‘ফবস’ গ্রিক শব্দ যার অর্থ ভয়।
জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন- আমরা অনেক কিছু তা বস্তু বা পরিস্থিতি বা ব্যক্তিকে ভয় পাই যা একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। কিন্তু এই ভীতি বা ভয়ের কারণে জীবন যখন অচল হয়ে পড়ে তখনই কেবল এটা ডিসঅর্ডার বলা যাবে। ফবিক ডিসঅর্ডারের চারটি বৈশিষ্ট্য হলো: ০ ভয় বা ভীতি পরিস্থিতি/পরিবেশ তুলনায় অনেক বেশি মাত্রায় যেমন আরশোলা দেখলে অনেকে ভয় পায় কিন্তু আরশোলা দেখে চিৎকার করা এবং সেটা না মারা পর্যন- সব কিছু স্থগিত রাখা হচ্ছে ফোবিক ডিসঅর্ডার। ০ যুক্তিতর্ক বা সহজভাবে বোঝালেও ভয় দূর হয় না। ০ নিজস্ব আয়ত্তের বাইরে অর্থাৎ ইচ্ছা করলে এটা দমন করা সম্ভব নয়। ০ যে বিষয়টি/পরিস্থিতি ভয়ের উদ্রেক করে সেটা এড়িয়ে চলা যেমন লিফটে উঠতে ভয় লাগে অতএব লিফটে ওঠা বন্ধ। শারীরিক ডিসঅর্ডার নানা ধরনের হয় যেমন নির্দিষ্ট কোনো বস্তু বা পোকামাকড় অথবা উঁচু জায়গা ইত্যাদি। ভয় বা ভীতি এক ধরনের অস্থিরতার প্রকাশ এবং এ অস্থিরতার বহি:প্রকাশ হয় শারীরিক ও মানসিক উপসর্গ দিয়ে। যেসব শারীরিক উপসর্গ হয় তা হলোঃ ০ বুক ধড়ফড় করা, শ্বাসকষ্ট, বুকের মাঝে চাপ অনুভব, পেটের মাঝে অস্বসি-বোধ, হাত-পা কাঁপা, মুখ শুকিয়ে আসা, মাথা ঘুরানো বা ব্যথা, ঘুমের সমস্যা ইত্যাদি। ০ মানসিক উপসর্গ হচ্ছে অহেতুক আতঙ্কিত হওয়া, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, যে বিষয় বা পরিস্থিতি ভয়ের উদ্রেক করে তা এড়িয়ে চলা। ০ ফোবিয়া সাধারণত মহিলাদের বেশি হয় এবং কিশোর বয়সে এর শুরু। ০ অনেক মানসিক রোগের লক্ষণ হিসেবে ভয় বা আতঙ্ক দেখা দিতে পারে যেমন প্যানিক ডিসঅর্ডার। ফোবিক ডিসঅর্ডারের চিকিৎসা প্রধানত সাইকোলজিক্যাল যেমন রিলাক্সেশনে ট্রেনিং, ডিসেনসেটাইজেশন, কগনেটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি ইত্যাদি। মূল উদ্দেশ্য ভয় বা ভীতিকে দূর করা। এর সাথে কিছু ওষুধ যেমন বেনজোডায়াজেপিন গ্রুপের ওষুধ দিলে ভালো উপকার হবে।
ডা: সাহিদা চৌধুরী
সহকারী অধ্যাপক
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, শেরেবংলা নগর, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, মার্চ ২০, ২০১০