক্ত]

    (৫) "তালিকাভূক্তির" অর্থ ৪৭ ধারামতে কোনো ওয়াকফ তালিকাভূক্ত করণ;

    (৬) "মুতাওয়াল্লী" বলিতে যেই ব্যক্তি মৌখিকভাবে অথবা যেই দলিল কিংবা সাধনপত্র দ্বারা ওয়াকফ সৃষ্টি করা হইয়াছে উহার দ্বারা নিযুক্ত হইয়াছেন অথবা কোনো ক্ষমতাবান কর্তৃপক্ষ মুতাওয়াল্লী হিসাবে নিযুক্ত হইয়াছেন তাহাকেও বুঝাইবে: ইহাতে নায়েব মুতাওয়াল্লী এবং মুতাওয়াল্লী কর্তৃক নিযুক্ত অথবা মুতাওয়াল্লী কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ মুতাওয়াল্লীর অভিভাবক এবং যেই ব্যক্তি বা কমিটি বর্তমানে কোনো ওয়াকফ সম্পর্কিত ব্যবস্থাপনা অথবা প্রশাসন করিতেছেন তাহাদিগকেও বুঝাইবে।

    (৭) 'খরচা বাদ লভ্য আয়' বলিতে একটি ওয়াকফের আয় যাহা নির্ধারিত বিধানসমুহ অনুসারে সময়ে সময়ে স্থির করা হয়।

   (৮) "ওয়াকফে স্বার্থযুক্ত ব্যক্তি" বলিতে কোনো স্বত্বভোগী এবং যেই কোনো ব্যক্তির উপাসনা করার অধিকার আছে, অথবা যাহাদের মসজিদে, ঈদগাহে, ইমাম বাড়ায়, দরগাহে মাকবারা অথবা ওয়াকফের সহিত জড়িত ধর্মীয় কোনো প্রতিষ্ঠানে কোনো ধর্ম সম্বন্ধীয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন করিতে, অথবা ওয়াকফের অধীন কোনো ধর্মীয় অথবা দাতব্য প্রতিষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার অধিকার আছে তাহারাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।

   (৯) "ওয়াকফে আগন্তুক" বলিতে দফা (৮) অনুসারে বর্ণিত ওয়াকফে স্বার্থযুক্ত ব্যক্তি ব্যতিত অপর কোনো ব্যক্তিকে বুঝাইবে।

    (১০) ওয়াকফ বলিতে ইসলাম ধর্মীয় কোনো ব্যক্তির দ্বারা স্থাবর কিংবা অস্থাবর সম্পত্তি মুসলিম আইনে স্বীকৃত যেই কোনো ধার্মিক, ধর্মসম্বন্ধীয় অথবা দাতব্য উদ্দেশ্যে চিরতরে উত্‍সর্গ করাকে বুঝাইবে এবং ইহাতে অমুসলমান ব্যক্তি কর্তৃক পূর্ব বর্ণিত উদ্দেশ্যে অপর যেই কোন দানকেও বুঝাইবে।

    (১১) ওয়াকফ দলিল মানে যেই দলিল বা সাধনপত্র দ্বারা কোনো ওয়াকফ সৃষ্টি করা হইয়াছে এবং ইহাতে আরো অন্তর্ভূক্ত হইবে পরবর্তীকালে যেই কোনো বৈধ দলিল অথবা সাধনপত্র যাহা দ্বারা মূল উত্‍সর্গের কোনো শর্ত পরিবর্তন করা হইয়াছে।

    (১২) ওয়াকফ সম্পত্তিতে যে কোনো ধরনের সম্পত্তি যাহা ওয়াকফ সম্পত্তির বিক্রয়লব্ধ টাকা অথবা ঐ সম্পত্তির পরিবর্তে অথবা উহা হইতে অর্জিত আয় করা হইয়াছে এবং যাবতীয় দান উত্‍সর্গীকৃত হইয়াছে অথবা ওয়াকফ সম্পত্তিতে যাহা চাঁদা দেওয়া হইয়াছে তাহাও সামিল থাকিবে; এবং

    (১৩) ওয়াকিফ বলিতে যেই ব্যক্তি ওয়াকফ সৃষ্টি করিয়াছেন তাহাকে বুঝাইবে।
 

ধারা-৩ (প্রয়োগ)

এই অধ্যাদেশ শুরু হইবার পূর্বে বা পরে সৃষ্ট হউক না কেন বাংলাদেশে অবস্থিত সকল ওয়াকফে এবং সম্পত্তির যে কোনো অংশে এই অধ্যাদেশ প্রযোজ্য হইবে ।
 

ধারা-৪ (কতিপয় ওয়াকফ সম্পত্তির রেহাই)

সরকার সরকারী গেজেটে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১৮৬৩ সনের (২০নং আইন)  ধর্মদান আইনের ২১ ধারামতে যেই সকল ওয়াকফ সম্পত্তি রাজস্ব বোর্ডের তত্ত্বাবধানে রাখিয়াছেন ঐ সমস্ত সম্পত্তি যেই পর্যন্ত ঐরুপ তত্ত্বাবধানে থাকিবে সেই পর্যন্ত এই অধ্যাদেশের সমস্ত অথবা যেই কোনো বিধান অপ্রযোজ্য করিতে পারিবেন ।
 

ধারা-৫ (ওয়াকফসমূহের এই অধ্যাদেশের প্রয়োগ হইতে রেহাই দেওয়ার ক্ষমতা)

সরকারের পূর্ব অনুমোদন এবং এই ব্যাপারে সরকার কর্তৃক প্রণীত বিধানসমূহ সাপেক্ষে ওয়াকফ প্রশাসক এই অধ্যাদেশের যাবতীয়,অথবা যে কোনো বিধান হইতে যেই কোনো ওয়াকফকে রেহাই দিতে পারিবেন ।

ধারা-৬ (ওয়াকফ সম্পত্তির জরিপ)
 

উপধারা-(১) বিধি দ্বারা যে পদ্ধতি নির্দিষ্ট করা হইবে সেই পদ্ধতিতে প্রশাসক এই অধ্যাদেশ প্রবর্তনের তারিখে বিদ্যমান সকল ওয়াকফ সম্পত্তির জরিপ করাইবেন এবং তিনি এই উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক এইরুপ লোক নিয়োগ করিতে পারিবেন যাহারা জরিপ শেষে, বিধি দ্বারা যেরুপ বিবরণ নির্দিষ্ট করা হইবে সেইরুপ বিবরণ সম্বলিত একটি প্রতিবেদন প্রশাসকের নিকট পেশ করিবেন ।
 

উপধারা-(২) (১) উপ-ধারার অধীন প্রতিবেদন প্রাপ্ত হইয়া প্রশাসক ওয়াকফ তালিকাভূক্তির জন্য এই অধ্যাদেশের চতুর্থ পরিচ্ছেদের অধীন তাহার নিকট যে ব্যবস্থা প্রয়োজনীয় বলিয়া মনে হইবে তাহা গ্রহণ করিবেন ।
 

ধারা-৭ (প্রশাসক নিয়োগ)

উপধারা-(১) সরকার বাংলাদেশের জন্য একজন প্রশাসক নিয়োগ করিবেন ।

 উপধারা-(২) যেই ব্যক্তি মুসলমান নহে এবং বিধি-বিধান মতে উপযুক্ত যোগ্যতা না রাখেন তাহাকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করা যাইবে না ।

উপধারা-(৩) সাধারণতঃ একজন প্রশাসক পাঁচ বত্‍সরের জন্য নিয়োজিত হইবেন এবং তত্‍পর পুনর্নিয়োগের জন্য যোগ্য থাকিবেন ।
 

ধারা-৮ (প্রশাসকের চাকুরির শর্ত ও চুক্তিসমূহ)

এই অধ্যাদেশের বিধানসমূহ সাপেক্ষে, প্রশাসকের বেতন এবং চাকুরীর শর্তাদি ও চুক্তিসমূহ নিয়ম অনুসারে নির্ধারিত হইবে ।
 

ধারা-৯ (প্রশাসককে অপসারণ)

যদি কোনো সময় সরকার মনে করেন যে কোনো প্রশাসক তাহার পদের জন্য নিজেকে অনুপযুক্ত বলিয়া প্রদর্শন করিয়াছেন, অথবা তিনি অসদাচারণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হইয়াছেন, অথবা তাহার কর্তব্যে অবহেলা করিয়াছেন যাহার দরুন তাহাকে অপসারণ করা উচিত,তবে সরকার সরকারী গেজেটে বিজ্ঞপ্তির দ্বারা ঘোষণা করিতে পারেন যে উক্ত প্রশাসক তাহার পদ ধারণ করা হইতে বিরত হইবেন ।
 

ধারা-১০ (প্রশাসক একজন সরকারী অফিসার হইবেন)

১৯০৮ সনের দেওয়ানী কার্যবিধির (১৯০৮ সনের ৫নং আইনের) অর্থানুসারে একজন প্রশাসককে সরকারী অফিসার হিসাবে গণ্য করা হইবে ।
 

ধারা-১১ (প্রশাসক একক সংস্থা হইবেন)

বাংলাদেশের ওয়াকফসমুহের প্রশাসক নামে একজন একক সংস্থা হইবেন এবং সেই অনুযায়ী তাহার চিরস্থায়ী উত্তরাধিকার থাকিবে এবং ঐ নামে একটি কার্যালয়ের সীলমোহর থাকিবে ও সেই নামে মামলা দায়ের করিবেন এবং তাহার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হইবে ।
 

ধারা-১২ (প্রশাসকের দফতর) প্রশাসকের দফতর ঢাকায় অবস্থিত হইবে ।
 

ধারা-১৩ (উপ এবং সহকারী প্রশাসক নিয়োগ)

সরকার প্রশাসকের সহিত পরামর্শক্রমে, প্রয়োজনীয় সংখ্যক উপ-প্রশাসক ও সহকারী প্রশাসক নিয়োগ করিতে পারিবেন ।
 

ধারা-১৪ (উপ-প্রশাসক ও সহকারী প্রশাসকের বেতন)

উপ প্রশাসক ও সহকারী প্রশাসকগণের বেতন ও চাকুরীর শর্তাবলী যেরুপ বিধি দ্বারা নির্দিষ্ট করা হইবে সেইরুপ হইবে ।
 

ধারা-১৫ (কর্মচারীর সংখ্যা এবং পারিশ্রমিক)

সরকারের পূর্বানুমতি নিয়া প্রশাসক সময়ে সময়ে যে সকল অন্য অফিসার এবং কর্মচারীদেরকে এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্যে নিয়োগ করা প্রয়োজন বলিয়া মনে করেন তাহাদের সংখ্যা, পদবী এবং গ্রেড এবং তাহাদের প্রত্যেককে প্রদেয় বেতন ও বেতনের প্রকৃতি, ফিস এবং ভাতাসমূহ নির্ধারন করিতে পারিবেন ।
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection

bbasujon

  • Administrator
  • VIP Member
  • *****
  • Posts: 1827
  • I want to show my performance at any where
    • View Profile
    • Higher Education
Re: ওয়াকফ সংক্রান্ত আইন
« Reply #1 on: January 24, 2012, 07:31:43 AM »
ধারা-১৬ (অফিসার ও কর্মচারীদের চাকুরীর শর্ত)

১৫ ধারায় উল্লিখিত অফিসার ও কর্মচারীদের চাকুরির শর্তাবলী বিধির দ্বারা নির্ধারিত হইবে ।
 

ধারা-১৭ (নিয়োগ, ইত্যাদির ক্ষমতা প্রশাসকের উপর ন্যস্ত)

১৫ ধারায় উল্লিখিত অফিসার এবং কর্মচারীদের নিয়োগ, পদোন্নতি ও ছুটি মঞ্জুর করিবার ও পদাবনতী, সাময়িক কর্মচ্যুতি, অথবা অসদাচারণের জন্য তাহাদিগকে পদচ্যুত করিবার ক্ষমতা প্রশাসকের উপর ন্যস্ত থাকিবে।

তবে শর্ত থাকে যে, যে সকল অফিসার ও কর্মচারীদের বেতন একশত পঞ্চাশ টাকার উর্ধ্বে, তাঁহারা যদি প্রশাসক কর্তৃক পদাবনত হয় তাহা হইলে তাহারা সরকারের নিকট আপীল করিতে পারিবে এবং এতদবিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হইবে ।
 

ধারা-১৮ (ভ্রমণ ভাতা)

এই অধ্যাদেশের অধীনে প্রশাসক, উপ-প্রশাসক ও সহকারী প্রশাসক তাহাদের কর্তব্য সম্পাদনের কোন স্থানে ভ্রমণ করিবার জন্য সময়ে সময়ে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ন্যায়নসংগতহারে ভ্রমণ দেওয়া হইবে ।
 

ধারা-১৯ (ওয়াকফ কমিটি প্রতিষ্ঠা)

প্রশাসককে ওয়াকফ এবং উহার তহবিল সঠিকভাবে পরিচালনা করিতে এবং এই অধ্যাদেশ অনুসারে তাহার ক্ষমতা ও কর্তব্য প্রয়োগ ও সম্পন্ন করিতে সহায়তা করিবার ও উপদেশ দিবার জন্য সরকার একটি কমিটি প্রতিষ্ঠা করিতে পারিবেন যাহা ওয়াকফ কমিটি নামে অভিহিত হইবে ।
 

ধারা-২০ (কমিটি গঠন)

উপধারা-(১) সরকার কর্তৃক নিযুক্ত দশজন সদস্য এবং প্রশাসক চেয়ারম্যান সম্বলিত কমিটি থাকিবে । ইহাদের মধ্যে একজন শিয়া সম্প্রদায়ের মুতাওয়াল্লী হইবেন, এবং তিনজন সুন্নী সম্প্রদায়ের মুতাওয়াল্লী হইবেন, এবং বাকী ছয়জন সদস্য যাহারা মুসলিম আইনেও বিশেষ পারদর্শী ।
 

উপধারা-(২) নিয়োগের সময় সরকার সরকারী গেজেটে কমিটির সদস্যদের নাম প্রকাশ করিবেন ।

   

ধারা-২১। সদস্যদের কার্যকালঃ

    (১) কমিটির প্রত্যেক সদস্য পাঁচ বত্‍সরের জন্য স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন এবং যদি প্রকান্তরে যোগ্যতাসম্পন্ন হন তবে তাঁহার পদের মেয়াদ শেষ হইলে পুনরায় নিয়োগ লাভের যোগ্য হইবেন।

    (২) কমিটির একজন তাঁহার পদের মেয়াদ শেষ হইলে পুনরায় নিয়োগ লাভের যোগ্য হইবেন।

    (৩) যদি কোনো মুতাওয়াল্লী, যিনি মুতাওয়াল্লীরুপে কমিটির সদস্য নিযুক্ত হইয়াছেন, আর মুতাওয়াল্লী না থাকেন তবে সরকার সরকারী গেজেটে বিজ্ঞপ্তি দ্বারা তাহাও স্থান শুন্য বলিয়া ঘোষণা করিবেন।

 

ধারা-২২। সদস্যবৃন্দের অপসারণঃ

    (১) সরকার সরকারী গেজেটে বিজ্ঞপ্তি দ্বারা কমিটির যে কোনো সদস্যকে অপসারণ করিতে পারিবেন, যদি তিনি-

    (ক)    কমিটির সদস্যরুপে কাজ করিতে অসম্মতি জানান বা অক্ষম হন;

    (খ)    দেউলিয়া ঘোষিত হন;

    (গ)    এইরুপ কোনো অপসারণ দোষী সাব্যস্ত হন বা ফৌজদারী আদালত কর্তৃক এইরুপ কোনো আদেশ পালনে বাধ্য হন, যাহা সরকারের মতে তাঁহাকে উক্ত কমিটির সদস্যরুপে কাজ করিবার অযোগ্য প্রতিপন্ন করে; অথবা

    (ঘ)    কমিটির বিনা অনুমতিতে কমিটির তিনটি উপুর্যপরি বৈঠকে অনুপস্থিত থাকেন।

    (২) অনুরুপভাবে অপসারিত কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে সরকার এইরুপভাবে অপসারিত কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে সরকার এইরুপ মেয়াদ নির্দিষ্ট করিতে পারিবেন যাহার মধ্যে উক্ত ব্যক্তি পুনরায় নিয়োগ লাভের যোগ্য হইবেন না।

   

ধারা-২৩। সদস্যদের পদত্যাগঃ

    কমিটির কোনো সদস্য সরকারের নিকট লিখিত নোটিশ দিয়া তাহার পদত্যাগ করিতে পারেন। অতঃপর সরকার উক্ত পদত্যাগ গ্রহণ করিলে ঐ সদস্য তাহার পদ খালি করিয়াছেন বলিয়া বিবেচনা করা হইবে।

 

ধারা-২৪। নৈমক্তিক পদরিক্তিঃ ২১ ধারার (৩) উপ-ধারা অনুসারে কোনো সদস্যের পদ শুন্য বলিয়া ঘোষনা করা হইলে, অথবা ২১ ধারা মতে তাহাকে অপসারণের দরুন ঐ পদ খালি হইলে, অথবা তিনি ২৩ ধারা মতে ইস্তফা দিলে, অথবা তাহার মৃত্যু হইলে ২০ ধারা অনুসারে তাহার স্থলে একজন নতুন সদস্য নিয়োগ করা হইবে এবং উক্ত সদস্য পুর্বেকার সদস্যের পদ এইভাবে খালি না হইলে, তাহার কার্যকালের মেয়াদ পর্যন্ত কার্যকর থাকিবেন।

    তবে শর্ত এই যে, কমিটির কোনো কার্য কেবলমাত্র এই কারণে অসিদ্ধ হইবে না যে কমিটির এইরুপে কার্য পরিচালনাকালীন সদস্যের সংখ্যা ২০ ধারায় উল্লিখিত কমিটির সদস্য সংখ্যা হইতে কম ছিল।

 

ধারা-২৫। কমিটির সভায় গণপূর্তি এবং সভাপতিঃ

    (১) কমিটির সভায় গণপূর্তি গঠনের জন্য কমপক্ষে কমিটির চারজন সদস্যের উপস্থিতির প্রয়েজন হইবে।

    (২) প্রশাসক, অথবা, তাহার অনুপস্থিতিতে কমিটির সভায় উপস্থিত একজন সদস্যকে নির্বাচন করিলে তিনি কমিটির প্রত্যেক সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং সকল সম-ভোটের ক্ষেত্রে তাহার দ্বিতীয় ভোট প্রয়োগ করিতে পারিবেন।

 

ধারা-২৬। সদস্যদের ভ্রমণভাতাঃ

    এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী প্রত্যেক সদস্যকে তাহার কর্তব্য সম্পাদনের জন্য ভ্রমণ করিতে হইলে সরকার কর্তৃক সময়ে সময়ে নির্ধারিত ন্যায়সংগত হারে ভ্রমণ ভাতা প্রদান করিতে হইবে।

 

ধারা-২৭। প্রশাসকের সাধারণ ক্ষমতা ও কর্তব্যসমূহঃ

    এই অধ্যাদেশের বিধানসমূহ এবং উহার অধীনে প্রণীত বিধিসমূহ সাপেক্ষে প্রশাসকের ক্ষমতা এবং কর্তব্যসমূহ নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত হইবে-

    (ক)    ওয়াকফ এবং ওয়াকফ সম্পত্তির প্রকৃতি এবং আকার সম্বন্ধে তদন্ত করা ও স্থির করা এবং সময়ে সময়ে মুতাওয়াল্লীগণ হইতে হিসাব ও বিবরণ তলব করা;

    (খ)    যেই উদ্দশ্যে এবং যাহাদের উপকারার্থে ওয়াকফ সৃষ্টি করা হ্ইয়াছিল, অথবা সৃষ্টি করার ইচ্ছা ছিল যেই উদ্দেশ্যে ওয়াকফ সম্পত্তি এবং তাহা হইতে অর্জিত আয় নির্বাহ করা হইতেছে কিনা তাহা সুনিশ্চিত করা;

    (গ)    যথাযথ প্রশাসনের জন্য নির্দেশ দান করা;

    (ঘ)    এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী তিনি কোনো ওয়াকফের ভার গ্রহণ করিলে তিনি স্বয়ং কিংবা এই অধ্যাদেশ মতে নিযুক্ত কোনো অফিসার, অথবা কর্মীবৃন্দের মাধ্যমে অথবা তাহার দ্বারা অনুমোদিত কোনো ব্যক্তিগণের দ্বারা উহা পরিচালনা করিবেন বা করাইবেন এবং এই জাতীয় সম্পত্তি উপযুক্তভাবে নিয়ন্ত্রণ, পরিচালনা এবং ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাদি গ্রহণ করিবেন;

    (ঙ)    মুতাওয়াল্লীর বেতন নির্ধারণ করা যদি ওয়াকফ দলিলে এই বিষয়ে কোনো বিধান না থাকে;

    (চ)    বর্তমানে প্রচলিত কোনো আইন অনুযায়ী কোনো ওয়াকফ সম্পত্তি আহরণ করা হইলে উহার দরুন ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রাপ্ত টাকা তিনি স্বয়ং কিংবা নির্দেশ দান করিয়া মুতাওয়াল্লী কর্তৃক উপযুক্ত ভাবে বিনিয়োগ করা; এবং

    (ছ)    সাধারণতঃ ঐ ধরনের কার্য সম্পাদন করিবেন যাহা ওয়াকফ যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালনার জন্য প্রয়োজন হইতে পারে।

 

ধারা-২৮। কমিটির সাধারন ক্ষমতা ও কর্তব্যঃ

    এই অধ্যাদেশের বিধানাবলী এবং ইহার অধীনে প্রণীত বিধিসমূহের শর্তে কমিটির ক্ষমতা ও কর্তব্যসমূহের নিম্নলিখিত বিষয়াবলী অন্তর্ভুক্ত হইবে-

    (১) ওয়াকিফ অথবা যে কোনো বৈধ কর্তৃপক্ষের নিদের্শের অনুপস্থিতিতে ওয়াকফ সম্পত্তি আয়ের কোনো অংশ ওয়াকফের নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে বন্টন করা হইবে তাহা ঘোষনা করা;

    (২) কিভাবে ওয়াকফের বাড়তি আয় কাজে লাগানো যাইবে তাহা ঘোষণা করা;

   (৩) ওয়াকফ দলিলের শর্তাবলীর সহিত অথবা ওয়াকিফের ইচ্ছার সহিত অসমাঞ্জস্যপূর্ণ না হইলে এইরুপ বিষয়াদি যথাযথভাবে পরিচালনা করিবার জন্য কর্মসূচী সমূহ যোজন, পরিবর্তন অথবা পুনঃপরীক্ষা করা; এবং

    (ঘ) এই অধ্যাদেশের দ্বারা বা অধীনে ব্যক্তভাবে প্রদত্ত বা অপির্ত অন্য কোনা ক্ষমতা ও কর্তব্য প্রয়োগ ও সম্পাদনা করা।

 

ধারা-২৯। প্রশাসক এবং কমিটি ওয়াকফের উদ্দেশ্যে সম্পাদন করিবেন, কিন্তু প্রশাসক অচল বিধানসমূহ পুনঃপরীক্ষা করিতে পারিবেনঃ

    এই অধ্যাদেমের অধীন ওয়াকফ সম্পর্কে তাহাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করিবার এবং কর্তব্য পালন করিবার সময় প্রশাসক এবং কমিটি ওয়াকফ সম্পর্কিত যে কোন প্রথা বা রীতি মুসলিমত আইনের অধীন কার্যকর করিবেন।

    তবে শর্ত এই যে, স্বত্ব ভোগীদের স্বার্থে ওয়াকফের উদ্দেশ্যে অগ্রবর্তী করা কালে ওয়াকফ দলিলের যে সকল বিধান সময়ের কোনো এক বিন্দুর দিকে যাইবার জন্য বা পরিবর্তিত অবস্থার জন্য অকার্যকর হয় বা কার্যকর অসম্ভব হইয়া পড়ে। তাহা কমিটি পুনঃপরীক্ষা করিতে পারিবে।

 

ধারা-৩০। প্রশাসক কর্তৃক কমিটির ক্ষমতা ব্যবহারঃ

    (১) কমিটির সকল সিদ্ধান্ত ও প্রশাসকের আদেশের দ্বারা কার্যকর করা হইবে।

    (২) এই অধ্যাদেশ দ্বারা বা উহার অধীন কমিটিকে প্রদত্ত বা উহার উপর আরোপিত যে কোন ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করিবার জন্য কমিটি সময়ে সময়ে প্রশাসককে ক্ষমতা প্রদান করিতে পারিবেন।

   (৩) যেক্ষেত্রে কোনো কমিটি নাই বা কোনো কারণবশতঃ কমিটি কাজ করিতে পারে না সেইক্ষেত্রে এই অধ্যাদেশের অধীন কমিটির প্রতি ন্যস্ত ক্ষমতাসমূহ প্রশাসক কর্তৃক প্রয়োগ করা হইবে।
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection

bbasujon

  • Administrator
  • VIP Member
  • *****
  • Posts: 1827
  • I want to show my performance at any where
    • View Profile
    • Higher Education
Re: ওয়াকফ সংক্রান্ত আইন
« Reply #2 on: January 24, 2012, 07:32:09 AM »
ধারা-৩১। উপ-প্রশাসক এবং সহকারী প্রশাসকগণের ক্ষমতা এবং কর্তব্যসমূহঃ

    সরকার এবং প্রশাসকের নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে উপ-প্রশাসক এবং সহকারী প্রশাসকগণ এই অধ্যাদেশানুসারর সরকারের পুর্বানুমতি গ্রহণ করিয়া প্রশাসক সরকারী গেজেটে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাহা যেই কর্তব্য অর্পণ করেন বা নির্দিষ্ট করিয়া দেন তাহা উপ-প্রশাসক এবং সহকারী-প্রশাসক সম্পন্ন করিতে পারিবেন।

 

ধারা-৩২। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মুতাওয়াল্লীকে অপসারণ এবং বিশ্বাস ভঙ্গের জন্য তাহার দায়-দায়িত্বঃ

    (১) এই অধ্যাদেশে অথবা বর্তমানে প্রচলিত কোনো আইনে অন্য কোনো বিধান বলবত থাকা সত্বেও প্রশাসক স্বেচ্ছায়, অথবা যে কোনো ব্যক্তির দরখাস্তের উপর একজন মুতাওয়াল্লীকে  নিয়ে বর্ণিত কারণসমূহের দরুন অপসারণ করিতে পারেন-

    (ক) বিশ্বাস ভঙ্গের অবস্থাপনা করার, অবৈধ কার্যকলাপের অথবা অন্যায়রুপে আত্মসাত্‍ করার জন্য; অথবা

    (খ) মুতাওয়াল্লীর কোনো কার্য দরুন ওয়াকফ সম্পত্তির কোনো ক্ষতিসাধন করা, অথবা যথাযথ কার্য-পরিচালনা করায় ওয়াকফ নিয়ন্ত্রন অথবা সংরক্ষণে হানি করা; অথবা

    (গ) এই অধ্যাদেশের অধীনে মুতাওয়াল্লী একাধিকবার দন্ড প্রাপ্ত হইয়া থাকিলে, অথবা

    (ঘ) যদি বর্তমানের মুতাওয়াল্লী অনুপযুক্ত, অযোধ্য,অমনোযোগী, অথবা অন্য প্রকারে অবাঞ্চিত বলিয়া বিবেচিত হন।

    তবে,শর্ত এই যে,কোনো মুতাওয়াল্লী এইভাবে অপসারণ করার আদেশ দেওয়ার পূর্বে তাহাকে নিজের বক্তব্য রাখিবার সুযোগ দিতে হইবে।

    (২) উপধারা (১) অনুসারে প্রদত্ত আদেশের বিরুদ্ধে ক্ষুন্ন মুতাওয়াল্লীকে তাহার ভার বুঝাইয়া না দেওয়া পর্যন্ত তাহার কোনো আপিল গ্রহণীয় হইবে না।

    (৩) উপধারা (২) অনুযায়ী জেলা জজ কর্তৃক আপিলের আদেশের বিরুদ্ধে উক্ত আদেশের নব্বই দিনের মধ্যে সুপ্রীমকার্টের হাইকোর্ট বিভাগে পুনঃপরীক্ষা করা যাইবে, এবং এই বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে।

