Dolphin.com.bd

E-Health / Protect Your Health => For All / Others => Topic started by: bbasujon on January 12, 2012, 05:56:03 PM

Title: ফলের মাসের রসালো ফল
Post by: bbasujon on January 12, 2012, 05:56:03 PM
গ্রীষ্ম তার দারুণ দাপটে হাজির হয়েছে আবার। সঙ্গে এনেছে পিচগলা গরম, তবে তার ক্ষতি পূরণে আছে নানা মৌসুমি ফল। বাজারের আনাচ-কানাচে ফলওয়ালা পসরা বসিয়ে আছে মিষ্টিমধুর গ্রীষ্মের ফলে। জানিয়ে দিচ্ছি ঢাকার কারওয়ান বাজার ঘুরে পাওয়া মৌসুমি ফলের দরদাম। একই সঙ্গে থাকছে পুষ্টিবিদ সিদ্দিকা কবীরের জানানো গ্রীষ্মের মৌসুমি ফলের পুষ্টিগুণও।
কাঁচা কাঁঠাল: গ্রীষ্মের ফল মানেই জাতীয় ফল কাঁঠাল। বাজারে এখনো পাকা কাঁঠাল না উঠলেও পাবেন কাঁচা কাঁঠাল। যেকোনো মাছ বা ডালের সঙ্গে কাঁচা কাঁঠাল খেতে পারেন। কাঁঠালে আছে কার্বোহাইড্রেট, ফ্রুক্টোজ, সুক্রোজ এবং পর্যাপ্ত প্রোটিন। দাম পড়বে ৫০ থেকে ১০০, ক্ষেত্রবিশেষে ১৫০ টাকা।
কাঁচা আম: কালবৈশাখীর ঝড়ে আম কুড়ানোর সুযোগ হয়তো নেই এই ইট-কাঠের নগরে। কিন্তু কাঁচা আমের মজা থেকেও বঞ্চিত হতে হবে না এখন। কারণ, বাজারে চলে এসেছে ঝুড়ি ভরা কাঁচা আম। প্রচুর পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট ছাড়াও কাঁচা আমে আছে ভিটামিন সি। আরও আছে আয়রন। আচার ছাড়াও কাঁচা আমের ভর্তা খেলে শরীরে বাড়বে মিনারেলের পরিমাণ, কমবে মাথা ঘোরানো ও বমি বমি ভাব। কাঁচা আম পাবেন কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৭০ টাকায়।
তরমুজ: লাল টুকটুকে তরমুজে কামড় দিলেই মুখটা ভরে ওঠে রসে, আর মনটা ভরে তৃপ্তিতে। বাজারে পাবেন নানা আকারের নানা বাহারের তরমুজ। আকারভেদে তরমুজের দাম পড়বে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। দামে কম হলেও তরমুজের গুণের কদর অনেক। গ্রীষ্মের রসালো তরমুজে রয়েছে প্রচুর পানি ও খনিজ উপাদান। পানির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি তরমুজ পূরণ করে গ্লুকোজ ও আয়রনের চাহিদা। ক্যালরি কম থাকায় তরমুজকে অনেকেই ব্যবহার করেন ওজন কমানোর অব্যর্থ খাবার হিসেবেও। যত খুশি খান, ওজন বাড়ার আশঙ্কা নেই।
বেল: কথায় বলে, ন্যাড়া দ্বিতীয়বার বেলতলায় যায় না। আর গুণীজন বলেন, যে বেলের স্বাদ পেয়েছে, সে বেলতলায় বারবার যায়। কারণ, বেলে আছে পেটের হজমশক্তি বাড়ানোর ক্ষমতা। বেলের আঠালো ভাবটা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, খাদ্যনালি পরিষ্কার রাখে। বেল বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ১৫ থেকে ২০ টাকায়। আর হালি ৪০ থেকে ৬০ টাকা।
আনারস: পর্তুগিজদের আনা রস মানে আনারস—গ্রীষ্মের সবচেয়ে পরিচিত ফলের মধ্যে একটি। বাজার এখন ছেয়ে গেছে রাঙামাটির টকমিষ্টি জলডুগি আনারসে। একটু ছোট আকারের এক হালি জলডুগি আনারস বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। আকারে ছোট হলেও আনারসে ভরা আছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম ও সোডিয়াম। চল্লিশোর্ধ নারী-পুরুষের জন্য আনারস একটি আদর্শ ফল।
বাঙ্গি: হালকা মিষ্টি বাঙ্গি শুধু রূপচর্চায়ই নয়, পুষ্টি ও ভিটামিনের চর্চায়ও এগিয়ে। গ্লুকোজসহ ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’র এক অপূর্ব আধার হলো বাঙ্গি বা ফুট বাঙ্গি। প্রতিটি শসা আকৃতির বাঙ্গির দাম ৩০ থেকে ৫০ টাকা। আর কুমড়া আকৃতির মিষ্টি বাঙ্গি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়।
সফেদা: মধু, চিনি, গুড়—সবই হার মেনে যায় সফেদার মিষ্টির কাছে। সফেদায় আছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন, মিনারেলসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। সফেদার দিন শেষ হয়ে আসছে, তাই দামটা একটু চড়া। প্রতি কেজির দাম পড়বে ৫০ থেকে ৭০ টাকা।
কলা: প্রচণ্ড গরমে মাথা ঘুরলে, দুর্বল লাগলে এবং ঘন ঘন পানির পিপাসা পেলে বুঝবেন, আপনাকে কাবু করে ফেলেছে গ্রীষ্মের রোদ। তখনই বুঝে নেবেন, আপনার এই মুহূর্তে কলা খাওয়া প্রয়োজন। গরমে আপনাকে মুহূর্তেই চাঙা করে তুলতে পারে কলা। কারণ, কলায় আছে আয়রন, পটাশিয়াম ও সোডিয়ামের অসাধারণ মিশেল। দেশি, সবরি, সাগর কিংবা চাঁপাকলা—সবই দারুণ উপকারী। সবরি কলার ডজন বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। তা ছাড়া প্রতিটি কলা দু-তিন টাকায় পাবেন যেকোনো দোকানে।
সবশেষে সিদ্দিকা কবীর জানালেন, বৈশাখ-জৈষ্ঠ্যের অসহ্য গরমে ঘাম ও ঘামাচি হয়; সানস্ট্রোকও হয় যখন-তখন। গ্রীষ্মের ফলগুলোই তখন আপনাকে দেবে শারীরিক ও মানসিক তৃপ্তি। এককথায় গ্রীষ্মের ফলগুলোই আপনাকে তৈরি করে দেবে গ্রীষ্মের বিরুদ্ধে লড়তে।

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, এপ্রিল ২৬, ২০১১