News:

Dolphin Computers Ltd., is a leading IT product and service provider company in Bangladesh.

Main Menu

গর্ভবতী ও যক্ষ্মা

Started by bbasujon, January 13, 2012, 04:36:47 PM

Previous topic - Next topic

bbasujon

এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সারা বিশ্বে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ২০০ কোটি মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত। প্রতিবছর ২০ লাখ মানুষ যক্ষ্মার কারণে মারা যায় এবং আট মিলিয়নেরও বেশি প্রতিবছর নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে।

যক্ষ্মা যেহেতু শতকরা ৭৫ ভাগই হয়ে থাকে ১৫-৫৪ বছর বয়সীদের, তাই এটা মাতৃমৃতুর কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিশ্বের যে ১০টি দেশে যক্ষ্মা সবচেয়ে বেশি তার মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে ৫ নম্বরে। অন্যান্য দেশের মধ্যে রয়েছে ভারত, চীন, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইথিওপিয়া, ফিলিপাইন ও কেনিয়া।

বাংলাদেশে প্রায় শতকরা ৫০ ভাগ প্রাপ্তবয়স্ক লোকই কোনো না কোনো ধরনের যক্ষ্মায় ভুগে থাকে।

এ ছাড়া প্রতিবছর যক্ষ্মায় নতুন আক্রান্ত হয় লাখে ২২৭ জন এবং মৃত্যু হয় ৪৭ জনের। কিন্তু যক্ষ্মা একটি ওষুধে ভালো হওয়ার মতো অসুখ এবং চিকিৎসার সাফল্য শতকরা ৯১·৫১ ভাগ।

বাংলাদেশে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে রোগী নির্ণয়ের হার শতকরা ৭১ ভাগ। যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে সরকারের জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ নীতিমালাও রয়েছে। যক্ষ্মা মানুষের শরীরে সুপ্ত অথবা সক্রিয় থাকতে পারে।

গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে যক্ষ্মা যদি সক্রিয় পর্যায়ে থাকে তবে অবশ্যই সঠিকভাবে রোগ নির্ণয়ের পর দেরি না করে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। উল্লেখ্য, যক্ষ্মায় আক্রান্ত মায়ের গর্ভধারণ হয়ে থাকলে ভ্রূণ নষ্ট করার প্রয়োজন নেই। কারণ শুধু ইনজেকশন স্ট্রেপটোমাইসিন ছাড়া অন্য সব ওষুধই গর্ভস্থ শিশুর জন্য নিরাপদ। তবে ওষুধ শুরু করার পর অবশ্যই নিয়মিত ছয় মাস খেতে হবে। এটা জানা প্রয়োজন যে, যক্ষ্মার কারণে গর্ভাবস্থায়, প্রসবের সময় বা প্রসব-পরবর্তীকালে তেমন কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া নেই।

গর্ভধারণের জন্য যক্ষ্মার গতিপ্রকৃতিতেও তেমন কোনো পরিবর্তন বা পরিবর্ধন হয় না। যে মায়ের যক্ষ্মা রয়েছে এবং তা সক্রিয় পর্যায়ে আছে সে ক্ষেত্রে গর্ভফুলের মাধ্যমে তা শিশুতে সংক্রমিত হতে পারে।

তবে নবজাতকের সংক্রমণ সাধারণত জ্নের পর মায়ের কাছ থেকে হয়ে থাকে। যক্ষ্মায় আক্রান্ত মায়ের যদি চিকিৎসার অন্তত দুই মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পর সন্তানের জ্ন হয় তবে তিনি বুকের দুধ পান করাতে পারবেন এবং বাচ্চাকে কাছেও রাখতে পারবেন। তা না হলে মায়ের কাছ থেকে বাচ্চাকে আলাদা রাখতে হবে। কখনো কখনো নবজাতকেরও আগাম চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।

দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশে জরায়ু ও ফেলোপিয়ান টিউবে যক্ষ্মার কারণে প্রতিবছর অসংখ্য নারী বন্ধ্যাত্বের শিকার হয়ে থাকেন। বেশির ভাগ সময় সেটা নির্ণীত হয় না।

বাংলাদেশে যক্ষ্মার ভয়াবহতা আমাদের বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন। মনে রাখা দরকার, যক্ষ্মা ফুসফুসে না হয়ে শরীরের অন্য যেকোনো জায়গায়ও হতে পারে, যা উপযুক্ত চিকিৎসায় ভালো হয়ে যায়। তাই সময়মতো চিকিৎসকের কাছে যান এবং সুস্থ থাকুন।

উৎসঃ দৈনিক প্রথম আলো, ০৩ অক্টোবর ২০০৭
লেখকঃ ডা· রওশন আরা খানম
সহকারী অধ্যাপক, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ
বেগম খালেদা জিয়া মেডিকেল কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, ঢাকা।
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection