Dolphin.com.bd
E-Health / Protect Your Health => For All / Others => Topic started by: bbasujon on January 12, 2012, 05:43:17 PM
-
ধনেপাতা আমাদের দেশে ভীষণ পরিচিত। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই ধনেপাতা পাওয়া যায়। ধনেপাতা শুধু রান্নার উপকরণ নয়, এর রয়েছে নানাবিধ ঔষধি গুণ। তাই এই পাতাকে বলা হয় হার্বাল প্যান্ট বা ঔষধি পাতা। ধনেপাতার ইংরেজি নাম হরো মিলানট্রো।
ভিটামিন ‘সি’ আছে ধনেপাতায়, রয়েছে ভিটামিন ‘এ’ ফলিক এসিড (গুরুত্বপূর্ণ এক ধরনের ভিটামিন, যা ত্বকের উপকারের জন্য যথেষ্ট প্রয়োজনীয়)। এই ভিটামিনগুলো প্রতিদিনের পুষ্টি জোগায়, ত্বক, চুলের ক্ষয়রোধ করে, মুখের ভেতরের নরম অংশগুলোকে রক্ষা করে। মুখগহ্বরের ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করে। ধনেপাতার ভিটামিন ‘এ’ চোখের পুষ্টি জোগায়, রাতকানা রোগ দূর করতে ভূমিকা রাখে।
কোলেস্টেরলমুক্ত ধনেপাতা দেহের চর্বির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। আমাদের শরীরে এলডিএল নামে এক ধরনের খারাপ কোলেস্টেরল রয়েছে, যা শরীরের শিরা-উপশিরার দেয়ালে জমে হূৎপিণ্ডে রক্ত চলতে বাধা দেয়।পরিণামে হার্ট অ্যাটাক পর্যন্ত হতে পারে। ধনেপাতা এই খারাপ কোলেস্টেরলকে কমিয়ে দেয়। আর শরীরের জন্য উপকারী এক ধরনের কোলেস্টেরল, যার নাম এইচডিএল, মাত্রা বৃদ্ধি করে। ধনেপাতা শরীরের এইচডিএলকে বাড়িয়ে এলডিএলকে কমিয়ে দেয়। ধনেপাতায় উপস্থিত আয়রন রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে এবং রক্ত পরিষ্কার রাখতেও অবদান রাখে।
এ ছাড়া ভিটামিন ‘কে’-তে ভরপুর ধনেপাতা হাড়ের ভঙ্গুরতা দূর করে শরীরকে করে শক্ত-সমর্থ। তারুণ্য ধরে রাখতেও এর অবদান অপরিসীম। তবে ধনেপাতা রান্নার চেয়ে কাঁচা খেলে উপকার বেশি পাওয়া যায়।
অ্যালজিমারস নামে এক ধরনের মস্তিষ্কের রোগ রয়েছে, যা নিরাময়ে ধনেপাতা রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। কিছুদিন পরই শুরু হবে শীতকাল। ধনেপাতা শীতকালীন ঠোঁট ফাটা, ঠান্ডা লেগে যাওয়া, জ্বর জ্বর ভাব দূর করতে রাখে যথেষ্ট অবদান।
কারণ, ধনেপাতায় রয়েছে ভিটামিন ‘সি’তে ভরপুর ‘অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’ নামের এক উপাদান, যা দেহের কাটাছেঁড়া অংশগুলো শুকানোর জন্য ভীষণ জরুরি। ধনেগাছের বীজের তেলের রয়েছে নানাবিধ ঔষধি ভূমিকা। যেমন: ব্যথানাশক, খাবার হজমে সহায়ক, ছত্রাকনাশক, ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, খিদে বাড়িয়ে দেয়। ধনেপাতা চিবানোর পর সেই থেঁতলে যাওয়া পাতার রস দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁতের মাড়ি মজবুত হয়, রক্ত পড়া কমে, মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়।
উল্লেখ্য, গ্যাসট্রিকের সমস্যা থাকলে মুখে দুর্গন্ধ হয়। সারা পৃথিবীতে, বিশেষত এশিয়া মহাদেশে ধনের গুঁড়াকে তরকারিতে মসলা হিসেবে খাওয়া হয়। গোটা ধনেকেও চিবিয়ে খাওয়া যায়। রাসায়নিক পদার্থ ছাড়া কিছু সুগন্ধি তৈরির জন্য ধনেপাতা ব্যবহার করা হয়।
ধনেপাতার বহুবিধ ব্যবহারের জন্যই সবার উচিত প্রতিদিনের খাবারের মেন্যুতে ধনেপাতাকে স্থান দেওয়া। তবে অধিক পুষ্টির আশায় মাত্রাতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়া অনুচিত।
ফারহানা মোবিন
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, নভেম্বর ০৩, ২০১০