Author Topic: Napiksa a nice light-free operating system  (Read 2487 times)

bbasujon

  • Administrator
  • VIP Member
  • *****
  • Posts: 1827
  • I want to show my performance at any where
    • View Profile
    • Higher Education
Napiksa a nice light-free operating system
« on: January 15, 2012, 07:02:27 AM »
নপিক্স (knoppix) লিনাক্স ভিত্তিক আরেকটি অপারেটিং সিস্টেমের নাম। এটা সরাসরি ডেবিয়ানের উপর ভিত্তি করে জার্মানীতে তৈরী। জনপ্রিয় উবুন্টুও কিন্তু ডেবিয়ানের উপর ভিত্তি করে তৈরী, তবে উবুন্টু টিম নিজেরাও একটা সফটওয়্যার রিপোজিটরি মেইনটেইন করে। নপিক্সের বৈশিষ্ট হল এটা একটা লাইটওয়েট বা হালকা অপারেটিং সিস্টেম যেটা মূলত লাইভ মোডে চলার জন্য তৈরী করা হয়েছে। তবে চাইলে এটা হার্ডডিস্কেও ইনস্টল করা যায়, যার ইনস্টলার এর সাথেই দেয়া আছে। নপিক্সের বর্ণনা করার সাথে সাথে বোঝার সুবিধার্থে হালকা আর লাইভ বলে কী বুঝায় সেটাও ব্যাখ্যা করছি।
হালকা সিস্টেম

হালকা বলতে বুঝানো হচ্ছে যে এটা চালাতে রিসোর্স কম লাগে -- কম ক্ষমতার প্রসেসর এবং কম মেমরিতেও এগুলো চলে। তবে বেশ কিছু রিভিউয়ে নপিক্সকে দৈত্য বলা হয়েছে এর আকারের কারণে (ক্ষমতার কারণেও বলা হতে পারে )। আরও অনেকগুলো হালকা অপারেটিং সিস্টেম আছে যেগুলোর আকারও খুব ছোট। একটা অপারেটিং সিস্টেমকে যত বেশি সুবিধাজনক করার চেষ্টা করা হবে সেটার আকার এবং চাহিদা তত বাড়তে থাকবে। তাই হালকা অপারেটিং সিস্টেমগুলোতে মূলধারার অপারেটিং সিস্টেমের তুলনায় অনেক সুবিধাকেই ছাড় দিতে হয়। একটা মূলধারার অপারেটিং সিস্টেম লাইভ চালাতে ৩৮৪ মেগাবাইট মেমরি লাগে, আর এর ব্রাউজার, অফিস সহ অন্য নিত্য ব্যবহার্য সফটওয়্যারসহ চালাতে অন্তত ৫১২ মেগাবাইট ড়্যাম রিকমেন্ড করা হয়। আমার বাসার পিসিটাতে প্রসেসর সেলেরন ডি (পেন্টিয়াম ৪ এর তূল্য) আর মেমরি ৫১২ মেবা - এতে খুব চমৎকার ভাবেই আমি ও আমার পরিবারের লোকজন উবুন্টুতে সমস্ত কাজ করছি।

প্রথমেই যে জিনিষটা হালকা সিস্টেমগুলোতে আলাদা বা ছাড় দেয়া হয়েছে সেটা হল গ্রাফিকাল ইউজার ইন্টারফেস বা ডেস্কটপ এনভায়রনমেন্ট; ভয়ের কিছু নেই এতে DOS এর মত টেক্সট বা কমান্ড লাইন ভিত্তিক কিছু দেয়া হয় না, বরং এতেও মূলধারার মতই একই রকম দেখতে একটা গ্রাফিকাল ইন্টারফেস দেয়া হয়। তবে সেই ইন্টারফেসে অনেক ধরণের অপশন বা সুবিধা মূলধারার ইন্টারফেসের তুলনায় কম থাকে। কম সুবিধা নিয়ে কাজ করতে হয় বলে এগুলো কম রিসোর্সে অনায়েসেই চলে। উইন্ডোজে ডেস্কটপ এনভায়রনমেন্টে উইন্ডো ম্যানেজার হল এক্সপ্লোরার, একই সাথে ফাইল ব্রাউজারও এক্সপ্লোরার এমনকি ইন্টারনেট ব্রাউজারও এক্সপ্লোরার  -- এজন্যই কখনো ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার চালু না হলে, ফাইল ব্রাউজারের এড্রেস বারে ওয়েব ঠিকানা লিখে দিলেই সেটাই ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারে রূপ নেয়। এক্সপির ক্ষেত্রে এর নাম ছিল লুনা, উইন্ডোজ সেভেনে সেটার নাম এ্যারো; আবার ম্যাকেরটার নাম অ্যাকোয়া। লিনাক্সের মূলধারার ডেস্কটপ এনভায়রনমেন্ট হল গনোম (gnome), উবুন্টুতে এর মধ্যে নটিলাস নামক ফাইল ম্যানেজার ব্যবহৃত হয়। আবার কুবুন্টুতে KDE বা K Desktop Environment ব্যবহৃত হয়, যা অনেক বেশি ফীচার সম্পন্ন এবং এর মেমরি চাহিদাও বেশি। হালকা এনভায়রনমেন্টের মধ্য XFCE, LXDE, ROX, Ambient ইত্যাদি রয়েছে। নপিক্সে LXDE ব্যবহৃত হয়েছে, এর ফাইল ম্যানেজার বা ব্রাউজার হল: PCManFM। আরো হালকা পাপ্পি লিনাক্সে ROX ব্যবহৃত হয়।