    (৪) কোনো মুতাওয়াল্লীকে অপসারণ করা হইলে,অথবা মুতাওয়াল্লী পদত্যাগ করিলে এবং তাহার পদত্যাগ গৃহীত হইলে, প্রশাসক তাহার স্থলে একজন নুতন মুতাওয়াল্লী নিয়োগ করিতে পারিবেন যাহার নিকট বিদায়ী মুতাওয়াল্লী প্রশাসক কর্তৃক নির্ধারিত তারিখের মতো ওয়াকফ সম্পত্তির দখল এবং ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত যাবতীয় দলিলাদি হস্তান্তর করিয়া দিবেন।

    (৫) যদি (৪) উপধারা মতে বিদায়ী মুতাওয়াল্লী ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা এবং তদসংক্রান্ত যাবতীয় দলিলাদি পরবর্তী মুতাওয়াল্লীকে হস্তান্তর করিতে অপারগ হন অথবা অস্বীকার করেন তবে পরবর্তী মুতাওয়াল্লী অথবা প্রশাসক ডেপুটি-কমিশনারের নিকট দরখাস্ত করিতে পারেন। অতঃপর ডেপুটি কমিশনার বিদায়ী মুতাওয়াল্লীকে উচ্ছেদ করিয়া দিবেন এবং অবস্থা বিশেষে ওয়াকফ সম্পত্তি এবং তদসংক্রান্ত দলিলাদি উত্তরবর্তী মুতাওয়াল্লীকে কিংবা প্রশাসককে হস্তান্তর করিবেন।

    (৬) যদি তিনি মুতাওয়াল্লীকে বিশ্বাস ভঙ্গ করেন, অথবা ওয়াকফ সম্পত্তির ক্ষতি সাধনমুলক কোনা কাজ করেন, তবে তাহাকে ওয়াকফ সম্পত্তির অথবা উহার স্বত্বভোগীদের ক্ষতিপূরণ দান করিতে হইবে।

 

ধারা-৩৩। ওয়াকফ সম্পত্তি হস্তান্তর করিতে প্রশাসকের ক্ষমতাঃ

    এই অধ্যাদেশের অপর কোনো স্থানে বা বর্তমানে প্রচলিত, অথবা কোনো ওয়াকফ দলিলে কিংবা কোনো চুক্তিতে বিপরীত কোনো বিধান থাকা সত্বেও প্রশাসক সরকারের পূর্ব অনুমোদন গ্রহণ করিয়া ওয়াকফের উন্নতি সাধনকল্পে, কিংবা ওয়াকফের হিতার্থে উহার যে কোনো অংশ হস্তান্তর করিতে পারিবেন।

 

ধারা-৩৪। বিজ্ঞপ্তির মাধ্যেম প্রশাসক ওয়াকফ সম্পত্তির কার্যভার গ্রহণ করিতে পারেনঃ

    (১) এই অধ্যাদেশের অপর কোনো স্থানে অথবা বর্তমানে প্রচলিত আইনে, অথবা কোনো আদালতের ডিক্রি বা আদেশ, অথবা কোনো দলিল দস্তাবেজে কোনো বিধান থাকিলেও সরকারী গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রশাসক ওয়াকফের অন্তর্গত যেই সম্পত্তি যাহাতে মন্দির,বেদী,দরগাহ,ইমামবাড়া,অথবা অপরাপর ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান অন্তভূক্ত উহাদের পরিচালনা,নিয়ন্ত্রণ,ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণের ভার গ্রহণ করিতে পারিবেন।

    (২) (১) উপধারামতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর যথাসম্ভব শীঘ্র প্রশাসক এই জাতীয় বিজ্ঞপ্তিতে বর্ণিত ওয়াকফ সম্পত্তি সম্পর্কে মুতাওয়াল্লীকে নোটিশ দেওয়াইবেন এবং নির্ধারিত তারিখে উক্ত ওয়াকফ সম্পত্তি সংশ্লিষ্ট যাবতীয় দলিল দস্তাবেজ তাহাকে অর্পণ করিতে নির্দেশ দিবেন। অতঃপর মুতাওয়াল্লী নির্ধারিত তারিখে উহা অর্পণ করিতে ব্যর্থ হইলে প্রশাসক ডেপুটি কমিশনারের নিকট দরখাস্ত করিবেন এবং সেই অনুযায়ী ডেপুটি কমিশনার উক্ত মুতাওয়াল্লীকে উত্‍খাত করিবেন এবং প্রশাসককে ওয়াকফ সম্পত্তির দখল দিবেন।

    (৩) উপধারা (১) অনুসারে তাহার দ্বারা গৃহীত ওয়াকফ সম্পত্তি প্রশাসক তাহার অধস্তন কোনো অফিসার,অথবা কোনো প্রতিনিধির অথবা সরকারী মুতাওয়াল্লীর মাধ্যমে বা তিনি প্রয়োজন মনে করিলে মন্দির, মঠ, দরগাহ, ইমামবাড়া, অথবা অপরাপর ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে একটি নির্বাহী সমিতি নিয়োগ করিয়া উহা পরিচালনা করাইতে পারেন।

    (৪) উপধারা (৩) অনুসারে নির্বাহী সমিতি নিযুক্ত হইলে সংশ্লিষ্ট ওয়াকফ সম্পত্তির মুতাওয়াল্লী,ব্যবস্থাপক,অথবা সাজ্জাদানশীন (যদি থাকেন) এবং ডেপুটি কমিশনার অথবা তাহার প্রতিনিধি উক্ত সমিতির সদস্য হইবেন এবং এইরুপ প্রত্যেক সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক উক্ত সমিতির সদস্যগণ হইতে প্রশাসক কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন।

    (৫) উপধারা (১) অনুসারে প্রশাসক কর্তৃক গৃহীত ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনার জন্য উপধারা (৩) অনুযায়ী নিযুক্ত অফিসার, অথবা প্রতিনিধি, অথবা সরকারী মুতাওয়াল্লী, অথবা ব্যবস্থাপনা সমিতি এইরুপ প্রত্যেক ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনার অনুমোদন সাপেক্ষে প্রস্তুত করিবেন যাহা প্রশাসক তাহার বিবেচনানুযায়ী রুপান্তরিত করিতে পারিবেন।

    (৬) (১) উপধারা অনুযায়ী গৃহীত ওয়াকফ সম্পত্তির সম্পূর্ণ হিসাব প্রশাসক চালু রাখিবেন এবং নির্ধারিত নিয়মানুযায়ী এই সম্পত্তির আয় ও ব্যয় সম্পর্কে ও তত্‍সহ এই উদ্দেশ্যে প্রশাসক ও তাহার প্রতিষ্ঠানের খরচাদির বিস্তৃত বিবরণ সংরক্ষণ করিবেন,এবং তাহার নিয়ন্ত্রধীন এই সম্পত্তি বাবদ প্রাপ্ত ও উসুলকৃত সমস্ত অর্থ ওয়াকফ তহবিলে জমা করিতে হইবে।

নিবেন। মুতাওয়াল্লী নিয়োগের ক্ষেত

 

ধারা-৩৫। প্রশাসকের আদেশ বা বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে দরখাস্ত এবং আপিলঃ

    (১) মুতাওয়াল্লী অথবা যে সম্পত্তি সম্পর্কে ৩৪ ধারার (১) উপধারার অধীন বিজ্ঞপ্তি প্রদান করা হইয়াছে তাহাতে দাবিদার কোনো ব্যক্তি অনুরুপ বিজ্ঞপ্তির দ্বারা সংক্ষুব্ধ হইলে,বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বা অনুরুপ আদেশ প্রদানের তিন মাসের মধ্যে, উক্ত ওয়াকফ সম্পত্তি বা উহার অংশ বিশেষের উপর এখতিয়ার সম্পন্ন জেলা জজের নিকট এই মর্মে ঘোষণা প্রদানের জন্য আবেদন করিতে পারিবেন যে-

    (ক) উক্ত সম্পত্তি ওয়াকফ সম্পত্তি নহে; বা

    (খ) উক্ত সম্পত্তি ওয়াকফ সম্পত্তি,তবে তাহা আবেদনে বর্ণিত সীমার অন্তর্গত।

    (২) জেলা জজ পক্ষগণের বক্তব্য শুনিবার পর যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবেন সেরূপ আদেশ দান করিতে পারিবেন,অথবা তিনি যদি মনে করেন যে উক্ত আবেদন অযথা বিরক্তি ও বিলম্বের উদ্দেশ্যে করা হইয়াছে তবে তিনি কোনো সাক্ষীকে হাজির হইতে বা কোনো দলিল পেশ করিতে বাধ্য করার জন্য কোনো পর ওয়ানা ইস্যু করিতে,কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া অস্বীকার করিতে পারিবেন,এবং আবেদন সংক্ষিপ্তভাবে খারিজ করিয়া দিতে পারিবেন।

     (৩) (২) উপ-ধারার অধীনে জেলা জজের সিদ্ধান্তের দ্বারা সংক্ষুদ্ধ কোনো ব্যক্তি অনুরুপ আদেশ প্রদানের ষাট দিনের মধ্যে হাইকোর্টে আপিল করিতে পারিবেন।

    (৪) জেলা জজের সিদ্ধান্ত,অথবা আপিলের ক্ষেত্রে,হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

   

ধারা-৩৬। ডেপুটি কমিশনার অথবা অপরাপরদের মাধ্যমে ক্ষমতা প্রয়োগঃ

    এই সম্পর্কে গঠিত কোনো বিধান সাপেক্ষে এই অধ্যাদেশ বলে প্রশাসককে যেই ক্ষমতা আরোপ করা হইয়াছে যেই জেলায় সংশ্লিষ্ট ওয়াকফ সম্পত্তি অবস্থিত সেই জেলায় ডেপুটি কমিশনারের মাধ্যমে,অথবা তাহার দ্বারা এই উদ্দেশ্যে সময়ে সময়ে নিযুক্ত অন্য কোনো ব্যক্তিকে তাহার যেই কোনো ক্ষমতা ডেপুটি কমিশনারকে অথবা পূর্ববর্তী যেই কোনো অফিসারকে অর্পণ করিতে পারেন এবং যে কোনো সময় উহা রহিত করিতে পারেন।

   

ধারা-৩৭। অনুসন্ধান অথবা হিসাব নিরীক্ষা করার জন্য দরখাস্তঃ

    যে কোনো ওয়াকফে কোনো স্বার্থ থাকিলে তিনি ওয়াকফের পরিচালনা অথবা উহার পরীক্ষা ও নিরীক্ষা করার ব্যাপারে একটি হলফনামার দ্বারা সমর্থিত দরখাস্ত প্রশাসকের নিকট দাখিল করিতে পারিবেন;অতঃপর প্রশাসক উক্ত দরখাস্ত পাওয়ার পর এবং উহাতে বর্ণিত তথ্যসমূহের সত্যতা সম্বন্ধে যদি উহা বিশ্বাস করার ন্যায় সংগত কারণ দেখেন যে ওয়াকফের সম্পত্তি সঠিকভাবে পরিচালনা করা হইতেছে না, তবে তিনি উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করিবেন।

    তবে শর্ত এই যে হিসাব পরীক্ষা-নিরীক্ষার দরখাস্ত উক্ত দরখাস্ত দাখিল করার সময় হইতে তিন বত্‍সরের অধিককাল সময়ের পূর্বেকার সময়ের দাখিল করা যাইবে না।

   

ধারা-৩৮। এই অধ্যাদেশের অধীন প্রশাসকের তদন্তের ক্ষমতাঃ

    এই অধ্যাদেশের অধীন প্রশাসকের তদন্তের উদ্দেশ্যে, প্রশাসকের সমন জারীর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট পক্ষসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও সাক্ষীগণকে হাজির হইতে বাধ্য করার, তাহাদিগকে পরীক্ষা করার,দলিলপত্র পেশ করিতে বাধ্য করার এবং সাক্ষীগণকে পরীক্ষা করার জন্য  কমিশন ইস্যু করার সেইরুপ ক্ষমতা থাকিবে যেরুপ ক্ষমতা ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধির অধীন দেওয়ানী আদালতের রহিয়াছে।

    (২) প্রশাসক দন্ডবিধির ১৮৮ ধারার উদ্দেশ্যে একজন সরকারী কর্মচারী এবং ১৮৯৮ সালের ফৌজদারী কার্যবিধির ১৯৫ ধারা ও ৩৫ পরিচ্ছেদের উদ্দেশ্যে দেওয়ানী আদালত বলিয়া গণ্য হইবেন।

 

ধারা-৩৯। অব্যবস্থা হইতে ওয়াকফকে রক্ষাকরণঃ

    ৩৭ ধারার অধীন অনুসন্ধান করিবার পর প্রশাসক যদি এই অভিমত পোষণ করেন যে ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যাপারে এমনভাবে অব্যবস্থা হইয়াছে যাহার জন্য উক্ত ওয়াকফ সম্পত্তির অথবা উহার স্বত্বভোগীদের স্বার্থে উহাকে অধিকতর নিয়ন্ত্রণ অথবা অবধানের অধীন তত্বাবধান রাখা প্রয়োজন, তাহা হইলে তিনি ৩৪ ধারার বিধানানুসারে নিজে উহার পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণের ভার গহণ করিতে পারিবেন অথবা উক্ত ওয়াকফ সম্পত্তিকে এই অধ্যাদেশের এইরুপ বিধানাবলীর আওতায় যেই পর্যন্ত রাখিতে পারিবেন যে নির্দিষ্ট সময়ে তিনি উপযুক্ত বলিয়া মনে করেন।

 

ধারা-৪০। নির্দেশের জন্য মুতাওয়াল্লীর দরখাস্ত করিবার ক্ষমতাঃ

    (১) যে কোনো মুতাওয়াল্লী ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে অথবা প্রশাসনের ব্যাপারে, অথবা ওয়াকফ দলিলের কোনো বিষয়ের ব্যাখ্যাকরণের জন্য প্রশাসকের নিকট তাহার মতামত, উপদেশ ও নির্দেশের জন্য দরখাস্ত করিতে পারিবেন এবং প্রশাসক উক্ত বিষয়াদি সম্পর্কে তাহার অভিমত, উপদেশ ও নির্দেশ দিবেন।

    তবে শর্ত থাকে যে, প্রশাসক যদি প্রশ্নটি যথোপযুক্তভাবে নিস্পত্তি করিতে না পারেন, তাহা হইলে যে এলাকায় ওয়াকফ সম্পত্তি বা ইহার অংশ অবস্থিত সেই এলাকার জেলা জজের নিকট বিষয়টি উত্থাপন করিতে পারিবেন; অতঃপর মুতাওয়াল্লী উক্ত আদালতে দরখাস্ত করিলে আদালত উপধারা (২) ও (৩) অনুয়ায়ী উক্ত ব্যাপারে অভিমত, উপদেশ ও নির্দেশ দিবেন।

    (২) (১) উপধারার অধীন দরখাস্ত পাইবার পর প্রশাসক অবিলম্বে উহার উপর তাহার অভিমত, উপদেশ বা নির্দেশ দিবেন, অথবা দরখাস্তের শুনাণীর জন্য একটি তারিখ ধার্য করিবেন এবং উহার একটি অনুলিপি ও তত্‍সহ উক্ত নির্ধারিত তারিখ সম্বন্ধে ওয়াকফ সম্পত্তিতে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণের উপর নোটিস জারী করিবার নির্দেশ দিতে পারিবেন অথবা তিনি যরুপে উপযুক্ত মনে করেন সেইরুপে তথ্য প্রকাশ করিবেন।

    (৩) (২) উপধারার অধীন নির্ধারিত যে কোনো তারিখে অথবা শুনানী মুলতবী থাকিলে পরবর্তী যে কোনো তারিখে প্রশাসক তাহার অভিমত, উপদেশ বা নির্দেশ দিবার পূর্বে দরখাস্ত সম্পর্কে উপস্থিত সকল ব্যক্তিদের শুনানীর জন্য ন্যায়ঙ্গত সুযোগ দিবেন।

    (৪) প্রশাসকের কিংবা আদালতের অভিমত, উপদেশ অথবা নির্দেশ অনুসারে কার্য সম্পাদনকারী প্রত্যেক মুতাওয়াল্লী তাহার দায়িত্ব মোতাবেক দরখাস্তের বিষয়বস্তু সম্পর্কে কর্তব্য সম্পাদন করিয়াছেন বলিয়া মনে করিতে হইবে।

    তবে শর্ত থাকে যে, এইরুপে অভিমত উপদেশ অথবা নির্দেশ লাভের জন্য কোনো মুতাওয়াল্লী প্রতারণা অথবা  কোনো তথ্য ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন রাখিবার বা মিথ্যা বর্ণনার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইলে অতঃপর এমন কিছু বর্ণিত হয় নাই যাহা তাহাকে ক্ষতিপূরণ করা হইতে রেহাই দেয়।

 

ধারা-৪১। সংরক্ষিত তহবিল সৃষ্টিঃ

    সরকারকে অথবা স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে খাজনা, অভিকর এবং কর প্রদানের নিমিত্ত এবং ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষণের জন্য বিধান করিবার উদ্দেশ্যে প্রশাসক যেরুপ উপযুক্ত মনে করেন ওয়াকফ সম্পত্তির আয়-হইতে যেইরুপ কায়দায় একটি সংরক্ষিত তহবিল সৃষ্টি ও সংরক্ষণের নির্দেশ দিতে পারিবেন।

 

ধারা-৪২। মুতাওয়াল্লীর খেলাপের ক্ষেত্রে পাওনা প্রদানের ক্ষমতাঃ

    (১) সরকার কিংবা যে কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষের খাজনা, অভিকর এবং কর প্রদান করিতে কোনো মুতাওয়াল্লী অস্বীকার করিলে কিংবা প্রদান না করিলে প্রশাসক ওয়াকফ তহবিল হইতে পাওনা প্রদান করিবেন; এবং উহা ওয়াকফ সম্পত্তি হইতে উদ্ধার করিতে অগ্রসর হইতে পারিবেন এবং মুতাওয়াল্লীর নিকট হইতে পাওনার উপর শতকরা সাড়ে বারো টাকা হারে ক্ষতিপূরণও আদায় করিতে পারিবেন।

    (২) (১) উপধারার অধীন পাওনা যে কোনো পরিমাণ অর্থ সরকারী দাবী আদায় আইন, ১৯১৩ (১৯১৩ সনের ৩নং আইন)- এ
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection

bbasujon

  • Administrator
  • VIP Member
  • *****
  • Posts: 1827
  • I want to show my performance at any where
    • View Profile
    • Higher Education
Re: ওয়াকফ সংক্রান্ত আইন
« Reply #3 on: January 24, 2012, 07:32:46 AM »
ধারা-৪৫। নথি পরিদর্শন এবং নকল মঞ্জুরীঃ

    (১) নির্ধারিত ফি ও শর্তাধীনে প্রশাসক তাহার অফিসের কার্যবিবরণী অথবা নথি পরিদর্শন ও উহাদের নকল সংগ্রহ করিবার অনুমতি দিতে পারেন। নকলসমূহ প্রশাসক কর্তৃক অথবা এই ব্যাপারে প্রশাসকের দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত অফিসার কর্তৃক সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ (১৮৭২ সনের ১ আইন) অনুযায়ী প্রত্যায়িত হইবে।

    (২) যে কোনো স্তত্বভোগী অথবা ওয়াকফ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো ব্যক্তি প্রশাসকের অনুমতি লইয়া ওয়াকফ সংক্রান্ত কার্যবিবরণী অথবা অন্য রেকর্ড পরিদর্শন করিতে বা উহাদের নকল লইতে অধিকারী।

    (৩) প্রশাসক তাহার বিচারিক ক্ষমতা বলে কোনো আগন্তুককে ওয়াকফ সংক্রান্ত কার্যবিবরণী অথবা রেকর্ড  পরিদর্শন করিতে বা উহাদের নকল লইবার অনুমিত দিতে পারিবেন।

 

ধারা-৪৬। কোনো কার্য সম্পাদনের জন্য সময় বর্ধিতকরণঃ

    প্রশাসক সময়ে সময়ে এ অধ্যাদেশ অনুযায়ী যে সময়ের মধ্যে কার্য সম্পাদন করা প্রয়োজন অথবা যাহার মধ্যে সম্পাদন করিতে আদেশ দেওয়া হইয়াছে উহা বর্ধিত করিতে পারিবেন।

 

ধারা-৪৭। ওয়াকফের তালকার্ভূক্তিঃ

    (১) এই অধ্যাদেশ প্রবর্তনের সময়ে বিদ্যমান অথবা প্রবর্তনের সৃষ্ট সকল ওয়াকফ প্রশাসকের অফিসে তালিকাভূক্ত হইবে ।

    (২) মুতাওয়াল্লী তালিকাভূক্তির জন্য কোনো ব্যক্তি অনুরুপ তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করিতে পারিবেন ।

    (৩) প্রশাসক এরূপ নির্ধারণ করিবেন সেইরুপ ফরম ও পদ্ধতিতে এবং সেই স্থানে তালিকাভূক্তির জন্য আবেদন করিতে হইবে এবং যতদূর সম্ভব উহাতে নিম্নলিখিত বিবরণ থাকিবে-

    (ক) ওয়াকফ সম্পত্তি সনাক্তকরণের জন্য পর্যাপ্ত বর্ণনা;

    (খ) অনুরুপ সম্পত্তির সর্বমোট বার্ষিক আয়;

    (গ) ওয়াকফ সম্পত্তি বাবদ প্রতি বত্‍সরের প্রদেয় রাজস্ব, অভিকর ও করের পরিমাণ;

    (ঘ) প্রাপ্ত বিবরণের ভিত্তিতে ওয়াকফ সম্পত্তির আয় আদায়ের জন্য বার্ষিক খরচের অনুমতি হিসাব;

    (ঙ) ওয়াকফ-এর অধীন নিম্নলিখিত কাজের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ-

        (অ) মুতাওয়াল্লীর বেতন ও অন্যান্য লোকের ভাতা;

        (আ) সম্পূর্ণ ধর্মীয় উদ্দেশ্যে;

        (ই) দাতব্য উদ্দেশ্যে ও

        (ঈ) অন্য কোনো উদ্দেশ্যে এবং

        (চ) প্রশাসক কর্তৃক নির্ধারিত অন্য কোনো বিবরণ ।

    (৪) অনুরুপ প্রত্যেকটি আবেদনপত্রের সঙ্গে ওয়াকফ দলিলের একটি সত্যায়িত অনুলিপি থাকিবে, আর যদি অনুরুপ কোনো দলিল সম্পাদিত না হইয়া থাকে, অথবা উহার অনুলিপি পাওয়া না যায় তবে অন্যরুপ প্রত্যেকটি আবেদনপত্রে আবেদনকারীর জানা মতে ওয়াকফ এর সচূনা, প্রকৃতি ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে পূর্ণ বিবরণ বিধৃত থাকিবে ।

    (৫) তালিকাভূক্তির জন্য প্রত্যেকটি আবেদন পাইয়া এবং কোনো সম্পত্তি ওয়াকফ সম্পত্তিরুপে তালিকাভূক্তকরণের পূর্বে, প্রশাসক যে জেলার উক্ত সম্পত্তি অবস্থিত সেই জেলার ডেপুটি কমিশনারের নিকট আবেদনের একটি অনুলিপি প্রেরণ করিবেন এবং উক্ত সম্পত্তি সরকারের খাস সম্পত্তি কিনা তাহা-তাহার নিকট হইতে যাচাই করিবেন । যদি ডেপুটি কমিশনার উক্ত সম্পত্তি সরকারের মালিকানাধীন হওয়ার কারণে তালিকাভূক্তিতে আপত্তি জানান তবে আবেদনকারীকে তাহা জানানো হইবে এবং আবেদনকারী যদি দেওয়ানী আদালতের বিপরীতে কোনো সিদ্ধান্ত দেখাইতে পারেন তবে তালিকাভূক্তির আবেদন নাকচ করা হইবে ।

    (৬) (৫) উপ-ধারার অধীনে, যেক্ষেত্রে তালিকাভুক্তির আবেদন নাকচ করা হয় নাই, সেক্ষেত্রে প্রশাসক, ওয়াকফ তালিকাভূক্তির পূর্বে আবেদনের যথাযর্থ ও বৈধতা এবং উহাতে বিধৃত কোনো বিবরণের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে যেরুপ উপযুক্ত মনে করিবেন, সেইরুপ করিতে পারিবেন; এবং ওয়াকফ সম্পত্তি প্রশাসনকারী ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি আবেদন করিলে প্রশাসক ওয়াকফ তালিকাভূক্তির পূবের্ ওয়াকফ সম্পত্তির প্রশাসনকারীকে আবেদনের নোটিশ প্রদান করিবেন এবং তিনি তাহার বক্তব্য পেশ করিতে চাহিলে তাহা শুনিবেন ।

    (৭) এই অধ্যাদেশ যে তারিখে বলবত্‍ হইবে উহার পূর্বে সৃষ্ট ওয়াকফ-এর ক্ষেত্রে তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন ঐ তারিখ হইতে তিন মাসের মধ্যে করিতে হইবে ।

    তবে শর্ত থাকে যে, উইলগত ওয়াকফের ক্ষেত্রে, তালিকাভূক্তির আবেদন, অধ্যাদেশ বলবত্‍ হইবার তারিখ বা উইলকারীর মৃত্যুর তারিখ, এই দুই এর যেইটি পরে আসিবে সেই তারিখ হইতে তিন মাসের মধ্যে করিতে হইবে ।

    (৮) (২) উপ-ধারার অধীনকৃত প্রত্যেকটি আবেদন ইংরেজী বা বাংলা ভাষায় লিখিত হইবে এবং ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধিতে আরজি স্বাক্ষর ও প্রতিপাদনের জন্য ব্যবস্থিত পদ্ধতিতে আবেদনকারী কর্তৃক তাহা স্বাক্ষরিত ও প্রতিপাদিত হইতে হইবে ।

    (৯) যদি আবেদনকারী আবদেনপত্রে স্বাক্ষর বা উহা প্রতিপাদন করার জন্য নোটিশ প্রাপ্ত হইয়াও তাহা করিতে অস্বীকার করেন তবে ৪৮ ধারার অধীন রক্ষিত রেজিস্টারে সেই মর্মে একটি নোট লিখিয়া রাখা হইবে ।

 

ধারা-৪৮। ওয়াকফসমূহের রেজিস্ট্রার প্রশাসকঃ

    ওয়াকফের একটি রেজিস্টার সংরক্ষণ করিবেন যাহাতে প্রত্যেক ওয়াকফ সম্পর্কীয় দলিল এবং নিম্নেবর্ণিত বিবরাণাদি অন্তর্ভুক্ত থাকিবেঃ-

    (ক)    মুতাওয়াল্লীর নাম;

    (খ)    মুতাওয়াল্লীর পদের উত্তরাধিকার সম্পর্কে ওয়াকফ দলিল অনুযায়ী, অথবা প্রথা অথবা রীতি অনুসারে প্রবর্তিত বিধিসমূহ;

    (গ)    সকল ওয়াকফ সম্পত্তি এবং ওয়াকফ সংক্রান্ত স্বত্বনামা ও দলিলাদি;

    (ঘ) প্রশাসনের পরিকল্পের বিবরণসমূহ এবং তালিকাভূক্তির সময়ে ব্যয়ের পরিমাণ; এবং

    (ঙ) অপরাপর বিবরণাদি যাহা প্রশাসক নির্দিষ্ট করিয়া দেন ।

 

ধারা-৪৯। ওয়াকফ তালিকাভূক্তিকরণের এবং রেজিস্টার সংশোধন করার ক্ষমতাঃ

    প্রশাসক স্বেচ্ছায় অথবা কোনো স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ৪৭ ধারার (৮) উপধারা মতে প্রত্যায়িত দরখাস্তের উপর মুতাওয়াল্লীকে তালিকাভূক্তির জন্য দরখাস্ত করিতে অথবা ওয়াকফ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করিতে নির্দেশ দান করিতে পারেন  অথবা নিজেই এই ধরণের তথ্য সংগ্রহ করিতে পারেন এবং যে কোনো ওয়াকফ তালিকাভুক্তি করাইতে পারেন অথবা যে কোনো সময়ে রেজিস্টার সংশোধন করিতে পারেন ।

 

ধারা-৫০। কোন সম্পত্তি ওয়াকফ সম্পত্তি হইলে তত্‍সংক্রান্তে নির্দেশঃ

    কোনো  বিশেষ সম্পত্তি ওয়াকফ সম্পত্তি কিনা সেই সম্পর্কে যে কোনো প্রশ্ন প্রশাসক কর্তৃক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হইবে ।

