তৃতীয় পরিচ্ছেদ
অনুচ্ছেদ - ৬
১. প্রতিটি ব্যক্তিরই বাঁচার সহজাত অধিকার রয়েছে৷ তাই এই অধিকারকে আইন দ্বারা সংরক্ষণ করতে পারে৷ কাউকেই এই অধিকার থেকে খামখেয়ালীভাবে বঞ্চিত করা যাবে না৷
২. যে সকল দেশে মৃতু্য দন্ডাদেশ রহিত করা হয়নি সেখানে উক্ত দন্ডাদেশ আরোপ করা যাবে শুধুমাত্র কঠিন অপরাধের ক্ষেত্রে এবং তা হবে অপরাধ করা সময়কালের সেই দেশের বলবত্ আইন অনুসারে৷ উক্ত দন্ডাদেশ আলোচ্য চুক্তির শর্তে এবং জেনোসাইডের প্রতিরোধ এবং চুক্তির পরিপন্থী হতে পারবে না৷
৩. জীবনের বঞ্চনা যখন জেনোসাইডের অপরাধ সংগঠিত করায়, তখন বুঝতে হবে এই ধারার কোন কিছু কোন রাষ্ট্রকে ক্ষমতা দেয় না জেনোসাইডের প্রতিরোধ এবং শান্তি চুক্তির বিরুদ্ধে ক্ষতিকারক কিছু গ্রহণ করতে৷
৪. মৃত্যু দন্ডাদেশ প্রাপ্ত ব্যক্তির অধিকার রয়েছে দন্ডাদেশ থেকে ক্ষমা অথবা লঘু দন্ডাদেশ সকল ক্ষেত্রেই অনুমোদন করা যেতে পারে৷
৫. ১৮ বছরের নিচের বয়সী ব্যক্তি কর্তৃক সংগঠিত অপরাধের জন্য তাকে মৃত্যু দন্ডাদেশ দেয়া যাবে না এবং গর্ভবতী মেয়েদের প্রতিও মৃত্যু দন্ডাদেশ দেয়া যাবে না এবং গর্ভবতী মেয়েদের প্রতিও মৃত্যু দন্ডাদেশ কার্যকরী করা যাবে না৷
৬. আলোচ্য চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী কোন রাষ্ট্রকে এই ধারার কোন কিছুই মৃতু্য দন্ডাদেশ রহিত করতে বাধা বা বিলম্বের সৃষ্টি করবে না৷
অনুচ্ছেদ - ৭
কেউ পীড়ন, নির্মম, আমানবিক অথবা অপমানজনক আচরণ কিংবা শাস্তির শিকার হবে না৷ বিশেষ করে, কারও মুক্ত মতামত ছাড়া তার ওপর স্বাস্থ্যগত অথবা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো যাবে না৷
অনুচ্ছেদ - ৮
১. কাউকে দাস বানানো যাবে না৷ বিভিন্ন ধরনের দাস প্রথা এবং দাস ব্যবসা নিষিদ্দ ঘোষণা করতে হবে৷
২. কৃতদাসত্বে কাউকে রাখা যাবে না৷
৩. (ক) বাধ্যতামূলক অথবা চাপিয়ে দেয়া শ্রম কাউকে দিয়ে সম্পাদন করা যাবে না;
(খ) যথাযথ আদালত কর্তৃক অপরাধের জন্য শাস্তি স্বরুপ কঠিন শ্রম অথবা যে সকল দেশে অপরাধের জন্য কঠিন শ্রমের দন্ডাদেশ দেয়া হয়, অনুচ্ছেদ ৩ (ক) ঐ সকল ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না;
(গ) "চাপিয়ে দেয়া অথবা বাধ্যতামূলক শ্রম" - কথাটি নিম্নে বর্ণিত ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না;
(i) সেই সকল শ্রম বা কাজ, যা অনুচ্ছেদ (খ) এ উল্লেখ নাই কিন্তু উহা স্বাভাবিকভাবেই সেই ব্যক্তির করার দরকার হয়, যাকে আদালত কর্তৃক আইনানুগভাবে আটক থেকে মুক্তি পাবার জন্য শর্ত মোতাবেক করতে হয়;
(ii) সামরিক ধরনের কোন কাজ অথবা দেশের আইনের প্রয়োজনে যে কোন জাতীয় কাজ;
(iii) জরুরী অথবা দুর্যোগের সময়ে জাতির যখন হুমকির সম্মুখীন তখনকার যে কোন কাজ;
(iv) স্বাভাবিক নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনে যে কাজ বা শ্রম৷
অনুচ্ছেদ - ৯
১. সবারই ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তার অধিকার রয়েছে৷ কাউকে খামখেয়ালীভাবে সাময়িক আটক বা কারাগারে আটক করা যাবে না৷ আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ক্ষেত্র বা নিয়ম-নীতি ছাড়া কাউকে তার এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না৷
২. আটক করার সময় আটক ব্যক্তিকে আটকের কারণসমূহ অবহিত করতে হবে এবং এ ব্যাপারে যদি তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকে তবে তাও অতিসত্বর তাকে জানাতে হবে৷
৩. ফৌজদারি অভিযোগ যদি কাউকে সাময়িক আটক বা কারগারে আটক রাখা হয়, তবে তাকে তাড়াতাড়ি একজন বিচারকের অথবা আইন দ্বারা ক্ষমতা প্রাপ্ত ঐ ধরনের কর্মকর্তার নিকট হাজির করতে হবে৷ এবং যু্ক্তিযুক্ত সময়ের ভেতর তার বিচার অথবা মুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে৷ সাধারণ নিয়ম এমন হবে না যে, বিচারধীন ব্যক্তির বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক করে রাখতে হবে বরং বিচার সংক্রান্ত তদন্ত বা বিচারকালীন সময়ে তাকে পাওয়া যাবে এর নিশ্চয়তা পেলে তাকে মুক্তি দেয়া যাবে৷
৪. সামরিক আটক বা কারাগারে আটক দ্বারা যদি কোন ব্যক্তির স্বাধীনতা বিনষ্ট হয় তবে তিনি আদালতের আশ্রয় নিতে পারবেন এবং আদালত বিলম্ব না করে তার আটকের বৈধতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এবং যদি আটক বৈধ না হয় তবে মুক্তি দিতে পারবে৷
৫. যদি কেউ আইন বিরুদ্ধে সামরিক আটক বা কারাগারে আটক দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হয় তবে তার ক্ষতিপূরণ পাবার আইনগত অধিকার রয়েছে৷
অনুচ্ছেদ -১০
১. স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত প্রতিটি মানুষের প্রতি মানবিক আচরণ করতে হবে এবং মানুষ হিসেবে তার সহজাত মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা করতে হবে৷
২. (ক) ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি ছাড়া অভিযুক্ত ব্যক্তিদেরকে দন্ডাদেশ প্রাপ্ত অপরাধীদের থেকে পৃথক রাখতে হবে এবং দন্ডাদেশপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে মর্যাদা অনুসারে তাদের সাথে ভিন্ন আচরণ করতে হবে৷
(খ) বয়স্কদের থেকে অভিযুক্ত তরুণদেরকে ভিন্ন করে রাখতে হবে এবং বিচার নিস্পত্তির জন্য তাদেরকে যতদূর সম্ভব তাড়াতাড়ি বিচারকের সামনে হাজির করতে হবে৷
৩. দন্ডাদেশ প্রাপ্ত ব্যক্তির চারিত্রিক সংশোধনীর জন্য তাদের সাথে ভাল আচরণ করতে হবে এবং তাদের চারিত্রিক উন্নতির এবং সমাজে পূর্ণবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে৷ তরুণ অপরাধীদের বয়স্কদের থেকে পৃথক রাখতে হবে এবং তাদের বয়স এবং মর্যাদা অনুসারে আচরণ করতে হবে৷
অনুচ্ছেদ - ১১
কেবলমাত্র চুক্তিবদ্ধ কর্তব্য পালনে ব্যর্থতার জন্য কাউকে কারাগারে আটক করা যাবে না৷
অনুচ্ছেদ - ১২
১. প্রত্যেকেই আইনগতভাবে তার দেশের ভেতর স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারবে এবং দেশের যে কোন স্থান বসবাসের জন্য পছন্দ করার স্বাধীনতা রয়েছে৷
২. প্রত্যেকেরই তার নিজ দেশসহ অন্য যে কোন দেশ ত্যাগ করার স্বাধীনতা রয়েছে৷
৩. জাতীয় নিরাপত্তা জনজীবনে শান্তি, জনস্বাস্থ্য অথবা নৈতিকতা অথবা অন্যের অধিকার এবং স্বাধীনতাসমূহ সংরক্ষণের জন্য আইন ছাড়া এবং আলোচ্য চুক্তিতে বর্ণিত অধিকারসমূহের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ আইন ছাড়া উপরোল্লিখিত অধিকারসমূহের ওপর কোন বাধা সৃষ্টি করা যাবে না৷
৪. কাউকেই তার নিজ দেশের্ প্রবেশের অধিকার থেকে খামখেয়ালী বঞ্চিত করা যাবে না৷
অনুচ্ছেদ - ১৩
আলোচ্য চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী কোন রাষ্ট্র আইনগতভাবে বসবাসকারী কোন বিদেশীকে বহিস্কার করতে পারবে আইনানুগ নির্দেশ বলে এবং জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি ক্ষতিকারক কারণসমূহ ছাড়া উক্ত বহিস্কারের অন্যান্য কারণসমূহ থাকলে রাষ্ট্রকে উহা পেশ করতে হবে৷ তবে যথাযথ ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ বা ব্যক্তি বিদেশীর উক্ত বহিস্কারের পুর্নবিবেচনা করতে পারবে৷
অনুচ্ছেদ - ১৪
১. আদালত এবং ট্রাইব্যুনালের নিকট সকল ব্যক্তিই সমান৷ আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং যথাযথ ট্রাইব্যুনাল দ্বারা প্রত্যেক ব্যক্তি খোলাখুলি এবং পক্ষপাতহীন শুনানী পাবার অধিকারী৷ সংবাদপত্রসমূহের সব ধরনের অথবা আংশিক শুনানী থেকে বাদ দেয়া যেতে পারে এজন্যে যে, গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় জাতীয় নিরাপত্তা জনজীবনে শান্তি এবং নৈতিকতা রক্ষার্থে তারা কাজ করে অথবা শুনানী গ্রহণ করা যাবে না৷ সেক্ষেত্রে যখন সংবাদপত্রের প্রচার দ্বারা বিচার প্রভাবিত হতে পারে ফৌজাদারি মামলা অথবা আইনের আওতাধীন অন্যান্য মামলা রায় দেয়ার পর তা প্রকাশ করতে হবে সে সব ক্ষেত্র ছাড়া যেখানে তরুণদের স্বার্থ বিনষ্ট হয় অথবা বিবাহ সংক্রান্ত বিবাদ অথবা ছেলেমেয়েদের অভিভাবকত্বের বিবাদ জণ্ম দেয়৷
২. আইন মোতাবেক অপরাধী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত যে কোন ব্যক্তি নির্দোষ বলে বিবেচিত হবার অধিকার আছে৷
৩. ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত যে কোন ব্যক্তি বিচার পাবার জন্য পরিপূর্ণ সমতার ভিত্তিতে নিম্নবর্ণিত নূ্যনতম সুবিধাগুলো পাবে-
(ক) অভিযুক্ত ব্যক্তি যে ভাষ্য বুঝে সেই ভাষায় তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কারণ এবং প্রকৃতি তাকে শীঘ্র জানাতে হবে;
(খ) আত্নপক্ষ সমর্থনের প্রস্তুতির জন্য এবং নিজস্ব পছন্দনীয় উকিলের সাথে যোগাযোগের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পর্যাপ্ত সময় এবং সুযোগ দিতে হবে;
(গ) অতিরিক্ত বিলম্ব না করে বিচারকার্য সম্পাদন;
(ঘ) অভিযুক্ত ব্যক্তির উপস্থিতিতে তার বিচার করতে হবে এবং আত্নপক্ষ সমর্থনের জন্য ব্যক্তিগতভাবে অথবা তার পছন্দানুসারে আইনের সাহায্য নেয়ার সুযোগ দিতে হবে৷ যদি তার পক্ষ সমর্থনে আইনজীবী না থাকে, তাকে তা' জানাতে হবে এবং আইনের সাহায্য নিতে তার সংগতি না থাকলে, ন্যায় বিচারের স্বার্থে তার ব্যবস্থা করতে হবে;
(ঙ) অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাক্ষীর স্বাক্ষ্য পরীক্ষা করা এবং তার পক্ষের সাক্ষীর হাজিরা এবং সাক্ষ্য গ্রহণ করা;
(চ) আদালতে ব্যবহৃত ভাষা যদি সে না বুঝে অথবা না বলতে পারে তবে তাকে দোভাষীর সাহায্য দেয়া ;
(ছ) অপরাধ স্বীকার করতে তাকে বাধ্য করা অথবা তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণে বাধ্য করা যাবে না৷
(৪) তরুণ অভিযুক্তদের ক্ষেত্রে তাদের বয়স এবং তাদের ইচ্ছানুসারে পুর্নবাসনের কথা চিন্তা করা৷
(৫) অপরাধে দন্ডিত প্রত্যেক ব্যক্তিই আইন মোতাবেক তার দন্ডাদেশ উর্ধ্বতন আদালত দ্বারা পুনর্বিবেচনার অধিকার রাখে
(৬) ফৌজদারি অপরাধের জন্য কোন ব্যক্তিকে চূড়ান্তভাবে দন্ডাদেশ দেয়া হল কিন্তু পরে এমন একটা নতুন সত্য উদঘাটন হল যার প্রেক্ষিতে আইন মোতাবেক তার দন্ডাদেশ রদ করা হল অথবা তাকে ক্ষমা করে দেয়া হল-এরূপক্ষেত্রে দন্ডাদেশপ্রাপ্ত ব্যক্তি যদি শাস্তি ভোগ করে থাকে, তবে আইন অনুসারে সে ক্ষতিপূরণ পাবে, যদি না ইহা প্রমাণিত হয় যে, উক্ত অজানা সত্যটি দন্ডাদেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি আংশিক বা পুরোপুরিভাবে গোপন রেখেছে৷
(৭) কোনো দেশের ফৌজদারি আইন মোতাবেক কোন অপরাধের জন্য যদি কোন ব্যক্তিকে চূড়ান্তভাবে দন্ডাদেশ বা খালাস দেয়া হয় তবে উক্ত অপরাধের জন্য তাকে পুনরায় বিচার করা বা শাস্তি দেয়া যাবে না৷
অনুচ্ছেদ - ১৫
১. কোন ব্যক্তি এমন ধরনের কাজ করল বা বর্জন করল যা' জাতীয় অথবা আন্তর্জাতিক আইন মোতাবেক ফৌজদারি অপরাধের আওতায় পড়ে না, সে ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তিকে ফৌজদারি অপরাধের দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না৷ অপরাধ সংগঠিতকালে নির্দিষ্ট ফৌজদারি অপরাধের জন্য যে শাস্তির বিধান ছিল, কাউকে তার অধিক শাস্তি দেয়া যাবে না৷ নির্দিষ্ট অপরাধের জন্য কাউকে শাস্তি দেয়া হলে কিন্তু শাস্তি ভোগকালে উক্ত অপরাধের বেলায় আইন লঘু শাস্তি ভোগ করে থাকে, তবে আইন অনুসারে সে ক্ষতিপূরণ পাবে, যদি না ইহা প্রমাণিত হয় যে, উক্ত অজানা সত্যটি দন্ডাদেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি আংশিক বা পুরোপুরিভাবে গোপন রেখেছে৷
২. কোন ব্যক্তি এমন ধরনের কাজ করে বসল বা বর্জন করল যা চুক্তিবদ্ধ জাতিসমূহ কর্তৃক স্বীকৃত ফৌজদারি অপরাধের আওতাভূক্ত এবং সেজন্য তাকে বিচার অথবা শাস্তির ব্যবস্থা করা হলে, সেক্ষেত্রে এই ধারার কোন কিছুই উহার প্রতি বাধা সৃষ্টি করবে না৷
অনুচ্ছেদ - ১৬
আইনের দৃষ্টিতে সবারই সর্বত্র মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি পাবার অধিকার রয়েছে৷
অনুচ্ছেদ - ১৭
১. কাউকে তার নিজ, পারিবারিক, আবাসিক বা চিঠিপত্র আদান-প্রদান বিষয়ে খামখেয়ালী অথবা আইন বিরুদ্ধভাবে হস্তক্ষেপ বা তার সম্মান এবং মর্যাদার প্রতি আইন বিরুদ্ধ আক্রমণ করা যাবে না৷
২. এই ধরনের হস্তক্ষেপ এবং আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবার অধিকার সবার রয়েছে৷
অনুচ্ছেদ - ১৮
১. ধর্ম, বিবেক এবং চিন্তার স্বাধীনতা সবার রয়েছে৷ এই অধিকারের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, ব্যক্তির যে কোন ধর্ম বা বিশ্বাস থাকা বা অবলম্বন করা, উক্ত ধর্ম বা বিশ্বাস ব্যক্তিগতভাবে বা অন্যের সাথে, গোপনে কিংবা প্রকাশ্যে পালন, অনুশীলন বা শিক্ষা দেয়ার স্বাধীনতা৷
২. কারও উপর বল প্রয়োগ বা নিপীড়ন চালানো যাবে না যাতে তার ধর্ম বা বিশ্বাসের স্বাধীনতা বিনষ্ট হয়৷
৩. জনগণের নিরাপত্তা, শান্তি, স্বাস্থ্য, নৈতিকতা অথবা অন্যের মৌলিক অধিকার এবং স্বাধীনতাসমূহ সংরক্ষণের যা প্রয়োজন এবং আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সে সব আইন ছাড়া অন্য কিছু ব্যক্তির ধর্ম বা বিশ্বাস পালনের বাধা হতে পারবে না৷
৪. নিজেদের বিশ্বাস অনুযায়ী পিতামাতা এবং আইন সংগত অভিভাবকগণ যাতে তাদের ছেলেমেয়েদের ধর্মীয় এবং নৈতিক শিক্ষা প্রদান করতে পারেন আলোচ্য চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ সেই অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করছে৷
অনুচ্ছেদ - ১৯
১. হস্তক্ষেপ ছাড়া নিজের মতামত পোষণের অধিকার সকলের রয়েছে৷
২. সবারই মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে৷ সব ধরনের মতামত এবং সংবাদ গ্রহণ এবং প্রকাশ করার স্বাধীনতা এই অধিকারের অন্তর্ভুক্তক্ত৷ উক্ত মতামত এবং সংবাদ গ্রহণ এবং প্রকাশ মৌখিক, লিখিত, ছাপানো সাহিত্যের আঙ্গিকে বা সংবাদপত্রের মাধ্যমে হতে পারে৷
৩. এই ধারার ২ নম্বর অনুচ্ছেদে বর্ণিত অধিকার পালনে ব্যক্তির বিশেষ কর্তব্য ও দায়িত্ব রয়েছে৷ এক্ষেত্রে তার কিছু বাধাও রয়েছে যা আইনগত এবং নিন্মে বর্ণিত ক্ষেত্রে প্রয়োজন-
(ক) অন্যের অধিকার এবং সুনামের প্রতি সম্মান দেখানোর জন্য;
(খ) জাতীয় নিরাপত্তা বা জনজীবনে শান্তি অথবা জসস্বাস্থ্য এবং নৈতিকতা সংরক্ষণের জন্য৷
অনুচ্ছেদ - ২০
যুদ্ধের জন্য সব ধরনের প্রচার আইন দ্বারা নিষিদ্ধ করতে হবে৷
সব ধরনের ওকালতি যা জাতীয়, গোত্রীয় এবং ধর্মীয় বিদ্বেষ সৃষ্টির মাধ্যমে শক্রতা, প্রভেদ এবং হানাহানি বয়ে আনে তা আইন দ্বারা নিষিদ্ধ করতে হবে৷
অনুচ্ছেদ - ২১
শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার অধিকারকে স্বীকার করতে হবে৷ এই অধিকার পালনে কোন বাঁধার সৃষ্টি করা যাবে না, শুধুমাত্র সেই সব বাঁধা ছাড়া যা গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে, জনজীবনে শান্তি, জনস্বাস্থ্য বা নৈতিকতা বা অন্যের অধিকার এবং স্বাধীনতাসমূহ সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজন হয়৷
অনুচ্ছেদ - ২২
১. নিজের অধিকার রক্ষার্থে শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন এবং যোগদানের অধিকারসহ অন্যের সাথে মেশার অধিকার সবার রয়েছে৷
২. এই অধিকার পালনে কোন বাঁধার সৃষ্টি করা যাবে না কেবলমাত্র সেই সব বাঁধা ছাড়া যা গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় জাতীয় নিরাপত্তা, জনজীবনে শান্তি, জনস্বাস্থ্য বা নৈতিকতা বা অন্যের