অপর যেই মূল জিনিষটাতে ছাড় দেয়া হয় সেটা হল অফিস সফটওয়্যার। পূর্ণ ফীচার সম্পন্ন লিব্রে অফিসের বদলে হালকা সিস্টেমগুলোতে কম ফীচার সম্পন্ন টেক্সট বা ডকুমেন্ট এডিটর ও স্প্রেডশীট প্রোগ্রাম দেয়া হয়। ঠিক এই কারণেই হালকা সিস্টেমগুলো আমার ক্লাসরুমে বা পিসিতে ব্যবহার করতে ইচ্ছা করে না। কারণ আমার কাজের ধরণের জন্য মূল কাজগুলো এই অফিস সফটওয়্যার নির্ভর, তাই সেটাতে পূর্ণ শক্তি চাই আমার। নপিক্সে এই ব্যাপারটায় ছাড় দেয়নি, পূর্ণ শক্তির লিব্রে অফিস দেয়া হয়েছে, যা লাইভ সিস্টেম থেকেও ব্যবহার করা যায়।

আমার নিজের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে এবং লেখাটাকে সহজপাচ্য রাখার জন্য বিস্তারিত কিছু লিখলাম না। ডেস্কটপ এনভায়রনমেন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে উইকিপিডিয়াতে এই সংক্রান্ত পৃষ্ঠাটি দেখতে পারেন (http://en.wikipedia.org/wiki/Desktop_environment)
লাইভ মোড:

লাইভ সিডি কী সেটা আপনার জানা থাকলে এই অংশটা বাদ দিয়ে পড়তে পারেন।
লাইভ মোড হল লাইভ সিডি বা লাইভ ইউএসবি থেকে একটা সিস্টেমকে ইনস্টল না করেই চালানো। হার্ডডিস্কে কোন কিছু ইনস্টল না করেই এক্ষেত্রে সিডি, ডিভিডি বা পেনড্রাইভ থেকে একটা অপারেটিং সিস্টেমকে চালানো হয়। অপারেটিং সিস্টেমটি এজন্য তার প্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম ফাইলগুলো কম্পিউটারের মেমরি বা RAMএ কপি করে নেয়, এবং সেখান থেকেই চলে, হার্ডডিস্কে একটি আঁচড়ও ফেলে না। লিনাক্সের বেশিরভাগ ডিস্ট্রিবিউশন বা অপারেটিং সিস্টেমর সিডি, ডিভিডই এই সিস্টেমে করা হয় যেন ইনস্টলের ঝামেলায় না গিয়েই কৌতুহলী কেউ এটা সম্পর্কে জানতে পারে। তাই লাইভ সিডির অর্থ দাঁড়ায় - এটা জীবিত এবং নিজে নিজেই সবকিছু করতে পারে :p।

লাইভ সিস্টেমগুলো শুধু সিডিতেই হয় তা নয়, এগুলো বড় আকার হলে ডিভিডিতে নেয়া যায়। আবার পেনড্রাইভ এবং ফ্লাশ মেমরি কার্ডও লাইভ বুটেবল করা যায়। এমনকি একটি পেনড্রাইভে একত্রে অনেকগুলো লাইভ অপারেটিং সিস্টেমও রাখা যায়। মেমরি ড্রাইভে এটা নেয়ার সুবিধা হল, দরকার না হলে এটা মুছে অন্য কাজে ব্যবহার করা যায়।