    তবে শর্ত থাকে এই যে মুতাওয়াল্লী কিংবা যে কোনো ব্যক্তি এই ব্যাপারে প্রশাসকের সিদ্ধান্তে অথবা আদেশে ক্ষুন্ন হইয়া থাকিলে তিনি উক্ত সিদ্ধান্ত অথবা আদেশ দানের তিন মাসের মধ্যে ৩৫ ধারার (১) উপধারামতে জেলা জজের নিকট উহার বিরুদ্ধে আপিল করিতে পারিবেন এবং এই জাতীয় দরখাস্ত করা হইলে সেই ক্ষেত্রে ৩৫ ধারার বিধান প্রযোজ্য হইবে ।

 

ধারা-৫১। তালিকাভূক্ত ওয়াকফের বিষয় পরিবর্তনের বিজ্ঞপ্তিঃ

    (১) মুতাওয়াল্লীর মৃত্যু, অবসর গ্রহণ বা অপসারণের কারণে কোনো তালিকাভূক্ত ওয়াকফ এর ব্যবস্থাপনায় কোনো পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য মুতাওয়াল্লী যিনি ওয়াকফ দলিল বা ওয়াকফ সংক্রান্ত প্রথা বা রীতি অনুসারে মুতাওয়াল্লী পদের উত্তরাধিকারী হইবার যোগ্য বা নিজেকে যিনি যোগ্য বলিয়া মনে করেন তিনি অবিলম্বে এবং অন্য কোনো ব্যক্তি, প্রশাসককে উক্ত পরিবর্তন সম্পর্কে জ্ঞাত করাইবেন ।

    (২) ৪৭ ধারায় বর্ণিত কোনো বিবরণে অন্য কোনো পরিবর্তনের ক্ষেত্রে, মুতাওয়াল্লী উক্ত পরিবর্তন ঘটিবার তারিখ হইতে ছয় মাসের মধ্যে প্রশাসককে অনুরুপ পরিবর্তন সম্পর্কে জ্ঞাত করাইবেন ।

 

ধারা-৫২। ওয়াকফের হিসাব দাখিলঃ

    (ক) ৪৭ ধারায় উল্লেখিত দরখাস্ত দাখিল করিবার পরে এবং পনরই সেপ্টেম্বরের পূর্বে এবং অতঃপর প্রত্যেক বত্‍সর পনেরই জুলাইয়ের পূর্বে কোনো ওয়াকফের প্রত্যেক মুতাওয়াল্লী প্রশাসক কর্তৃক নির্ধারিত কায়দায় ও ভাষায় এবং বিবরণ সম্বলিত সম্পূর্ণ ও সত্য হিসাব বিবরণী প্রস্তুত করিবেন এবং প্রশাসকের নিকট দাখিল করিবেন যাহা ৩০শে জুন অথবা বাংলা বত্‍সরের শেষ দিনের এক বত্‍সর মেয়াদের জন্য মুতাওয়াল্লী কর্তৃক গৃহিত হইয়াছে বা খরচ করা হইয়াছে, সেই সময়ের আংশিক কালের জন্য ওয়াকফে এই অধ্যাদেশের বিধানাবলী প্রযোজ্য হইয়াছে ।

    (খ) এইরুপ বিবরণীতে নিম্নলিখিত বিষয়াবলীও থাকিবে-

    (এক) তালিকাভূক্তির দরখাস্ত,অথবা সর্বশেষ বাত্‍সরিক বিবৃতি দাখিল করিবার পর কত পরিমাণের, কি ধরণের অথবা ওয়াকফ সম্পত্তির গুণাগুণ সম্পর্কে এবং হস্তান্তর, অর্জন বা লেনদেন সম্পর্কে যেকোনো প্রকার পরিবর্তন ।

    (দুই) ওয়াকফের বহির্গামী দায়-দায়িত্ব যদি থাকে, যথাঃ ভাড়া, অভিকর, কর, বেতন ও ভাতাদি এবং অন্যান্য বিষয় সস্পর্কে; এবং

    (তিন) প্রশাসকের প্রয়োজন হইতে পারে এইরুপ যেকোনো বিবরণ ।

    (গ) কোনো মামলা বা কার্যধারায় আদালত কর্তৃক ওয়াকফ সম্পর্কে তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ করা হইলে আদালত কর্তৃক দাখিলী বিবরণের অতিরিক্ত হিসাব বিবরণী এই ধারার বিধানানুসারে প্রশাসকের নিকট তিনি দাখিল করিবেন ।

    ওয়াকফ সম্পত্তির হিসাব তলব করিবার ক্ষমতা প্রশাসকের শুধু এক বত্‍সরে সীমাবদ্ধ নহে ।

 

ধারা-৫৩। ওয়াকফের হিসাব-নিরীক্ষাঃ

    (১) ৫২ ধারানুসারে প্রশাসকের নিকট দাখিলকৃত হিসাবাদি বাত্‍সরিক কিংবা প্রশাসকের নির্ধারিত বিরতিতে প্রশাসক কর্তৃক নিযুক্ত হিসাব নিরীক্ষক দ্বারা নিরীক্ষা করাইতে হইবে ।

    (২) উক্ত হিসাব-নিরীক্ষক তাহার নিরীক্ষা যথাযথভাবে সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে লিখিত নোটিশের মাধ্যমে তাহার নিকট যে কোনো দলিল দাখিল করিতে অথবা উক্ত হিসাব রক্ষণের জন্য দায়ী যে কোনো ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় তথ্যসহ তাহার নিকট হাজির হইতে নির্দেশ দিতে পারেন ।

    (৩) নিরীক্ষণ সমাপনান্তে হিসাব নিরীক্ষক প্রশাসকের নিকট তাহার রিপোর্ট দাখিল করিবেন ।

    তবে, শর্ত এই যে, প্রয়োজনবোধে হিসাব নিরীক্ষক যে কোনো সময় অন্তবর্তী রিপোর্ট পেশ করিতে পারিবেন ।

    (৪) অপরাপর বিষয়াদির মধ্যে নিরীক্ষকের রিপোর্টে অনিয়মিত, বে-আইনী অথবা ভ্রান্ত ব্যয় অথবা অর্থ আদায় করার অপারগতার দরুন, অথবা অবহেলা বা অসদাচারণের জন্য হারান কোনো সম্পত্তি, অথবা অর্থ এবং অপর যে কোনো বিষয় সম্পর্কে যাহা হিসাব-নিরীক্ষক রিপোর্ট করা প্রয়োজন মনে করেন তাহা থাকিবে । উক্ত রিপোর্টে নিরীক্ষকের মতে যে ব্যক্তি এই ধরণের ব্যয় অপারগতার দরুন দায়ী, সেইরুপ প্রত্যেক ক্ষেত্রে নিরীক্ষক উক্ত ব্যয়ের অর্থ অথবা ক্ষতির পরিমাণ যাহা ঐ ব্যক্তি হইতে উদ্ধার করা যাইবে সেই সম্পর্কে প্রত্যায়ন করিবেন ।

    (৫) ওয়াকফের হিসাব-নিরীক্ষার ব্যয় ও তত্‍সহ নিরীক্ষকের ভ্রমণ ভাতার খরচ ওয়াকফ তহবিল হইতে পরিশোধ করিতে হইবে ।

    এই ধারার এবং ৫৪ ও ৫৫ ধারার উদ্দেশ্যে হিসাব নিরীক্ষক বলিতে প্রশাসক কর্তৃক হিসাব-নিরীক্ষা করার জন্য প্রদত্ত পরিদর্শক এবং যে কোনো ব্যক্তিকে বুঝাইবে ।

 

ধারা-৫৪। প্রত্যায়িত প্রদেয় অর্থ সরকারী পাওনা হিসাব আদায়যোগ্যঃ

    (১) ৫৪ ধারার অধীন প্রদত্ত আদেশ দ্বারা যতক্ষণ না সাটিফিকেট সংশোধন বা বাতিল করেন, ততক্ষণ ৫৪ ধারানুসারে নিরীক্ষক কর্তৃক প্রত্যায়িত প্রত্যেক অংক রিপোর্টে উল্লিখিত যে কোনো ব্যক্তির নিকট পাওনা থাকিবে এবং প্রশাসক কর্তৃক ইস্যুকৃত দাবীনামা জারীর ষাট দিনের মধ্যে সংশোধিত সার্টিফিকেট পাওনা প্রত্যেকটি অংক এইরুপ ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত হইবে ।

    (২) যদি (১) উপধারার বিধান মতে এইরুপ পাওনা প্রদত্ত না হয়, তাহা হইলে সরকারী পাওনা আদায় আইন, ১৯১৩ (১৯১৩ এর ৩ আইন) এর অধীন সরকারী পাওনা হিসাবে আদায়যোগ্য হইবে ।

 

ধারা-৫৬। ওয়াকফ সম্পত্তি হস্তান্তর বাঁধাঃ

    (১) প্রশাসকের পূর্ব অনুমোদন ব্যতীত ওয়াকফ-এর কোনো স্থাবর সম্পত্তি মুতাওয়াল্লী কর্তৃক বিক্রয়, দান, বন্ধক বা বিনিময়, অথবা পাঁচ বত্‍সরের অধিক সময়ের জন্য ইজারার মাধ্যমে হস্তান্তর করা বৈধ হইবে না ।

    তবে শর্ত থাকে যে, প্রশাসকের অনুমোদন এইরুপ কোনো হস্তান্তরকে বৈধ করিবে না যাহা আপাততঃ বলবত্‍ অন্য কোনো আইনের পরিপন্থী বা অন্য প্রকারে বৈধ ।

    (২) প্রশাসকের পূর্ব-অনুমোদন পাওয়া না গেলে আদালত কর্তৃক নিযুক্ত কোনো রিসিভারকে কোনো ওয়াকফ সম্পত্তি হস্তান্তরের জন্য আদালত অনুমতি প্রদান করিবেন না ।

    (৩) (১) উপ-ধারা মোতাবেক প্রয়োজনীয় অনুমোদন পাওনা না গেলে মুতাওয়াল্লীর হস্তান্তর বাতিল বলিয়া ঘোষিত হইবে, যদি প্রশাসক এই উদ্দেশ্যে অনরুপ হস্তান্তর সম্পর্কে জ্ঞাত হইবার চার মাসের মধ্যে অথবা অনুরুপ হস্তান্তরের তারিখ হইতে তিন বত্‍সরের মধ্যে, যেইটি পরে হইবে, সেই সময়ের মধ্যে দেওয়ানী আদালতে আবেদন করেন ।

    (৪) যখন মুতাওয়াল্লী (১) উপ-ধারা লংঘন করিয়া ওয়াকফ সম্পত্তি হস্তান্তর করেন এবং তত্‍পর নিজেই উক্ত সম্পত্তির মালিক হন,তখন মুতাওয়াল্লী প্রশাসকের নির্দেশক্রমে পুনরায় উক্ত সম্পত্তি ওয়াকফ-এ রূপান্তরিত করিবেন ।

    (৫) (১) উপধারার বিধানাবলির পরিপন্থী কোনো হস্তান্তর ৩২ ধারার (২) উপ-ধারার উদ্দেশ্যে অবৈধ কার্য ও বিশ্বাসভঙ্গ বলিয়া গণ্য হইবে ।

 

ধারা-৫৭। হস্তান্তর করিতে অনুমোদন দান করার জন্য প্রশাসকের ক্ষমতাঃ

    ৫৬ ধারায় (১) উপধারা মতে ওয়াকফ সম্পত্তি হস্তান্তর করার জন্য কোনো মুতাওয়াল্লী অথবা তত্ত্বাবধায়ক প্রশাসকের নিকট দরখাস্ত করিতে পারেন এবং প্রশাসক তাহার বিবেচনানুযায়ী অনুসন্ধান করিয়াও নিয়মিত পদ্ধতিতে পক্ষসমূহকে নোটিশ দিয়া তাহারা তাহাদের বক্তব্য রাখিতে ইচ্ছা প্রকাশ করিলে তাহাদিগকে শুনানীর পর তাহার সুবিবেচনা মতে শর্তাদি আরোপ করিয়া তাহার অনুমাদন দান করিতে পারেন ।

    তবে শর্ত এই যে, যেই ক্ষেত্রে ওয়াকফ দলিলে প্রদত্ত কোনো স্পষ্ট ক্ষমতানুসারে এই জাতীয় হস্তান্তর করিতে হইবে, সেই ক্ষেত্রে প্রশাসক তাহার অনুমোদন দিতে অস্বীকার করিবেন না ।

 

ধারা-৫৮। মুতাওয়াল্লী কর্তৃক কোনো ঋণ গ্রহণ, আপোষ õ
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection

bbasujon

  • Administrator
  • VIP Member
  • *****
  • Posts: 1827
  • I want to show my performance at any where
    • View Profile
    • Higher Education
Re: ওয়াকফ সংক্রান্ত আইন
« Reply #4 on: January 24, 2012, 07:33:25 AM »
ধারা-৬১। দন্ডঃ

    (১) যদি মুতাওয়াল্লী-

    (ক) তালিকাভূক্তির জন্য আবেদন করিতে; বা

    (খ) স্পষ্ট ও নির্ভুল হিসাব রাখিতে এবং এই অধ্যাদেশবলে প্রয়োজনীয় বিবরণ ও হিসাবের বিবরণী বা রিটার্ন প্রদান করিতে; অথবা

    (গ) প্রশাসক বা তাহার মনোনীত কোনো ব্যক্তির প্রয়োজনীয় তথ্য বা বিবরণ সরবরাহ করিতে; অথবা

    (ঘ) প্রশাসক বা তাহার মনোনীত কোনো ব্যক্তি আদেশ করিলে ওয়াকফ সম্পত্তির হিসাব বা রেকর্ড অথবা তত্‍সংক্রান্ত দলিল ও দস্তাবেজ পরিদর্শনের অনুমতি দান করিতে অথবা অনুসন্ধান ও তদন্ত অনুষ্ঠানে সহায়তা করিতে; অথবা

    (ঙ) প্রশাসক বা আদালত আদেশ করিলে কোনো ওয়াকফ সম্পত্তির দখল অর্পণ করিতে; অথবা

    (চ) প্রশাসক বা তাহার মনোনীত কোনো ব্যক্তির নির্দেশ পালন করিতে; অথবা

    (ছ) ৭১ ধারার অধীনে প্রদেয় চাঁদা প্রদান করিতে; অথবা

    (জ) ওয়াকফ দলিলের শর্ত অনুসারে ওয়াকফ-এর কোনো স্বত্বভোগীর পাওনা পরিশোধ করিতে, অথবা

