News:

Dolphin Computers Ltd., is a leading IT product and service provider company in Bangladesh.

Main Menu

হিট স্ট্রোক ও গরমকালের নানা সমস্যা

Started by bbasujon, January 16, 2012, 11:08:18 AM

Previous topic - Next topic

bbasujon

চারদিকে ভীষণ গরম, মনে হয় বিন্দু বিন্দু জলকণার উপস্থিতি প্রাণে স্বস্তি ফিরিয়ে দিত একটু হলেও। মাঝে মাঝে তাপমাত্রা চলে যায় ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এমন অবস্থায় আর্দ্রতার মাত্রা হয় ৮৫%। এই দুর্বিষহ গরমে কার ইচ্ছা করে বাইতে যেতে! কিন্তু কী আর করা, এই প্রখর রোদে কাজের তাগিদে ঘরের বাইরে তো যেতেই হয়। হিট স্ট্রোকের মতো বিপদজনক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এই গরমে। বিপদ থেকে রেহাই পেতে কিছু জরুরি সতর্কতা মেনে চলতে হয়। তাই হিট স্ট্রোক সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নিন-

কেন হয় হিট স্ট্রোক?

হিট স্ট্রোক এক ধরনের হাইপারথার্মিয়া। হাইপার হচ্ছে অধিক মাত্রা, আর থার্মিয়া মানে তাপ। সোজা কথায় বুঝিয়ে বলতে গেলে শরীরের তাপমাত্রার অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকেই বলা হয় হিট স্ট্রোক। শরীরের ভিতরে নানা রাসায়নিক ক্রিয়ার কারণে আমাদের শরীরে সব সময় তাপ সৃষ্টি হতে থাকে। ঘামের সাহায্যে সেই তাপ শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু উচ্চ তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার মধ্যে একটানা কাজ করলে শরীরের তাপমাত্রা বাইরে ছড়িয়ে পড়তে পারে না। এর সঙ্গে পানি কম খাওয়ার জন্য যদি শরীরে পানি শূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন সৃষ্টি হয় তাহলে হিট স্ট্রোক দেখা দিতে পারে। হিট স্ট্রোক একধরনের মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি যার তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা প্রয়োজন। বাচ্চাদের, বয়স্কদের (৬৫ বছরের উপরে) এবং যারা ওবেসিটিতে ভুগছেন তাদের হিট স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

লক্ষণ

হিট স্ট্রোক অনেকটা হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণের সঙ্গে মিলে যায়। যদিও প্রত্যেক রোগীর লক্ষণের মধ্যে ভেদাভেদ আছে, তবুও হিট স্ট্রোকের লক্ষণ শরীরে দেখা দিলেই বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কিছু লক্ষণ দেখলে বুঝতে পারবেন রোগী হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন-

০ শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি।
০ ঘাম কমে যাওয়া বা একেবারে বন্ধ হয়ে যাওয়া। ত্বক লাল হয়ে শুষ্ক হয়ে যাওয়া।
০ শ্বাস-প্রশ্বাসে অসুবিধা।
০ শরীরে ক্লান্তিভাব, মাথাব্যথা এবং বমি বমি ভাব। ০ পালস্‌ দ্রুত হয়ে যাওয়া এবং হার্ট বিট বেড়ে যাওয়া।
০ অস্বাভাবিক জিনিস দেখতে পাওয়া বা হ্যালুসিনেশন। ০ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।

প্রাথমিক চিকিৎসা

শরীরের বিভিন্ন হিট কন্ট্রোল মেকানিজম যখন ভেঙ্গে পড়ে, তখনই দেখা যায় হিট স্ট্রোক। বডি টেম্পারেচার ১০৩-১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট হলে কয়েকটি সহজ উপায়ে বাড়িতেই রোগীকে খানিকটা আরামে রাখার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। ০ প্রথমেই রোগীকে বাড়ির ভেতরে কোনো ঠান্ডা জায়গায় শুইয়ে রাখুন। অর্থাৎ রোগীর পরিবেশটা যেন ঠান্ডা হয়। ০ রোগীকে হালকা কাপড় পরতে দিন, কাপড় যেন সুতির হয়। ০ ঘরের ভেতর শাড়ি বা মশারি ভিজিয়ে টাঙ্গিয়ে দিতে পারেন। পারলে এসির ব্যবস্থা করুন ও ফুল স্পিডে ফ্যান ছেড়ে রাখুন। ০ মুখ, কপাল, ঘাড় ও গলায় জলপট্টি দিন। মুখ ও গলায় পানির ছিটা দিন এবং স্প্রেয়ার দিয়ে ১৫-২০ মিনিট পর পর পানি স্প্রে করুন। ০ ঠান্ডা পানিতে লবণ, চিনি মিশিয়ে রোগীকে খাওয়াতে থাকুন। ০ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারকে কল দিন। ০ ডাক্তার না পৌঁছানো পর্যন্ত বডি টেম্পারেচার ক্রমাগত মনিটর করতে থাকুন।