লাইভ সিস্টেমের সুবিধা হল,

    ইনস্টল না করেই একটা অপারেটিং সিস্টেমে কী আছে আর কী নাই সেটা বোঝা যায়, ফলে এটা আমার প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম কি না সেটা ইনস্টল না করেই চালিয়ে দেখে নেয়া যায়।
    হার্ডডিস্ক ছাড়াই কম্পিউটার চালানো যায়। হার্ডডিস্ক কোন কারণে নষ্ট হয়ে গেলেও নতুন হার্ডডিস্ক ক্রয়ের আগ পর্যন্ত এভাবে কাজ চালানো যাবে।
    কিংবা পাসওয়র্ডের কারণে কোন কম্পিউটার খুলতে না পারলে লাইভ বুট করে সেটা দিয়ে আপনার কাজ করতে পারেন (মেইল চেক, ডকুমেন্ট লেখালেখি, কাউকে আপনার করা কাজের ফাইল দেখানো ইত্যাদি)
    ভাইরাস বা অন্য কোনো কারণে একটা কম্পিউটার হার্ডডিস্ক থেকে চালু হতে না পারলে, লাইভ সিডি বা ইউএসবি থেকে বুট করে এটার হার্ডডিস্কে থাকা জরুরী ফাইল অন্য মিডিয়াতে কপি করে আনা যায়। দরকার হলে হার্ডডিস্কে থাকা অপ্রয়োজনীয় ফাইল বা ভাইরাসও মুছে ফেলা যায়।
    কারো পেনড্রাইভে প্রয়োজনীয় ফাইলের সাথে চুপিসারে ভাইরাস আসছে এমন আশংকা করলে আর নিজের এন্টিভাইরাসে ভরসা না থাকলে, লাইভ লিনাক্স বুট করে তারপর সেই পেনড্রাইভ থেকে জরুরী ফাইল কপি করে নেয়া যায়, আবার ভাইরাস ফাইল দেখলেও ওগুলোকে দেখে দেখে মুছে ফেলা যায়। (আমি আগে অফিসে বাধ্য হয়ে উইন্ডোস ব্যবহারের সময় এই কাজ করতাম)
    কোনো কম্পিউটারের ম্যালওয়্যার আপনার সংবেদনশীল ডেটা, পাসওয়র্ড এসব চুরি করছে এমন আশংকা করলে, লাইভ সিডি থেকে বুট করে কাজ করে সেই আশংকা মুক্ত হওয়া যায়। (কিছু অনলাইন ব্যাংকিং‌-এর জন্য এমন লাইভ সিডি দেয়ার কথা শুনেছিলাম)

লাইভ সিস্টেমের কিছু অসুবিধাও রয়েছে:

    এটা যেহেতু সিডি বা ডিভিডি থেকে প্রোগ্রাম চালু করে, তাই একটু ধীরগতির হয়। কারণ সিডি থেকে ডেটা ট্রান্সফারের হার হার্ডডিস্ক থেকে ডেটা ট্রান্সফারের অন্তত ১৫ ভাগের একভাগ। এছাড়া ঐ প্রোগ্রামগুলো কম্প্রেস অবস্থায় থাকে, ডেটা ট্রান্সফারের পর সেগুলোকে আবার ডিকম্প্রেস করে তবেই ব্যবহার করে। সিডি থেকে ডেটা ট্রান্সফারের সময়টা ইউএসবি বুটেবল করলে কমিয়ে আনা যায়, তবে ডিকম্প্রেস করার সময়টাকে এড়ানো সম্ভব হয় না এতেও।
    সাধারণত সিস্টেমের কাস্টমাইজেশন সংরক্ষিত হয় না। অবশ্য পেনড্রাইভ বুটেবল করলে নিজের সেটিংসগুলো সংরক্ষণ করা যায়।

নপিক্সের অন্য সুবিধাসমূহ

হালকা ডেস্কটপ এনভায়রনমেন্ট হওয়ার পরেও পূর্ণশক্তির অফিস সফটওয়্যার থাকাতে নপিক্সকে আমার বেশ পছন্দ। কারণ এতে করে দূর্বল পিসিতেও এখন সম্পুর্ন প্রয়োজন মেটাতে পারছি। আর বাড়তি হিসেবে এর লাইভ সিডিতেই দারুন সব গ্রাফিকাল ইফেক্ট চালু অবস্থায় থাকে। ক্লাসরুমে এই ঝাকানাকা গ্রাফিকেল ইফেক্ট দেখেই কিছু ছাত্র আমার কাছ থেকে এটা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছে। এছাড়া এটাতে মাল্টিমিডিয়া চালানোর কোডেকগুলো দেয়া থাকে, ফলে অতিরিক্তি কিছু ডাউনলোড বা ইনস্টল না করেই সাধারণ গান বা মুভি চালানো যায়।
নপিক্সের যেই সফটওয়্যারগুলো এর লাইভ সিডিতেই দেয়া থাকে তার কয়েকটা হল এমন:

