Author Topic: নবজাতকের সাধারণ জন্ডিস হলে সময়মতো  (Read 1145 times)

bbasujon

  • Administrator
  • VIP Member
  • *****
  • Posts: 1827
  • I want to show my performance at any where
    • View Profile
    • Higher Education
ফিজিওলজিক্যাল জন্ডিসের লক্ষণ
দেখা যায় নবজাতকের চোখ হলুদ হয়ে আছে। কখনো বা মুখমণ্ডলে হলুদ রং, জন্ডিস স্পষ্টভাবে দেখা যায়। শিশু অকালজাত বা পূর্ণগর্ভকালীনও হতে পারে। বয়স মাত্র দুই-তিন দিনেই এ লক্ষণ দেখা যেতে পারে। এই জন্ডিস দেখা যাওয়া ছাড়া শিশুর তেমন কোনো উপসর্গ থাকে না। শিশু সতর্কতার সঙ্গে তাকায়। বুকের দুধও ভালোভাবে পান করে।

রোগবৃত্তান্ত
নবজাতকের এই জন্ডিস সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এর জন্য দায়ী শিশুর তুলনামূলকভাবে লিভারের অপরিপক্ব কার্যক্রম। যেসব নবজাতক পূর্ণগর্ভকাল নিয়ে ভূমিষ্ঠ হয়েছে, তাদের প্রায় ৬৫ শতাংশ আর যেসব নবজাতক অকালজাত তাদের প্রায় ৮০ শতাংশের এ ধরনের জন্ডিস দেখা যায়। ইসরাম বিলুরুবিনের মাত্রা সাত মিলিগ্রাম/ডেসিলিটারের বেশি হলে জন্ডিস খালি চোখে নবজাতক শিশুর ক্ষেত্রে নির্ণয় করা যায়। দু-তিন দিন বয়সে শুরু হয়ে দৈনিক এক-পাঁচ গ্রাম/ডেসিলিটার করে কমে আসে। ১০ দিন বয়সের দিকে লোপ পায়।

বস্তুত নবজাতকের এই জন্ডিস সাধারণ ধরনের বা নির্দোষ জন্ডিসও বলা যায়। তবে এর মাত্রা কিছু কারণে বেড়ে যেতে পারে বা দীর্ঘদিন স্থায়ী হতে পারে। যেমন শিশু-
– নির্ধারিত সময়ের আগে জন্ম হলে
– জন্মকালীন শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা বা বার্থ অ্যাসফেকশিয়া হলে।
– রক্তে অ্লতা থাকলে।
– শরীরে শীতলতা (হাইপোথারমিয়া) হলে
– রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কম হলে।
– মাথায় আঘাতজনিত কারণে রক্তপাত হলে।
– পলিমাইথেমিয়া হলে
– গলগণ্ডের সমস্যা হলে (হাইপোথাইরয়েডিজম)।
– সাধারণ সংক্রমণ হলে।

কী করতে হবে
নবজাতকের এ ধরনের জন্ডিস যেমন সচরাচর তেমনি নির্দোষ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সেরাম বিলুরুবিন পরীক্ষা করানো ছাড়া তেমন বিশেষ পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না। তবে মনে রাখতে হবে, ফিজিওলজিক্যাল জন্ডিস নির্ণয় করা হয় নবজাতক শিশুতে জন্ডিসের জন্য দায়ী অন্যান্য রোগ যে জড়িত নেই, তা নিশ্চিত হওয়ার পর। আর তা নিশ্চিত করতে কখনো বা প্রস্রাবের কালচার, রক্তের গ্রুপ, কুমব্‌স টেস্ট, টোটাল ও কনজুমেইটেড বিলোরুবিন, গেলাকটোসেমিয়া প্রভৃতি পরীক্ষা করার প্রয়োজন হতে পারে। জন্ডিস হওয়া নবজাতক একটু বেশি তন্দ্রাচ্ছন্ন থাকে ফলে দুধ কম পান করে। ফলে পানিস্বল্পতায় আক্রান্ত হয়ে জন্ডিসের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই এ সময়টাতে ঘন ঘন বুকের দুধ পান করানো জরুরি। জন্ডিসের মাত্রাধিক্যের কারণে বিশেষত অকালজাত কিংবা অন্য কোনো জটিলতাপূর্ণ নবজাতকের জন্ডিসের মাত্রা নিরাপদ স্তরে থাকতে থাকতেই কখনো কখনো ফটোথেরাপি গ্রহণের প্রয়োজন হতে পারে।

শিশুবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে যেকোনো নবজাতকের জন্ডিসের যথাযথ ব্যবস্থাপত্র সময়মতো গ্রহণ করা জরুরি।

ডা· প্রণব কুমার চৌধুরী
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ১৪, ২০০৮
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection