তিলের বীজ। তিলের নাড়ু। খাজা-গজায়ও তিল। সুস্বাদু অনেক খাবারে মসলা হিসেবেও তিল প্রচলিত। মধ্যপ্রাচ্যে তিলের বীজের মাখন চড়িয়ে দেওয়া হয় রুটির ওপর। হালভা ক্যান্ডিতে তিল প্রধান উপকরণ। চীনে কেক, কুকিস ও পায়েসে তিল দেওয়া হয়। তিলের ইংরেজি শব্দ সেস্যামি, এসেছে আরবি শব্দ সিমসিম থেকে। মিসরে এর নাম সেমসেন্ট। এই মসলার ব্যবহার ছিল প্রাচীন কালে। সেস্যামি বীজ প্রাচীন অ্যাসিরিয়ার উপকথায় উল্লেখ আছে। সেই উপকথায় উল্লেখ আছে, দেবতারা পৃথিবী সৃষ্টির আগের রাতে সেস্যামি মদ্যপান করেছিলেন। প্রাচীন ব্যাবিলনের অধিবাসীরা ব্যবহার করত সেস্যামি অয়েল বা তিলের তেল। মিসরীয়রা সেস্যামি থেকে তৈরি করত ময়দা।
প্রাচীন পারস্য দেশের অধিবাসীরা একে খাদ্য ও ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করত। মধ্যপ্রাচ্যে এখনো একে বলা হয় ‘অমরত্বের বীজ’, ‘সিসেমাম ইনডিকাম’ (ইনডিকাম অর্থ ইনডিয়া থেকে)। ইস্ট ইন্ডিজে এর প্রচলন ছিল খ্রিষ্টপূর্ব সময়ে। পাঁচ হাজার বছর আগে চীনারা আলোর উৎস হিসেবে তিলের তেল পোড়াত। সেসামি বীজ খুব ছোট। তিন হাজার খোসাসহ বীজ দেখতে বাদামি চ্যাপ্টা। তিলের বীজ হতে পারে ফ্যাকাসে, দুধ-সাদা, হলদেটে লাল ও কালো। বাদামের মতো মৃদু গন্ধ। কালো তিলবীজ একটু তেতো স্বাদ রয়েছে। তিলবীজে রয়েছে হূদসুখকর পলিআন স্যাচুরেটেড তেল (৫৫%), উঁচুমাত্রায় প্রোটিন (২০%) এবং অন্যান্য ভিটামি এ ও ই, বি। খনিজ দ্রব্য প্রচুর আছে তিলবীজে। আছে ক্যালসিয়াম, তামা, ম্যাগনেশিয়াম, লৌহ, ফসফরাস, দস্তা ও পটাশিয়াম। এতে আছে মিথিওনিন ও ট্রিপটিফ্যান।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, নভেম্বর ২৪, ২০১০