    অফিস: লিব্রে অফিস - লেখালেখি, হিসাব নিকাশ, প্রেজেন্টেশন, আঁকাআঁকি, ডেটাবেস সবগুলো কাজই করা যায় অনায়েসে। মাইক্রোসফট অফিসের ফাইলগুলোও এতে খোলা ও এডিট করা যায়। এছাড়া সরাসরি পিডিএফ বানাতে পারা লিব্রে অফিসের পুরাতন একটা দারুন বৈশিষ্ট।
    ব্রাউজার: ক্রোমিয়াম - দারুন এই ব্রাউজারটা সম্পর্কে বেশি কিছু বলার প্রয়োজন নাই।
    গ্রাফিক্স:  গিম্প - গ্নুহ ইমেজ ম্যানিপুলেশন প্রোগ্রাম বা গিম্প হল ছবি এডিট করার জন্য দারুন একটা সফটওয়্যার। ছোটখাট এডিটিংএর কাজ করার জন্য এটা ফটোশপের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। এর ইন্টারফেসটাও ফটোশপের মত।
    সিডি ডিভিডি রাইটার:  ব্রাসেরো নামের সফটওয়্যারটা দেয়া আছে।
    মাল্টিমিডিয়া: গনোম প্লেয়ার, যা অডিও ও ভিডিও চালাতে পারে। এছাড়া শব্দ মিশানোর জন্য অমিক্স নামে একটি সরল মিক্সার দেয়া আছে।
    মেসঞ্জার: পিজিন - এটা দিয়ে একই সাথে ইয়াহু, গুগল সহ বিভিন্ন জনপ্রিয় মেসেঞ্জারের সাথে সংযুক্ত হয়ে চ্যাট করা যায়।
    এছাড়া উইন্ডোজের প্রোগ্রাম রান করার জন্য এতে wine নামক একটা প্রোগ্রাম দেয়া আছে।
    ডিস্ক পার্টিশনিঙের জন্য জিপার্টেড। IP ট্রাফিক অ্যানালাইজার ইত্যাদি সহ অনেক দারুন সফটওয়্যার দেয়া আছে এতে -- যার বেশিরভাগই আমি ব্যবহার করি না ;-p ।

অনেকদিন পর আমার দূর্বল নেটবুকটাকে খুব সাবলিলভাবে চলতে দেখছি এই নপিক্সের কল্যানে। আমি অবশ্য হার্ডডিস্কে ইনস্টল করে নিজের মত করে সাজিয়ে নিয়েছি। এই লেখাটিও নপিক্সে বসেই লেখা। এর একটা স্ক্রিনশট দেখুন:



আমার নেটবুক হল HP mini 1001TU এটম n470 প্রসেসর, ১ গিগা ড়্যাম।
তবে নপিক্স চালানোর জন্য কমপক্ষে যেই ক্ষমতা লাগবে তা হল:

    ইন্টেল কম্পাটিবল প্রসেসর (i486 অথবা পরেরগুলো)
    ৩২ মেবা RAM এ এটা টেক্সট মোডে চলবে। কমপক্ষে ৬৪ মেবা লাগবে LXDE গ্রাফিক্স মোডে চালানোর জন্য (অন্য অফিস প্রোগ্রাম চালানোর জন্য কমপক্ষে ১২৮ মেবা ড়্যামের সুপারিশ করা হয়।)
    বুটযোগ্য সিডি রম ড্রাইভ, কিংবা একটা বুট ফ্লপি এবং সাধারণ সিডিরম(IDE/ATAPI or SCSI)
    আদর্শ SVGA-কম্পাটিবল গ্রাফিক্স কার্ড
    সিরিয়াল বা PS/2 মাউস বা IMPS/2-কম্পাটিবল USB-মাউস

ডাউনলোড

বেশিভাগ লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশনের মতই নপিক্স একটি ফ্রী অপারেটিং সিস্টেম। এটা ডাউনলোড করতে পারেন এখান থেকে (৬৯৭মেবা):
বিট টরেন্ট: http://torrent.unix-ag.uni-kl.de/
কিংবা: http://www.knopper.net/knoppix-mirrors/index-en.html
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection