অমনোযোগী ও ডানপিটে শিশু

Started by bbasujon, January 11, 2012, 06:14:36 PM

Previous topic - Next topic

bbasujon

সংক্ষিপ্ত নাম এডিএইচডি। অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাকটিভিটি ডিসঅর্ডার। স্কুল বয়সের ৮-১০ শতাংশ শিশুরা এতে ভোগে। তাই শিশুদের পরিচিত আচরণজনিত সমস্যা হিসেবে এটা স্বীকৃত। মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের মধ্যে এর প্রকোপ তিন গুণ বেশি। এসব শিশু কোথাও স্থির হয়ে বসে থাকতে পারে না। মনোযোগ দিয়ে কিছু করে না। সুসংবাদ এই, যথাযথ চিকিৎসায় এডিএইচডির বাচ্চা ভালোভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে ও উপসর্গাদির লাঘব হয়।

লক্ষণ
১. অমনোযোগী টাইপের
 পুরো পাঠদানে মনোযোগ থাকছে না, স্কুলের বা অন্যান্য কাজে না তোয়াক্কা ভাব।
 একই অবস্থা খেলার মাঠে।
 শোনার আগ্রহ কম।
 গুছিয়ে কিছু করতে পারে না।
 মাথা খাটিয়ে কিছু করার প্রয়োজন থাকলে তাতে সে যোগ দেয় না।
 বারবার খেলনা, নোটবুক বা হোমওয়ার্ক খাতাপত্র হারিয়ে বসে।
 দৈনন্দিন রুটিন মনে থাকে না।

২. হাইপার অ্যাকটিভ-ইম্পালসিভ টাইপ
 ডানপিটে, অতি দুরন্ত।
 কোথাও স্থির বসে নেই—বেশি দৌড়াদৌড়ি বা গাছে চড়ে বসা।
 শান্তভাবে কোনো খেলাধুলা নেই।
 সদাচঞ্চল, সদাব্যস্ত।
 অনবরত কথা বলা।
 পুরো প্রশ্ন না শুনে উত্তর দিতে থাকা।
 লাইনে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে না পারা।

৩. ওপরের দুইয়ের মিশ্র রূপ। এবং এটাই সর্বাধিকভাবে দেখা যায়।
মনে রাখতে হবে, এ ধরনের শিশু খারাপ না, এরা ইচ্ছে করে এমনটা করে না।

কার্যকারণ
 গর্ভকালীন মায়ের ধূমপান। এ ছাড়া প্রিম্যাচিওর ডেলিভারি, লো বার্থ ওয়েট, জন্মকালীন মাথায় আঘাত প্রভৃতি।
 অতিরিক্ত টেলিভিশন ও কম্পিউটার গেমস নিয়ে মেতে থাকলে এর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়।

চিকিৎসা
সম্পূর্ণ আরোগ্য না হলেও সফলভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
১. বিশেষজ্ঞ প্রেসক্রিপশন মোতাবেক উত্তেজক, অনুত্তেজক বা এন্টিডিপ্রেশন্টস ওষুধ।
২. বিহেভিয়েরাল থেরাপি
 দৈনন্দিন রুটিন প্রয়োগ মতো পরিচালনা করা।
 শিশুর সবকিছু গোছগাছ করে রাখা, যাতে সে কোনো কিছু হারিয়ে না ফেলে।
 তার মনোযোগ ক্ষুণ্ন হয় এসব দেখা থেকে বিরত থাকা। যেমন টিভি, ভিডিও; বিশেষত বাড়ির কাজ করার সময়ে।
 তার পছন্দের তালিকা ছোট রাখা যাতে সে বেশি পছন্দের ভিড়ে ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে বসে।
 বাচ্চার সঙ্গে সহজ সাদামাটাভাবে কথা বলা।
 ভালো করলে পুরস্কৃত করা।
 শিশুর দক্ষতা কোথায় তা বের করে তাকে তার সামর্থ্য প্রদর্শনের সুযোগ সৃষ্টি করা।
৩. মা-বাবাকে পুরো বিষয়ে শিক্ষিত সচেতন করে তোলা ও তাদের দিকে সহযোগিতা ও সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া।

প্রণব কুমার চৌধুরী
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ
চট্টগ্রাম মেডিকেলকলেজ হাসপাতাল
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ০৮, ২০১১
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection