সামনে বিশাল, ভয়াল পদ্মা। ঢেউয়ে, স্রোতে, ঘোলা পানিতে ফুলে ফুলে উঠছে। মাওয়া ঘাট থেকে যাব কেওড়াকান্দি ঘাটে। হাতে সময় কম থাকায় লঞ্চের বদলে স্পিডবোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। এই যান্ত্রিক ছোট জলযানগুলো মাত্র ২০ মিনিটে পদ্মা পাড়ি দিতে পারে। আমিসহ ১২ জনকে নিয়ে ছুটে চলল স্পিডবোটটি শাঁ শাঁ করে। আশপাশে এ রকম অনেক বোট চলছে। কেউ আসছে, কেউবা যাচ্ছে। আর এ থেকে সৃষ্ট ঢেউয়ে কাগজের নৌকার মতো দুলছে আমাদের বোটটি। যত দোয়া-দরুদ মুখস্থ ছিল, সবই পড়তে লাগলাম। আমাদের বোটটি ছাড়ার আগে দেখেছিলাম পরের বোটটিতে দুজন নারী উঠছেন। একজন অল্প বয়েসের এবং সম্ভবত গর্ভবতী। তাঁর অর্থাৎ এ রকম নারীদের এবং তাঁদের ভ্রমণসঙ্গীদের উদ্দেশে বলতে চাই, দয়া করে এ অবস্থায় সময় বাঁচাতে শ্বাসরুদ্ধকর ২০ মিনিটে যাতায়াতের ঝুঁকি নেবেন না। প্রতি মুহূর্তে যে মাত্রায় ভয় ও উত্তেজনা কাজ করে, তাতে যেকোনো মুহূর্তে হঠাৎ আতঙ্কিত হওয়ার কারণে এবং জরায়ুতে সংকোচনের ফলে গর্ভপাত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।
গর্ভাবস্থার শেষের দিকে হলে সময়ের আগে প্রসবব্যথা শুরু হয়ে যেতে পারে। তাই এ পথে যাতায়াতকারী গর্ভবতী বোনদের ২০ মিনিটের যান পরিহার করে সময় বেশি লাগলেও অধিক নিরাপদ এবং বেশি নির্ভরযোগ্য জলযান ব্যবহার করে নিজের ও গর্ভের সন্তানের সুস্থ থাকা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছি।
রওশন আরা খানম স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ২৮, ২০১০