Author Topic: গোসলের পানি গরম হলে  (Read 1004 times)

bbasujon

  • Administrator
  • VIP Member
  • *****
  • Posts: 1827
  • I want to show my performance at any where
    • View Profile
    • Higher Education
গোসলের পানি গরম হলে
« on: January 12, 2012, 08:49:59 AM »
গোসল করলে শরীর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হয়। আমরা সাধারণত ঠান্ডা পানিতে গোসল করেই অভ্যস্ত। তবে, শীতকালে অনেকেই গরম পানিতে গোসল পছন্দ করি, আরাম বোধ করি। গোসলের পানি গরম হলে শরীর তো পরিস্কার হয়ই, উপরন্তু কিছু বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়। গোসলের জন্য গরম পানি যদি শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রার কাছাকাছি পর্যায়ের গরম হয়, অর্থাৎ ৮৫ থেকে ৯২০ ফারেনহাইট, এবং এরূপ গরম পানি দিয়ে ২ থেকে ১৫ মিনিট গোসল করা হয়, তাহলে শরীরের পেশির স্টিফনেস দূর হয়, পেশির নমনীয়তা বাড়ে। লাঘব হয় পেশির ব্যথা। নিয়মিত এরূপ গরম পানিতে গোসল করলে বাতের ব্যথা উপশম হয়। অস্থি সন্ধির ব্যথা কমে, প্রদাহ কমে। পিঠের ও হাঁটুর ব্যথা ভাল হয়। অনেকের মাথার ব্যথাও কমে যায়।

গরম পানির প্রভাবে ত্বকের রক্তনালী প্রসারিত হয়। ফলে ত্বকে রক্ত সরবরাহ বাড়ে, ত্বক পুষ্টি পায় ভাল। ত্বকের আণুবিক্ষণিক ছিদ্রগুলো খোলে যায়। ফলে ভেতরকার ময়লা বের হয়ে যেতে পারে। ত্বক পরিস্কার হয়। ত্বকের আর্দ্রতা বাড়ে। ত্বক থাকে বেশ কোমল। গরম পানির ভাপে নাকের কনজেশন বা নাক বন্ধ হয়ে থাকার ভাব কমে যায়। কমে যায় শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে থাকার ভাবও। নাকের ছিদ্র খোলে যায়, শ্বাসনালী প্রসারিত হয়। গরম পানির গোসলে তাই সাইনোসাইটিসে উপকার পাওয়া যায়। উপকার পাওয়া যায় শ্বাসকষ্টেও। গরম পানি দিয়ে গোসল করলে ত্বকের রক্তনালী প্রসারিত হয়। ফলে ত্বকে রক্ত সরবরাহ বেড়ে যায়। আর এই বাড়তি রক্ত আসে শরীরের ভেতরকার অংশ থেকেই। ফলে শরীরের ভেতরকার অঙ্গের রক্ত সরবরাহ সাময়িকভাবে কমে যায়। অন্যান্য অঙ্গের ন্যায় মস্তিস্কের রক্ত সরবরাহও কমে যায় সাময়িকভাবে। মস্তিস্কের ভার সামান্য লাঘব হয় কিছু সময়ের জন্য। তাই ঘুমের ১৫ মিনিট আগে গরম পানিতে গোসল করলে একটু ভাল ঘুম হয়। সন্তান প্রসবের পর প্রসুতিকে গরম পানিতে একটু এন্টিসেপটিক দিয়ে গোসলের ব্যবস্থা করলে ত্বকের ছোট খাট ক্ষতের উপকার হয়। বাচ্চা প্রসব করানোর জন্য ছোট অপারেশন ‘ইপিসিওটমি’-র পর হিপ বাথ ইনফেকশন প্রতিরোধে সহায়তা করে। অর্শ রোগের অপারেশনের পর বা পায়ু পথের ছোটখাট ক্ষতে সিজ বাথ বা হিপ বাথ ব্যথা নিরাময়ে সহায়ক। ইনফেকশন প্রতিরোধেও কার্যকর। ক্ষত শুকাতেও ভূমিকা রাখে। এর মানে এই নয় যে শুধু গরম পানিতেই গোসল করতে হবে। তবে বাতের ব্যথা ও পেশীর ব্যথা কমাতে গরম পানির গোসলে উপকার পেতে পারেন। উপকার পেতে পারেন ত্বকের আর্দ্রতা বাড়িয়ে ত্বককে কোমল রাখতে। নাকের কনজেশন কমাতে ও সাইনোসাইটিস এবং শ্বাসকষ্টে একটু উপকার পেতে গরম পানিতে গোসলের অভ্যাস করতেই পারেন। অনেক সময় মাথা ব্যথা কমাতে কিংবা রাতে একটু ভাল ঘুম পেতে অথবা ছোট খাট ক্ষতে ইনফেকশন প্রতিরোধেও গরম পানিতে গোসলের অভ্যাসে বেশ উপকার পেতে পারেন।

ডাঃ মোঃ শহীদুল্লাহ
সহযোগী অধ্যাপক, কমিউনিটি মেডিসিনবিভাগ
কমিউনিটি বেজড্‌ মেডিকেল কলেজ,ময়মনসিংহ।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, জানুয়ারী ১৬, ২০১০
« Last Edit: January 12, 2012, 05:10:05 PM by bbasujon »
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection