সমস্যা: আমার বয়স ২২ বছর। ওজন ৪০ কেজি। স্বাস্থ্য শুকনো। সমস্যা হচ্ছে, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হয়। প্রায় সময় তলপেটে ব্যথা হয়। কোমরে ব্যথা হয়। ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। প্রস্রাব বেশি হলেও মনে হয় ব্লাডার খালি হচ্ছে না। মাঝেমধ্যে প্রস্রাবে ব্যথা হয়। প্রস্রাবের রাস্তায় চুলকানি হয়। বমি বমি ভাব হয়, ক্ষুধা লাগে না। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর গাঢ় হলুদ রঙের প্রস্রাব হয়। সারা দিন পানি খাওয়ার পর তা ঠিক হয়। প্রায় তিন বছর আগে আমার জন্ডিস হয়েছিল। আমি যথেষ্ট পানি পান করি। আমার গ্যাসট্রিকের সমস্যা আছে। এ ছাড়া মাসিকের সময় তলপেটে ভীষণ ব্যথা হয় এবং রক্তক্ষরণ বেশি হয়। অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা করিয়েছি। কিন্তু কোনো রোগই ধরা পড়ছে না। ওজন সব সময় ৪০ কেজি থাকে। তবে মাঝেমধ্যে কমে যায়। সমস্যা নিয়ে আমি খুব চিন্তিত। ভয় হয়, আমার বড় ধরনের কোনো রোগ আছে কি না!
নাম-ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক।
পরামর্শ: সব সময় প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হওয়া তো ভালো লক্ষণ নয়। আপনি যদি যথেষ্ট পানি পান করেন এবং প্রস্রাবে ইনফেকশনও না থাকে, তবে কেন জ্বালাপোড়া হবে? আপনি যদি ঢাকার বাসিন্দা হয়ে থাকেন, তবে আইসিডিডিআরবি থেকে একবার প্রস্রাবের কালচারসহ পরীক্ষা করান এবং রিপোর্টসহ কোনো কিডনি বিশেষজ্ঞের সঙ্গে চিকিত্সার বিষয়ে কথা বলুন। ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, ব্লাডার খালি না হওয়ার অনুভূতি, মাঝেমধ্যে ব্যথা হওয়া—এর সবই প্রস্রাবে ইনফেকশন থাকার লক্ষণ। আপনার রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা পরীক্ষা করাবেন। পেটে গ্যাস হলে বমি বমি ভাব ও খাবারে অরুচি হতে পারে।
সে ক্ষেত্রে অ্যান্টাসিড ট্যাবলেট বা সিরাপ খেতে পারেন। চুলকানির জন্য প্রথমে ক্যাপসুল ‘লুকান-আর’ ১৫০ মিলিগ্রাম একটি সেবন করুন। এতে চুলকানি না কমলে ক্যাপসুলটি প্রতি সপ্তাহে একটি করে আরও চার সপ্তাহ সেবন করুন। এ ছাড়া ট্যাবলেট অরনিড ৫০০ মিলিগ্রাম একটি করে দুই বেলা তিন দিন খাবেন। কুসুম গরমপানির সঙ্গে অল্প লবণ মিশিয়ে আক্রান্ত স্থান ধুয়ে ক্লোট্রিম ক্রিম লাগাবেন ১৫ দিন। সিনথেটিক অন্তর্বাস না পরাই ভালো। না সারলে ডায়াবেটিস আছে কি না পরীক্ষা করবেন। মাসিকের সময় ব্যথার কারণে ট্যাবলেট এইচপিআর দিনে তিনবার ভরাপেটে এবং ট্যাবলেট ভিসেট ৫০ মিলিগ্রাম দিনে তিনবার খেতে পারেন। বেশি রক্তস্রাব কমানোর জন্য মাসিকের শুরুতেই ক্যাপসুল ট্রাক্সিল ৫০০ মিলিগ্রাম একটি করে তিনবার খেতে পারেন যে কদিন প্রয়োজন। শেষ কথা হচ্ছে, আপনার দুশ্চিন্তা না কমলে কিছুতেই আপনি সুস্থ হতে পারবেন না।
রওশন আরা খানম
স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিশেষজ্ঞ
সহকারী অধ্যাপক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০০৯