    (ঝ) স্বত্বভোগী বা ওয়াকফ দলিলের স্বত্ব অনুসারে ওয়াকফ-এ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তিকে হিসাব এবং ওয়াকফ এর ব্যবস্থা এবং বিষয়াবলি সম্পর্কে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ও নির্ভুল তথ্য পরিবেশন করিতে; অথবা

    (ঞ) ওয়াকফ দলিলের শর্ত অনুসারে কোনো মসজিদ বা অন্যান্য ধর্মীয়, দাতব্য ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার তত্ত্বাবধান, যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও সংরক্ষণের জন্য অর্থ প্রদান করিতে; অথবা

    (ট) কোনো সরকারী পাওনা পরিশোধ করিতে; অথবা

    (ঠ) কমিটির সহিত সহযোগিতা করিতে এবং উহার দায়িত্ব পালনে উহার নির্দেশাবলী পালন করিতে; অথবা

    (ড) ওয়াকফ সম্পত্তির স্বত্ব রক্ষা করিতে এবং উহার সংরক্ষণ ও নিরাপত্তার প্রতি লক্ষ্য রাখিতে; অথবা

    (ঢ) এই অধ্যাদেশবলে বা ইহার অধীন আইনসঙ্গতভাবে তাহার অন্য যে কাজ করিতে হইবে তাহা করিতে ব্যর্থ হন এবং আদালতকে এই মর্মে সন্তুষ্ট করিতে না পারেন যে, তাহার ব্যর্থতার জন্য যুক্তিসঙ্গত কারণ বর্তমান ছিল, তবে তিনি দুই হাজার টাকা জরিমানা দন্ডে দন্ডিত হইবেন অন্যথায় বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হইবে যা ৬ মাস পর্যন্ত হইতে পারে ।

    তবে শর্ত থাকে যে, মুতাওয়াল্লী যখন এই অধ্যাদেশের ৭১ ধারার অধীন প্রদেয় চাঁদা দিতে ব্যর্থতার জন্য অভিযুক্ত হইবেন, তখন জরিমানার পরিমাণ উর্ধ্বে দুই হাজার চাঁদা ব্যর্থতার জন্য অভিযুক্ত হইবেন, তখন জরিমানার পরিমাণ উর্ধ্বে দুই হাজার টাকা শর্ত সাপেক্ষে পাওনা ও অপরিশোধিত চাঁদার পরিমাণের দ্বিগুনের কম হইবে না ।

    (২) মুতাওয়াল্লী যদি (১) উপ-ধারার (খ) বা (গ) দফায় বর্ণিত এইরুপ কোনো বিবরণী, রিটার্ণ বা তথ্য সরবরাহ করেন, যাহা কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মিথ্যা, ভ্রান্তিপূর্ণ, ভুল বা অসত্য বলিয়া তিনি জানেন বা বিশ্বাস করিবার কারণ রহিয়াছে তবে তিনি দুই হাজার টাকা জরিমানায় এবং তাহা অনাদায়ে ছয় মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হইবেন ।

    (৩) (১) ও (২) উপ-ধারার এবং ৬৩ ধারার অধীন আদালত কর্তৃক আরোপিত জরিমানা আদায় করা হইলে তাহা ওয়াকফ তহবিলে প্রদান ও জমা করা হইবে ।

 

ধারা-৬২। কোনো কোনো অবস্থায় মুতাওয়াল্লী কর্তৃক সম্পত্তি ক্রয় করা সরকারী কর্মচারীর পক্ষে অবৈধ কার্য বলিয়া বিবেচনা করিতে হইবে এবং উহা প্রত্যর্পণ করার জন্য তাহাকে নির্দেশ দান করাঃ

    যদি কোনো মুতাওয়াল্লী ইচ্ছাকৃতভাবে এবং অসদুপায়ে কোনো ওয়াকফ  সম্পত্তি খাজনা, অভিকর অথবা করের বকেয়ার দরুন বিক্রয় করিতে অনুমতি দেন এবং অতঃপর উহা তাহার নিজের নামে, অথবা অপরের নামে খরিদ করেন, তবে মুতাওয়াল্লী কর্তৃক এইরূপ ক্রয় করাকে ৩২ ধারার (১) উপধারার মর্মার্থে অবৈধ কার্য এবং বিশ্বাসভঙ্গ বলিয়া গণ্য করা হইবে; এমতাবস্থায়, ঐ সম্পত্তি ওয়াকফে প্রত্যর্পণ করিতে অথবা নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে উহার জন্য পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দান করিতে প্রশাসক নির্দেশ দিবেন ।

 

ধারা-৬৩। বিদায়ী মুতাওয়াল্লীর বিরুদ্ধে শাস্তিসমূহঃ

    যদি কোনো বিদায়ী মুতাওয়াল্লী এই অধ্যাদেশের কোনো বিধানানুযায়ী ওয়াকফ সম্পর্কীয় ব্যবস্থাপনার এবং হিসাবাদি, দলিলাদি, নথিপত্রাদি ও ওয়াকফের নগদ অর্থ বিষয়ক কাগজাদি তাহার উত্তরবর্তী মুতাওয়াল্লীকে হস্তান্তর করিতে অপারগ হন, অথবা অস্বীকার করেন এবং ওয়াকফের জমির উত্‍পন্ন ফসলাদি এবং ঐ সম্পত্তির দখল সমর্পণ না করেন, তবে তাহাকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানায় এবং উহা অনাদায়ে ছয় মাস পর্যন্ত কারাদন্ডে দন্ডিত করিতে হইবে ।

 

ধারা-৬৪। অনধিকার প্রবেশকারী এবং দুষ্কৃতিকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাঃ

    (১) যদি কোনো ওয়াকফ সম্পত্তিতে শরিকদার, অথবা একক স্বত্বভোগী, অথবা উহাতে স্বার্থসংশ্লিষ্ট অপর কোনো ব্যক্তি, অথবা কোনো আগন্তুক কোনো উপদ্রবের সৃষ্টি করে, অথবা শান্তিপূর্ণভাবে ওয়াকফের অথবা কোনো প্রকারে ব্যবস্থাপনায় তত্‍সংলগ্ন কোনো প্রতিষ্ঠানে কোনো প্রতিবন্ধকের সৃষ্টি করে, অথবা মুতাওয়াল্লীকে বা অপর কাহাকেও, বা ঐ সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রশাসক কর্তৃক নিয়োজিত কমিটিতে শান্তিপূর্ণভাবে ওয়াকফের সম্পত্তি দখল রাখিতে বাধা দান করে, অথবা ঐ সম্পত্তিতে অনিধকার প্রবেশ করে, তবে প্রশাসক ডেপুটি কমিশনারের নিকট দরখাস্ত করিবেন ।

    অতঃপর ডেপুটি কমিশনার উক্ত অনধিকার প্রবেশকারীকে উত্‍খাত করিয়া দিবেন, অথবা এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করিবেন যাহাতে বিবেচনা মতে এই ধরণের উপদ্রব অথবা বাধাবিঘ্ন নিবারণ করা যায় ।

    (২) উপধারা (১) অনুসারে ডেপুটি কমিশনার কর্তৃক কোনো ব্যক্তিকে উত্‍খাত করা হইলে, তিনি উক্ত উত্‍খাতের দিন হইতে তিন মাসের মধ্যে ঐ উত্‍খাতের বিরুদ্ধে জেলা জজের নিকট আপিল করিতে পারিবেন এবং এই আপিলে জেলা জজের আদেশ চূড়ান্ত হইবে ।

 

ধারা-৬৫। মুতাওয়াল্লীর পদত্যাগ, অবসর গ্রহণ বা অপসারণঃ

    (১) প্রশাসকের অনুমতি ব্যতিত মুতাওয়াল্লী তাহার চাকুরী হইতে পদত্যাগ বা অবসর গ্রহণ করিবেন না ।

    (২) যদি মুতাওয়াল্লী মুতাওয়াল্লীর পদ হইতে অবসর গ্রহণের প্রস্তাব করেন বা পদত্যাগ করেন বা অব্যাহতির আবেদন করেন, তবে তাহাকে অবসর গ্রহণের অনুমতি দান করা হইবে না বা তাহার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হইবে না বা তাহাকে অব্যাহতি দান করা হইবে না, যদি তিনি তাঁহার অবসর গ্রহণ, পদত্যাগ বা অব্যাহতির তারিখে হিসাবের বিবরণী দাখিল না করেন এবং তাহা নিরীক্ষিত না হয় এবং যদি তিনি উক্ত তারিখ পর্যন্ত ৭১ ধারার অধীন প্রদেয় চাঁদা পরিশোধ না করেন ।

 

ধারা-৬৬। প্রশাসকের বিনা অনুমতিতে মুতাওয়াল্লী তাহার দায়িত্ব অন্যের নিকট অর্পণ করিতে পারেন নাঃ

    প্রশাসকের অনুমতি ব্যতিত মুতাওয়াল্লী কাহাকেও তাঁহার পদ বা তাঁহার কোনো দায়িত্ব অর্পণ করিবেন না ।

    তবে শর্ত থাকে যে, স্বাধীনভাবে কোনো কার্য সম্পাদনের জন্য নহে বরং কেবলমাত্র আদেশ অনুযায়ী কাজ করার জন্য কোনো এটর্নী বা প্রক্সি নিয়োগ এই ধারার তাত্‍পর্যাধীনে অর্পণ হইবে না ।

    ধারা-৬৮। বিবেচনামূলক ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণঃ

    যেখানে মুতাওয়াল্লীর উপর অর্পিত স্ববিবেচনামূলক ক্ষমতা যুক্তিসঙ্গতভাবে ও সরল বিশ্বাসে প্রয়োগ করা না হয় সেখানে অনুরুপ ক্ষমতা প্রশাসক প্রত্যাহার করিতে পারিবেন ।

 

ধারা-৬৯। মুতাওয়াল্লীর পারিশ্রমিকঃ

    যেখানে ওয়াকফ দলিলে মুতাওয়াল্লী পদের জন্য কোনো পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা নাই,অথবা যেখানে ব্যবস্থিত অর্থের পরিমাণ অপর্যাপ্ত, সেখানে প্রশাসক মুতাওয়াল্লীর আবেদনক্রমে ওয়াকফ-এর নীট আয়ের এক দশমাংশের অনধিক অর্থ তাহার পারিশ্রমিক রূপে নির্ধারণ করিতে পারিবেন ।

 

ধারা-৭০। প্রশাসক কর্তৃক ইমামের বেতন নির্ধারণ নিয়োগ বা অপসারণঃ

    (১) প্রশাসক সাধারণ বা বিশেষ আদেশের দ্বারা ওয়াকফ-এর অধীনস্থ মসজিদের ইমামের নিম্নতম যোগ্যতা ও পারিশ্রমিক নির্ধারণ করিতে পারিবেন; এবং প্রত্যেক মুতাওয়াল্লী বা কোনো ব্যক্তি বা ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনার জন্য প্রশাসক কর্তৃক নিযুক্ত ব্যবস্থাপনা কমিটি এই উদ্দেশ্যে তাহার নির্দেশাবলী পালন করিবেন ।

    (২) প্রশাসক যদি প্রয়োজনীয় মনে করেন তাকে তিনি নিজে ওয়াকফ-এর মসজিদের বর্তমান ইমাম অনুপযুক্ত বা যোগ্যতাহীন বলিয়া বিবেচিত হইলে তাহাকে অপসারণ করিয়া নতুন নিয়োগ করিতে পারিবেন ।

 

ধারা-৭১। প্রশাসকের অফিসে প্রদেয় চাঁদাঃ

    (১) ওয়াকফের মুতাওয়াল্লী ওয়াকফের প্রকৃত আয়ের শতকরা পাঁচ টাকা হারে বাত্‍সরিকভাবে প্রশাসককে অফিসে চাঁদা প্রদান করেন ।

    (২) কোনো বিশেষ ওয়াকফের ক্ষেত্রে এবং উহার স্বার্থে প্রশাসক এইরুপ চাঁদার হার এমন সময়ের জন্য কমাইতে বা মওকুফ করিতে পারেন যাহা তিনি উপযুক্ত বলিয়া মনে করেন যদি কোনো কারণে সংশ্লিষ্ট ওয়াকফের আয় এতই কমে যায় যাহার জন্য এইরুপ হ্রাসকরণ বা মওকুফ করণ সমর্থন করা যায় ।

    (৩) ওয়াকফ দলিলের বিধানাবলীর শর্তে (১) উপধারার অধীন মুতাওয়াল্লী কর্তৃক প্রদেয় চাঁদা ওয়াকফ হইতে আর্থিক ও সুবিধাদি পাইবার অধিকারী ব্যক্তিগণের নিকট হইতে আদায় করিতে পারিবেন । কিন্তু এইরুপ যে কোনো ব্যক্তির চাঁদার অধিক হইতে পারিবে না, এই আনুপাতিক হার এইরুপ ব্যক্তির গ্রহণযোগ্য সুবিধাদি হিসাবে ওয়াকফের আয় হইতে প্রদান করিতে হইবে ।

    তবে শর্ত এই যে, যদি ওয়াকফের অতিরিক্ত আয় থাকে অথবা চাঁদা ছাড়া এই অধ্যাদেশানুসারে পাওনা হিসাবে প্রদেয় অর্থ অথবা ওয়াকফ দলিল অনুসারে প্রদেয় অর্থের অতিরিক্ত আয় থাকে তাহা হইলে উক্ত আয় হইতে প্রদেয় চাঁদা প্রদান করিতে হইবে ।

    (৪) (১) উপধারার অধীন ওয়াকফ সম্পর্কে প্রদেয় চাঁদা কিংবা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অথবা ওয়াকফ সম্পত্তির অথবা উহার আয়ের উপর সংবিধিবদ্ধ প্রধান ব্যয়ের শর্ত ওয়াকফের আয়ের উপর প্রদান প্রধান ব্যয় হইতে এবং উহা সরকারী পাওনা আদায় আইন ১৯১৩ (১৯১৩ সনের ৩, (আইন) এর বিধান মতে আদায়যোগ্য হইবে ।

    (৫) যদি কোনো মুতাওয়াল্লী বকেয়া ওয়াকফের আয় আদায় করেন এবং চাদাঁ প্রদান না করেন অথবা প্রদান  করিতে অস্বীকার করেন তাহা হইলে তিনি উক্ত চাঁদার জন্য ব্যক্তিগতভাবে দায়ী হইবেন যাহা উপরোল্লিখিত কায়দায় তাহার নিকট হইতে অযথা সম্পত্তি হইতে আদায় করা যাইবে ।