সাবধানতা

০ যাদের বাড়ির বাইরে বের হতেই হয়, তারা চেষ্টা করুন সকাল সকাল বেরিয়ে পড়তে। বেলা ১১টা থেকে ৩টা অবধি রোদ না লাগানোর চেষ্টা করুন। ০ বাইরে বের হওয়ার আগে ৩-৪ গ্লাস পানি খান। প্রয়োজনে পানি সঙ্গে রাখুন। ১৫-২০ মিনিট অন্তর পানি পান করুন। ০ চা, কফি বা অ্যালকোহলিক ড্রিঙ্ক পারতপক্ষে খাবেন না। এই পানীয়গুলো শরীরে পানিশূন্যতা ঘটতে সাহায্য করে। ০ রোদ উঠে যাওয়ার পর হাঁটাহাঁটি বা ওয়ক আউট করবেন না। ০ সকাল বা বিকেলে ওয়ক আউট করার সময় ঘন ঘন পানি পান করুন। ক্লান্ত হয়ে গেলে ওয়ক আউট বন্ধ করে দিন। ০ হালকা রঙের লুজ ফিটিং জামাকাপড় পরুন। ০ দিনে দুবার গোসল করুন। খুব গরম লাগলে তোয়ালে বা রুমাল দিয়ে মুখ, ঘাড়, গলা ভাল করে মুছে নিন।

হিট একজশন

হিট স্ট্রোক এবং হিট একজশনের লক্ষণগুলো প্রায় কাছাকাছি। প্রচন্ড গরমে একটানা ৩-৪ ঘন্টা থাকলে এই রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। বমি ভাব, মাথা ঘোরা, মুখ ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া- এ সবই হিট একজশনের লক্ষণ। তবে হিটস্ট্রোকের মতো হিট একজশনে হ্যালুসিনেশন বা ঐ ধরনের মানসিক পরিবর্তন দেখা দেয় না।

যা করণীয়

০ রোদে কাজ করতে হলেও কাজের মধ্যে মাঝে মাঝেই ব্রেক নিয়ে বাড়ির ভেতর বা ছায়ায় বসুন। ০ সানগ্লাস এবং টুপি অবশ্যই ব্যবহার করুন। ০ ১৫-২০ মিনিট অন্তর গ্লুকোজ বা পানি খেতে থাকুন। ফ্লুয়িড ইনটেক কমাবেন না।

সান বার্ন

সূর্যের আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি ত্বকের উপর ক্ষতিকারক প্রভাব বিস্তার করে। তার ফলেই গ্রীষ্মকালে ত্বকে দেখা দেয় সান বার্ন। আর এ সান বার্ন স্কিন ক্যান্সারের সম্ভাবনা বেশ খানিকটা বাড়িয়ে দেয়।

যা করণীয়

০ বাইরে বের হওয়ার আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন লোশন মুখ, গলা, হাতে লাগাবেন। সানস্ক্রিন কেনার আগে অবশ্যই যাচাই করুন যে এই প্রডাক্টটি আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি থেকে আপনার ত্বককে রক্ষা করতে সক্ষম কিনা।
০ চোখের চারদিকের সেনসিটিভ স্কিন রক্ষা করতে চওড়া লেন্স দেওয়া চশমা পরুন।
০ লুজ ফিটিং কটন বা লিনেন শার্ট বা টপ পরুন। বিচে বেড়াতে গেলে মাথায় একটা ওয়াইড ব্রিমড হ্যাট সঙ্গে রাখুন।
০ যতটা সম্ভব রোদকে এড়িয়ে চলুন। একটি ছাতা অবশ্যই ব্যাগে রাখুন।

তামান্না শারমীন
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, মার্চ ২৩, ২০১০
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection