Dolphin.com.bd

E-Health / Protect Your Health => For All / Others => Topic started by: bbasujon on January 12, 2012, 05:56:37 PM

Title: কোন সবজি কী কাজে লাগে?
Post by: bbasujon on January 12, 2012, 05:56:37 PM
আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় শাকসবজি অনেকখানি অংশ জুড়ে রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমরা সবজির গুণগত মান না জেনেই ভিটামিন ও খনিজ লবণ পাওয়ার জন্য খেয়ে থাকি। অথচ কোনো কোনো সবজি স্বাস্থ্যের ওপর ভালো-খারাপ দুটিরই প্রভাব রয়েছে। যদি জানা থাকে কোন কোন সবজি কী কাজে লাগে তাহলে খুবই ভালো হয়। যেমন—
প্রত্যেহ তেতো সবজি—করলা ও তেতো পাটশাক খাবারে রুচি বাড়ায় ও মেদ বৃদ্ধির আশঙ্কা কমায়। অনেক সময় নিমগাছের কচি পাতা ভেজেও খাওয়া হয়। এতে ত্বকের চুলকানি ও কৃমি রোধে উপকার পাওয়া যায়।
খেতে বসে প্রথম ডিশ হিসেবে যদি তেতো খাওয়া হয়, তাহলে সেটা মুখে লালা ক্ষরণ করে শ্বেতসারকে ভাঙতে সাহায্য করে। এতে হজমের সুবিধা হয় ও লিভারও ভালো থাকে।
আলু ও টমেটোতে প্যান্টোথেনিক এসিড আছে বলে হাতের তালু এবং পায়ের তালু জ্বালা করার উপসর্গ থেকে রেহাই পাওয়া যায়। আবার ধনেপাতা ও পুদিনাপাতার চাটনি এক মাস খেলেও উপকার পাওয়া যাবে। গাঢ় সবুজ ও হলুদ শাক-সবজি রাতকানা রোগ, হাড় ও দাঁত গঠনে এবং স্নায়ুবিক অসুস্থতায় বেশ উপকারী। পালংশাক, বাঁধাকপি, ফুলকপি রক্তে প্রোথ্রোথিন তৈরি হতে সাহায্য করে।
শিম, মটরশুঁটি, বরবটি, পালংশাক, ফুলকপি ইত্যাদিতে পিউরিন বেশি থাকে বলে গেঁটেবাত হলে অবশ্যই বর্জন করা উচিত। আবার ওল, বেগুন খেলেও আমবাতের প্রকোপ বাড়ে।
অজীর্ণ ও ডায়রিয়া হলে সবজি বর্জন করা উচিত। বিশেষ করে আঁশযুক্ত সবজি। কারণ, সেলুলোজ দুষ্পাচ্য বলে হজমের ব্যাঘাত ঘটায়।
বাঁধাকপি, মুলা, শিম, শাক, মটরশুঁটি পরিপাকে অসুবিধা হয় বলে গ্যাসট্রাইটিস বেড়ে যায়। আলসারের রোগীদের খাবারে কাঁচা সবজি, পেঁয়াজ, বাঁধাকপি, ডাঁটা, কাঁচামরিচ, কাঁচা শসা, বরবটি বাদ দিলে ভালো হয়।
কিডনিতে পাথর হলে অক্সালিক এসিডযুক্ত সবজি যেমন—পালংশাক, পুইশাক, টমেটো, বিট, শজনেপাতা, কচু, কচুর শাক, কলার মোচা, মিষ্টি আলু বাদ দিতে হবে।
পাঁচ-ছয় মাসের শিশুদের গাঢ় সবুজ ও হলুদ সবজি সিদ্ধ করে চালুনি দিয়ে চেলে নরম করে ক্বাথ বের করে খাওয়ানো যেতে পারে।
শিশুর জন্মের পর মায়েদের গাজর, বিট, টমেটো, লেটুসপাতা, বাঁধাকপি, মুলা খাওয়া উচিত। এতে মুখে যে কালো ছোপ পড়ে তা দূর হয়ে যায়। পাকা করলার বীজ শুকিয়ে গুঁড়ো করে সাত-আট চা-চামচ পানি মিশিয়ে ছেঁকে খেতে হবে। কিছুদিন খেলে ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের অভাব হবে না।
গলাব্যথা ও সর্দি-কাশির জন্য তুলসীপাতার রস খুবই উপকারী। রক্তস্বল্পতা দূর করার জন্য কচুর শাক, লালশাক, পালংশাক, বিট, লেটুসপাতা খুবই উপকারী।
এ ছাড়া ধনেপাতা ও পুদিনাপাতার ভর্তা খাওয়া যায়। গ্রীষ্মকালের সবজি ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুন্দল ও চালকুমড়ায় পানির পরিমাণ বেশি থাকে বলে শরীরকে শীতল ও সুস্থ রাখে। কাঁচা পেঁপে পরিপাক শক্তির সহায়ক।
সুতরাং সবজি শুধু স্বাদ ও পুষ্টির জন্য নয়। এর বিষয়ে ভালোভাবে জেনে শরীরের প্রয়োজন-অপ্রয়োজনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তবেই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এর স্থান দিতে হবে।

আখতারুন নাহার আলো
বিভাগীয় প্রধান, পুষ্টি বিভাগ, বারডেম জেনারেল হাসপাতাল
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ২১, ২০১১