    (৬) যে ক্ষেত্রে কোনো মুতাওয়াল্লী বকেয়া চাঁদা প্রদান না করিয়া মারা যান কিংবা অবসর গ্রহণ করেন তাহা হইলে পরবর্তী উত্তরাধিকার মুতাওয়াল্লী ওয়াকফের আয় হইতে এইরুপ বকেয়া প্রদানের জন্য দায়ী থাকিবেন ।

    (৭) রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ভূসম্পত্তি নাই অথবা সম্পত্তি থাকিলেও বত্‍সরে ৩০০ টাকার কম আয় হয় এইরুপ সকল মসজিদ (১) উপধারার অধীন যে কোনো  চাঁদার আদায় হইতে অব্যাহতি পাইবে ।

 

ধারা-৭২। প্রশাসক অর্থ ধার করিতে পারিবেনঃ

    (১) সরকারের পূর্বানুমতি লইয়া এই অধ্যাদেশের বিধানসমূহ কার্যকর করিবার উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হারে ও শর্তাবলী সাপেক্ষে প্রশাসক ধার গ্রহণ করিতে পারিবেন এবং উক্ত ঋণের শর্তাবলী অনুযায়ী প্রশাসক এবং এতদ সম্পর্কিত সুদও খরচা সহ ধার লওয়া টাকা ফেরত দিতে পারিবেন ।

    (২) ওয়াকফ তহবিলের জামানত প্রশাসক অর্থ ধার লইতে পারিবেন না ।

 

ধারা-৭৩। ওয়াকফ তহবিলঃ

    (১) প্রশাসক কর্তৃক তাহার নিয়ন্ত্রণাধীন ও ব্যবস্থাধীন যাবতীয় সম্পত্তি হইতে প্রাপ্ত অর্থ এবং এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্যে এই অধ্যাদেশের অধীন যাবতীয় অর্থ দ্বারা ওয়াকফ তহবিল নামে একটি তহবিল গঠিত হইবে ।

    (২) ওয়াকফ তহবিল অর্থ প্রদান, উক্ত তহবিলে গৃহিত অর্থ প্রশাসক কর্তৃক বিনিয়োগ এবং এইরুপ অর্থের হেফাজত ও বন্টন নিয়ন্ত্রণ করিয়া সরকার বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবেন ।

    (৩) (২) উপধারার বিধানাবলীর শর্তে ওয়াফক তহবিল প্রশাসকের নিয়ন্ত্রয়াধীন থাকিবে ।

 

ধারা-৭৪। ওয়াকফ তহবিলে প্রয়োগঃ

    (১) ওয়াকফ তহবিল প্রয়োগ করিতে হইবে-

    (ক) ৬ ধারার অধীন ওয়াকফ সম্পত্তি জরিপের খরচ প্রদানের জন্য;

    (খ) ৭২ ধারার অধীন গৃহিত ঋণ ফেরত দানের জন্য এবং উহার উপর সুদ প্রদানের জন্য;

    (গ) ওয়াকফ তহবিল নিরীক্ষার খরচ প্রদানের জন্য;

    (ঘ) প্রশাসক, উপপ্রশাসক এবং সহকারী প্রশাসকের বেতন ও ভাতাদি প্রদানের জন্য;

    (ঙ) প্রশাসক, উপপ্রশাসক, সহকারী প্রশাসক, প্রশাসকের অফিসের জন্য অফিসার ও কর্মীবৃন্দের এবং কমিটির সদস্যদিগকে ভ্রমণ ভাতা প্রদান করিবার জন্য;

    (চ) প্রশাসক কর্তৃক নিযুক্ত সংস্থাপনের খরচ প্রদানের জন্য;

    (ছ) প্রশাসকের উপর অর্পিত দায়িত্ব সম্পাদানের জন্য এবং

    (জ) এই অধ্যাদেশের অধীন অর্পিত দায়িত্ব সম্পাদনের এবং অর্পিত ক্ষমতা প্রয়োগের নিমিত্তে প্রশাসক কর্তৃক প্রদত্ত যাবতীয় খরচ প্রদানের জন্য; এবং

   (ঝ) মসজিদ পুনঃনির্মাণ এবং মেরামতের খরচ প্রদানের জন্য ।

    (২) (১) উপধারায় উল্লেখিত খরচ মিটাইয়া যদি কোনো উদ্ভুত থাকে তাহা হইলে ওয়াকফের উদ্দেশ্যের সহিত সামঞ্জ্য রাখিয়া প্রশাসক ওয়াকফ সম্পত্তির উন্নয়ন সংরক্ষণ এবং রক্ষার জন্য এবং অন্য ধর্মীয় ও দাতব্য কাজের জন্য এইরূপ উদ্ধৃত্তের যে কোনো অংশ ব্যবহার করিতে পারিবেন ।

    (৩) (ক) প্রশাসক কর্তৃক ৮৫ ধারার বিধাননুসারে গৃহিত সকল অর্থ প্রশাসক গৃহসম্পত্তির, ভূমি এবং অন্য সম্পত্তি খরিদ করিবার জন্য বিনিয়োগ করিতে পারিবেন ।

    (খ) যদি এইরুপ খরিদ তাত্‍ক্ষিণিকভাবে কার্যকর করা না হয় তাহা হইলে এই ধরণের অর্থ পূর্বোক্ত সম্পত্তি খরিদ না করা পর্যন্ত প্রশাসক যেভাবে উপযুক্ত মনে করেন সেইভাবে সরকারী লগ্নীপত্রে বা অন্য কোনো অনুমোদিত লগ্নীপত্রে বিনিয়োগ করিতে পারিবেন এবং এই ধরনের বিনিয়োগের উপর কোনো সুদ বা অন্য লাভ ওয়াকফে বর্ণিত উদ্দেশ্য পূরণ করিবার লক্ষ্যে ওয়াকফ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে প্রদান করিবার জন্য প্রশাসক নির্দেশ দান করিবেন ।
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection

bbasujon

  • Administrator
  • VIP Member
  • *****
  • Posts: 1827
  • I want to show my performance at any where
    • View Profile
    • Higher Education
Re: ওয়াকফ সংক্রান্ত আইন
« Reply #5 on: January 24, 2012, 07:34:07 AM »
ধারা-৭৫। ওয়াকফ তহবিলের হিসাবঃ

    প্রশাসক বিধির দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ওয়াকফ তহবিলের প্রাপ্তি ও প্রদানের হিসাব রাখিবেন এবং নিরীক্ষণের দ্বারা পরীক্ষার জন্য সময়ে দাখিল করিবেন ।

 

ধারা-৭৬।ওয়াকফ তহবিলের হিসাব নিরীক্ষাঃ

    (১) সরকার কর্তৃক নিযুক্ত নিরীক্ষক দ্বারা প্রতি বত্‍সর ওয়াকফ বহুদিনের হিসাব নিরীক্ষাও পরীক্ষা করিতে হইবে ।

    (২) নিরীক্ষক লিখিত নোটিশ দ্বারা তাহার সম্মুখে যে কোনো দলিল হাজির করিতে অথবা হিসাব প্রস্তুতের জন্য দায়ী কোনো ব্যক্তিকে তাহার সম্মুখে হাজির হইতে নির্দেশ দিতে পারিবেন যাহাতে তিনি নিরীক্ষা কার্য সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য তাহার প্রয়োজন মত তথ্যাদি সংগ্রহ করিতে সমর্থ হন ।

    (৩) নিরীক্ষা সমাপ্ত করিয়া নিরীক্ষক সরকারের নিকট রিপোর্ট দাখিল করিবেনঃ

    তবে শর্ত এই যে, নিরীক্ষক উপযুক্ত মনে করিলে অন্তর্বতীকালিন রিপোর্ট দাখিল করিতে পারিবেন ।

    (৪) অন্যান্য বিষয়াদির মধ্যে নিরীক্ষকের প্রতিবেদনে সকল অনিয়মতান্ত্রিক অবৈধ অথবা ভ্রান্ত ব্যয় অথবা অর্থ বা অন্য সম্পত্তি আদায়ের ব্যর্থতা অথবা লোকসান অথবা অর্থের অথবা অবহেলার বা খারাপ পরিচালনার দ্বারা অন্য কোনো সম্পত্তি অপচয় এবং অন্য কোনো বিষয় যাহা নিরীক্ষাক রিপোর্ট করা প্রয়োজন বলিয়া মনে করেন, তাহার উল্লেখ থাকিবে । উক্ত রিপোর্টে আরও থাকিবে যে, নিরীক্ষকের মতানুযায়ী কোনো ব্যক্তি এই ধরনের ব্যয় অথবা ব্যর্থতার জন্য দায়ী এবং এইরুপ প্রত্যেক ক্ষেত্রে এইরুপ ব্যক্তি কর্তৃক কি পরিমাণ খরচ ও লোকসান প্রদেয় হইবে ।

 

ধারা-৭৭। নিরীক্ষকের রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকার আদেশ দিবেনঃ

    সরকার নিরীক্ষকের রিপোর্ট পরীক্ষার করিবেন এবং উহাতে থাকা কোনো বিষয় সম্পর্কে যেকোনো ব্যক্তির কৈফিয়ত তলব করিতে পারিবেন এবং ইহা যেরুপ উপযুক্ত মনে করিয়া সেইরুপ আদেশ দিতে পারিবেন ।

 

ধারা-৭৮। সত্যায়িত পাওনা অর্থ সরকারী পাওনা হিসাবে আদায়যোগ্যঃ

    (১) ৭৬ ধারানুযায়ী কোনো ব্যক্তির নিকট হইতে পাওনা অর্থ সম্পর্কে নিরীক্ষকের রিপোর্টে উল্লেখ থাকিলে যদি না উক্ত সাটিফিকেট ৭৭ ধারার অধীন সরকার কর্তৃক সংশোধিত বা বাতিলকৃত হয় তাহা হইলে সংশোধিত সাটিফিকেট অনুযায়ী প্রদেয় প্রত্যেক অঙ্কের অর্থ সরকার কর্তৃক দাবীর নোটিশ পাইবার ষাট দিনের মধ্যে পরিশোধ করিতে হইবে ।

    (২) যদি (১) উপধারার বিধানুসারে এইরুপ পাওনা পরিশোধ করা না হয় তাহা সরকারী পাওনা হিসাবে আদায়যোগ্য হইবে ।

নবম অধ্যায়

বিচারিক কার্যাবলী

 

ধারা-৭৯। কতেক ওয়াকফ মামলায় ডিক্রিজাত অর্থ জমাদানঃ

    কোনো ওয়াকফের অধীনে, অথবা পক্ষে, খাজনার অথবা অপর কোনো ত্রাণের ডিক্রি প্রদানের জন্য আদালতের আরজি করা হইলে বা এইরুপ ডিক্রি আদালত কর্তৃক জারি করা হইলে ৪৭ ধারানুসারে তালিকাভূক্তির জন্য যদি না দরখাস্ত করা হইয়া থাকে, তবে কোনো ডিক্রিজাত অর্থ থাকিলে উহা সেই আদালত কর্তৃক ডিক্রি জারি করা হইয়াছে ঐ আদালতে সেই সমস্ত জমা রাখিতে হইবে যেই পর্যন্ত না উক্ত ওয়াকফ কর্তৃক ৪৭ ধারামতে তালিকাভূক্তির জন্য দরখাস্ত করা হয়; অথবা ৫ ধারানুসারে উক্ত ওয়াকফকে উহা হইতে অব্যাহতি দেওয়া হয় ।

   

ধারা-৮০। প্রশাসকের অনুমোদন ব্যতীত মামলা ইত্যাদি আপোষ করার প্রতিবন্ধকতাঃ

    কোনো আদালতে মুতাওয়াল্লী কর্তৃক বা তাহার বিরুদ্ধে দায়ের করা কোনো মামলা, কার্যাবলী, অথবা আপিল প্রশাসকের পূর্ব অনুমোদন এবং বিচার পরিচালনাকারী আদালতের মঞ্জুরী ব্যতীত আপোষ করা যাইবে না ।

   

ধারা-৮১। মামলা হইতে তাহার নোটিশ প্রশাসককে দিতে হবেঃ

    (১) মুতাওয়াল্লী কর্তৃক বা তাঁহার পক্ষে রাজস্ব আদায়ের জন্য মামলা বা মোকদ্দমা ব্যতীত কোনো ওয়াকফ সম্পত্তি সংক্রান্ত অথবা মুতাওয়াল্লীরূপে কোনো মুতাওয়াল্লী প্রত্যেক মামলা বা মোকদদ্দমা, যে আদালতে অথবা যে ডেপুটি কমিশনার বা অন্য কর্তৃপক্ষের সম্মুখে অনুরুপ মামলা বা মোকদ্দমা রুজু করা হইয়াছে সেই আদালত অথবা ডেপুটি কমিশনার বা অন্য কর্তৃপক্ষ প্রশাসককে অনরুপ মামলা বা মোকদ্দমা রুজুকারী পক্ষের খরচে ক্ষেত্রমত, আরজি বা আবেদনপত্রের অনুলিপিসহ নোটিশ ইস্যু করিবেন ।

    (২) ১৯১৩ সালের সরকারী পাওনা আদায় আইনের অধীন সরকারী পাওনা ব্যতীত অন্য কোনো পাওনা আদায়ের উদ্দেশ্যে ডিক্রি জারী বা আদেশ কার্যকর করিতে কোনো ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রয়ের জন্য বিজ্ঞপ্তি দানের পূর্বে যে আদালত বা সংশ্লিষ্ট অন্য কর্তৃপক্ষের ডিক্রি বা আদেশের অধীন বিক্রয়ের নোটিশ দেওয়া হইবে সেই আদালত বা কর্তৃপক্ষ প্রশাসককে নোটিশ প্রদান করিবেন ।

    (৩) (১) উপ-ধারার অধীন নোটিশ দেওয়া না হইলে বিক্রয়ের মামলায় সম্পত্তির বিবরণ ওয়াকফ সম্পত্তিরুপে বা অন্য প্রকারে যাহাই দেওয়া হোক না কেন, উক্ত বিক্রয় বাতিল বলিয়া ঘোষিত হইবে যদি প্রশাসক বিক্রয় সম্পর্কে জ্ঞাত হইবার বার মাসের মধ্যে যে আদালত বা অন্য কর্তৃপক্ষের আদেশের অধীন বিক্রয় হইয়াছে তাহার নিকট এই উদ্দেশ্যে আবেদন করেন।

   

ধারা-৮২। প্রশাসকের দরখাস্তে ওয়াকফ সম্পর্কিত মোকদ্দমা বা কার্যধারায় তাহাকে পক্ষ করা যাইবেঃ

    কোনো ওয়াকফ বা যেকোনো ওয়াকফ সম্পর্কিত মোকদ্দমা বা কার্যধারায় উহা এই অধ্যাদেশ শুরু হইবার পূর্ব্যে বা পরে দায়েরকৃত বা উপস্থাপিত হউক না কেন প্রশাসক উহাতে হস্তক্ষেপ করিতে পারিবেন এবং তিনি দরখাস্ত করিলে তাহাকে পক্ষভূক্ত করা যাইবে এবং তিনি ওয়াকফের পক্ষে বা স্বার্থে এইরুপ মোকদ্দমা বা কার্যধারা পরিচালনা করিতে বা উহাতে আত্মপক্ষ সমর্থন করিতে অধিকারী হইবেন ।

   

ধারা-৮৩। প্রশাসক ওয়াকফ সম্পর্কে মোকদ্দমা বা কার্যধারা দায়ের করিতে পারিবেনঃ

    যদি কোনো মুতাওয়াল্লী না থাকেন অথবা মুতাওয়াল্লী এই ব্যাপারে যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে কাজ করিতে অস্বীকার করেন বা অবহেলা করেন তাহা হইলে প্রশাসক ওয়াকফ আগন্তুক ব্যক্তি বা অন্য ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাহার নিজের নামে আদালতে মোকদ্দমা বা কার্যধারা দায়ের করিতে পারিবেন ।

    (ক)    কোনো ওয়াকফ সম্পত্তিতে অধিকার, স্বত্ব এবং স্বার্থ প্রতিষ্ঠার জন্য; অথবা

    (খ)    কোনো ওয়াকফ সম্পত্তির দখল দৃঢ় করিবার করিবার জন্য; অথবা

    (গ)    অন্যায়ভাবে দখলকৃত, হস্তান্তিরিত বা ইজারাকৃত যে কোনো ওয়াকফ সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য; অথবা

    (ঘ)    ওয়াকফ সম্পত্তিতে অন্যায়ভাবে সৃষ্ট কোন দায়-দায়িত্ব মুক্ত করিবার জন্য; অথবা

    (ঙ)    ওয়াকফের কোনো অর্থ উদ্ধার করিবার জন্য; অথবা

    (চ)    তাহার বিবেচনা মতে ওয়াকফের স্বার্থ অন্য যেকোনো প্রতিকারের জন্য ।

   

ধারা-৮৪।স্বত্বভোগী কর্তৃক বিশ্বাসভঙ্গঃ যেই ক্ষেত্রে কতকগুলি স্বত্বভোগীদের মধ্যে একজন স্বত্বভোগী-

    (ক) মুতাওয়াল্লীর সহিত একত্রিত হইয়া বিশ্বাসভঙ্গ করে, অথবা

    (খ) অপরাপর স্বত্বভোগীদের অমতে জ্ঞাতসারে উহা হইতে কোনো সুবিধা লাভ করে, অথবা

    (গ) এইরূপ বিশ্বাসভঙ্গ করা সম্বন্ধে বা করার ইচ্ছা জানিতে পারে এবং হয়ত উহা প্রকৃতপক্ষে গোপন করে, নতুবা ন্যায়সঙ্গত সময়ের মধ্যে অপরাপর স্বত্বভোগীদের স্বার্থ রক্ষার্থে কোনো পদপক্ষেপ না নেয়, অথবা

    (ঘ) মুতাওয়াল্লীকে প্রতারণা করিয়া তাহাকে বিশ্বাসভঙ্গের জন্য অপরাপর স্বত্বভোগীদিগকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকিবে ।

    এমতাবস্থায়, উক্ত স্বত্বভোগী এইরূপ বিশ্বাসভঙ্গের জন্য অপরাপর স্বত্বভোগীদিগকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকিবে ।

   

ধারা-৮৫। ওয়াকফ সম্পত্তি অর্জন করা বাবদ ক্ষতিপূরণ প্রশাসককে প্রদান করিতে হইবেঃ

    ১৮৯৪ সনের ভূমি হুকুম দখল আইন (১৮৯৪ সনের ১নং আইন) অনুসারে অথবা বর্তমানে বলবত্‍ অপর কোনো আইনানুযায়ী কোনো ওয়াকফ সম্পত্তি অর্জন করা হইলে এইরূপ সম্পত্তি বাবদ প্রদেয় ক্ষতিপূরণ প্রশাসককে প্রদান করিতে হইবে এবং উহা ৭৪ ধারার (৩) উপধারার উদ্দেশ্যে বিনিয়োগ না করা পর্যন্ত ওয়াকফ তহবিলে জমা করিতে হইবে ।

   

ধারা-৮৬। মামলা অথবা কার্যাবলী বাবদ খরচাদিঃ

    ওয়াকফ সম্পত্তি অথবা যেই সকল সম্পত্তির মামলায়, অথবা কার্যাবলীতে প্রশাসককে পক্ষ করা হইয়াছে এবং আদালত কর্তৃক প্রশাসকের বিরুদ্ধে ডিক্রিকৃত খরচাইদ যাহা প্রশাসক বহন করেন, তাহা ওয়াকফ হইতে প্রদেয় হইবে ।

দশম অধ্যায়

[ধারা ৮৭ হইতে ধারা ৯৪ পর্যন্ত ১৯৬৬ সনের ১৩নং অধ্যাদেশ দ্বারা বাতিল করা হইয়াছে।]

 

একাদশ অধ্যায়

বিবিধ

 

ধারা-৯৫। ১৯৫১ সনের ২৮নং আইনের অধীন কতিপয় কার্য প্রশাসক কর্তৃক সম্পাদিত হইবেঃ

    সরকারী দখল ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০ (১৯৫১ সনের ২৮ নং আইন) এর ৫৮ ধারার ও ৫৯ ধারায় যাহাই বর্ণিত থাকুক না কেন ঐ আইনের ৫৮ ধারার (৪) উপধারা এবং ৫৯ ধারার (৪) উপধারার অধীন ওয়াকফ আল-আওলাদ সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ সম্পর্কে ওয়াকফ কমিশনারের কার্যাবলী এবং ঐ আইনের ৫৮ ধারার (৩) উপধারা এবং ৫৯ ধারা (১) (২) ও (৩) উপধারার অধীন ডেপুটি কমিশনারের কার্যাবলী এই অধ্যাদেশ বলবত্‍ হইবার তারিখ হইতে প্রশাসক কর্তৃক সম্পাদিত হইবে এবং ঐ আইনের ৫৯  ধারার (৩) উপধারায় বর্ণিত খরচা ওয়াকফ তহবিল হইতে মিটাইতে হইবে ।

   

ধারা-৯৬। সরকারী দাবী হিসাবে পাওনা অর্থ আদায় করিবার পদ্ধতিঃ

    (১) এই অধ্যাদেশের অধীন মুতাওয়াল্লী কর্তৃক ওয়াকফ তহবিল হইতে প্রদেয় কোনো অর্থ এবং উহার উপর আরোপযোগ্য কোনো খেসারত ও উহার জন্য কোনো খরচা বহন করা হইয়া থাকিলে তাহা সরকারী পাওনা হিসাবে আদায়যোগ্য হইবে ।

    (২) সরকারী পাওনা আদায় আইন, ১৯১৩ (১৯১৩ সনের ৩নং আইন) অনুসারে নির্ধারিত ফরমে প্রশাসক তাহার স্বাক্ষরে ডেপুটি কমিশনারের নিকট অধিযাচনপত্র(Requistion)পাঠাইবেন যাহাতে সরকারী দাবী হিসাবে আদায়যোগ্য অংকের উল্লেখ থাকিবে এবং ডেপুটি কমিশনার এইরুপ অধিযাচন(Requistion) পত্র পাইবার পর সরকারী পাওনা আদায় আইন, ১৯১৩ (১৯১৩ সনের ৩নং আইন) অনুসারে অর্থ আদায়ের জন্য অগ্রসর হইবেন ।

   

ধারা-৯৭। প্রশাসক এবং প্রত্যক্ষ অফিসার ও কর্মী ওয়াকফ সম্পর্কে গোপনীয়তা রক্ষা করিবেনঃ

    এই অধ্যাদেশের বিধানাবলীর শর্তে প্রশাসক এবং প্রত্যেক অফিসার ও তাহার অফিসের প্রত্যেক কর্মী তাহার পদের যোগ্যতায় ওয়াকফ সম্পর্কিত বিবরণ বা অন্য তথ্য জানিয়া থাকিলে উহার গোপনীয়তা রক্ষা করিবেন ।

 

ধারা-৯৮। প্রশাসক, নিরীক্ষক ইত্যাদিকে সরকারী কর্মচারী মনে করিতে হইবেঃ

    প্রশাসক, উপ-প্রশাসক, সহকারী প্রশাসক, পরিদর্শক নিরীক্ষক এবং এই অধ্যাদেশের দ্বারা বা কোনো কাজ করিবার জন্য প্রশাসক কর্তৃক নিযুক্ত বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য যে কোনো ব্যক্তিকে দন্ডবিধি ১৮৬০ (১৮৬০ সনের ৪৫নং আইন)-এর ২১ ধারার অর্থানুসারে সরকারী কর্মচারী মনে করিতে হইবে ।

   

ধারা-৯৯। নোটিশ অথবা রিকুইজিশন জারীঃ

    এই অধ্যাদেশ মোতাবেক, নোটিশ কিংবা রিকুইজিশন, নোটিশ বা রিকুইজিশনে বর্ণিত ব্যক্তির উপর হয় ডাকযোগে কিংবা (১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধি অনযায়ী আদালত কর্তৃক সমন জারির ন্যায় (১৯০৮ সালের ৫নং আইন) অথবা বিধিতে বর্ণিত উপায়ে জারি করা যাইবে ।

   

ধারা-১০০। প্রশাসকের সমীপে ব্যক্তিগত কিংবা প্রতিনিধির মাধ্যমে হাজিরাঃ

    কোনো মুতাওয়াল্লী অথবা প্রশাসকের সমীপে হাজির হইবার যোগ্য কোনো ব্যক্তি বা অত্র অধ্যাদেশ সংক্রান্ত কোনো কার্যক্রম সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো অধঃস্তন কর্মকর্তা প্রশাসক কিংবা ক্ষেত্র বিশেষে তদানুরুপ কর্মকর্তার অনুমতি দিয়া ব্যক্তিগতভাবে নতুবা তদকর্তৃক লিখিত কর্তৃত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তির মাধ্যমে হাজির হইতে পারেন ।

   

ধারা-১০১। অপরাধের বিচারঃ

    প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের নিম্নপদের নহে, এমন যে কোনো আদালত অত্র অধ্যাদেশে বর্ণিত অপরাধের বিচার করিতে পারেন না ।

   

ধারা-১০২। মোকদ্দমার ক্ষেত্রে বাধাঃ

    অত্র অধ্যাদেশে প্রকাশ্যভাবে বর্ণিত ক্ষেত্র ব্যতীত প্রশাসকের কোনো সিদ্ধান্ত কিংবা আদেশ সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো মোকদ্দমায় বা আদালতের জন্য কোনো কার্যক্রমের ক্ষেত্রে কোনো প্রশ্ন করা যাইবে না।

   

ধারা-১০৩। এই অধ্যাদেশের সহিত অসংগতিপূর্ণ আদেশ, ইত্যাদির ফলাফলঃ

    এই অধ্যাদেশের কোথাও প্রকাশ্যভাবে বর্ণনা ব্যতীত এই অধ্যাদেশের প্রতিটি আদেশ এবং গৃহীত কার্যক্রম কোনো প্রমাণপত্র, কোনো আদালতের ডিক্রি বা আদেশ, দলিল বা অন্য কোনো ইন্সট্রুমেন্টের সহিত অসঙ্গিপূর্ণ হইলেও বহাল থাকিবে ।

দ্বাদশ অধ্যায়

 

বিধি ও উপ-বিধি

ধারা-১০৪। বিধি প্রণয়নের ক্ষেত্রে সরকারের ক্ষমতাঃ

    (১) অত্র অধ্যাদেশের উদ্দেশ্যে সম্পাদনকল্পে সরকার বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবেন ।

    (২) বিশেষভাবে এবং সাধারণ পূর্বে বর্ণিত ক্ষমতার পরিপন্থী নহে এমন বিধি নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে বিধানের ব্যবস্থা করিতে পারিবেন । যেমন-

    (ক)    ধারা (৪) অনুযায়ী ওয়াকফ হইতে অব্যাহতি;

    (খ)    এমন বিষয় যাহা দ্বারা ওয়াকফের প্রকৃত আয় নিরুপণ সম্ভব;

    (গ)    বিভাগীয় কমিশনার, ডেপুটি কমিশনার এবং অন্য কোনো ব্যক্তিকে প্রশাসক কর্তৃক ক্ষমতা প্রদান;

    (ঘ)    ওয়াকফ পরিচাললনার পরিকল্পনা প্রণয়ন;

    (ঙ)    প্রশাসক কর্তৃক পেশযোগ্য বাজেট, প্রতিবেদন, হিসাব-নিকাশ, রিটার্ন বা অন্য সম্পর্কিত;

    (চ)    ওয়াকফ তহবিল অডিট করণার্থে অডিটর নিয়োগ এবং তদীয় ভাতা সম্পর্কিত;

    (ছ)    ওয়াকফ তহবিলের হিসাবরক্ষণ, অডিট ও অডিট রিপোর্ট প্রকাশ প্রণালী এবং অডিট রিপোর্টের ফরম ও বিষয়বস্তুসমূহ;

    (জ)    ওয়াকফ তহবিলে অর্থ প্রদান এবং উক্ত অর্থ বিনিয়োগ সংরক্ষণ এবং বিতরণ;

    (ঝ)    প্রশাসকের কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ এবং ধারা ২৭ ও ২৮-এ বর্ণিত কমিটি সংক্রান্ত;

    (ঞ)    ব্যবস্থাপনা প্রকল্প তৈরি এবং শিরনী, দরগা এবং প্রশাসক কর্তৃক ধারা ৩৪ মোতাবকে অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আয় বন্টন; এবং

    (ট)    ধারা ৯৯ মোতাবেক নোটিশ এবং রিকুইজেশন জারী ।

   

ধারা-১০৫। উপবিধি প্রণয়নে প্রশা
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection